বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন

গণকবরের সন্ধান ইউক্রেনে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২
  • ৫৫ Time View

রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে ধীরে ধীরে পিছু হঠেছে রাশিয়ার সেনা। তারপরেই যুদ্ধের ভয়াবহতার ছবি ক্রমশ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। কিয়েভ থেকে সামান্য দূরে বুচা শহরে একটি গির্জার পাশে ৪৫ ফুট গভীর ট্রেঞ্চ বা গর্তের সন্ধান মিলেছে। সেখানে অসংখ্য সাধারণ মানুষের মৃতদেহ মিলেছে। রাশিয়ার সেনা ওই ব্যক্তিদের উপর অত্যাচার চালানোর পর তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ওই কবর থেকে যাদের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই সাধারণ মানুষ। সেনা নয়। তাদের শরীরে অত্যাচারের স্পষ্ট চিহ্ন আছে। পিছন থেকে তাদের মাথায় গুলি করা হয়েছে বলেও বোঝা যাচ্ছে। এই ভয়াবহতার বিচার চেয়ে বিশ্ব রাজনীতির কাছে আর্জি জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তার বক্তব্য, ওই একটি কবরই বুঝিয়ে দেয়, রাশিয়া কী কাণ্ড করেছে। এছাড়াও কিয়েভ, বুচাসহ একাধিক শহরে রাস্তায় মৃতদেহ ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বস্তুত, গণকবরের ছবি উদ্ধার হওয়ার পরে বিশ্বের একাধিক দেশ এর বিরোধিতা করেছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎস রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি হবে বলে জানিয়েছেন।

২০০৮ সালে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য পদ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গেছিল। আমেরিকার উদ্যোগে সে কাজ হচ্ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে জার্মানি এবং ফ্রান্স বাধা দেয়। সে সময় জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি। দুই বিশ্বনেতা জানান, ইউক্রেন এখনো ন্যাটো যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। আরো কিছুদিন পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইউক্রেনকে সদস্যপদ দিলে রাশিয়া আক্রমণাত্মক মনোভাব নিতে পারে, এই আশঙ্কাতেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ম্যার্কেল এবং সারকোজি।

রোববার জেলেনস্কি বলেছেন, ম্যার্কেল এবং সারকোজি গিয়ে ইউক্রেনের গণকবর দেখে আসতে পারেন। তাদের সিদ্ধান্তের জন্যই আজ ইউক্রেনকে এই সংকটে পড়তে হয়েছে। ইউক্রেনের এই পরিস্থিতির জন্য ওই দুই বিশ্বনেতাকে সরাসরি দায়ী করেছেন জেলেনস্কি। তবে জেলেনস্কির ওই বক্তব্যের পর জার্মানি বা ফ্রান্স কেউই কোনো মন্তব্য করেনি।

রোববার গ্র্যামি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। সেই মঞ্চেও একটি রেকর্ডেড বক্তৃতা দিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ‘এ এক অদ্ভুত নৈঃশব্দ। বোমার নৈঃশব্দ। মৃত্যুর নৈঃশব্দ ঘিরে ধরেছে ইউক্রেনকে। আপনারা প্রতিবাদ করে, গান গেয়ে কবিতা লিখে সেই নৈঃশব্দের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। চুপ করে বসে থাকবেন না।’ বস্তুত এর পরেই ইউক্রেনের এক সংগীতকার গ্র্যামির মঞ্চে যুদ্ধবিরোধী গান গেয়ে শোনান। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ান বহু শিল্পী।

এদিকে এক সাংবাদিককে ইউক্রেন থেকে বার করে দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। রাশিয়ার রকেট তেল শোধনাগারের উপর পড়ার ছবি প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ইউক্রেন জানিয়েছে, দেশের গোপন তথ্য ফাঁস করেছেন ওই সাংবাদিক। ফলে রোববার তাকে ইউক্রেনের গোয়েন্দারা তুলে নিয়ে যান। পরে তাকে সীমান্তের ধারে নামিয়ে দেওয়া হয়। আগামী ১০ বছর তিনি ইউক্রেনে ঢুকতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশন অবশ্য এই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করেছে।

সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS