জেঁকে বসেছে শীত। শীতে শিশু থেকে বড়দের ছোট অসুখ বড় আকার ধারণ করে। এসময় বাড়তি নজর রাখতে হয় শরীরের। অতি যত্নে থেকেও ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক। তেল, লোশন, গ্লিসারিন কোনোটিতেই যেন কাজ হচ্ছে না। তখন বুঝবেন আপনি কয়েকটি ভিটামিনে ঘাটতিতে ভুগছেন।
নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিনের অভাবে আপনার শরীর শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। ভাবতে পারেন এটি আর এমনকি! শীত গেলেই ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু সঠিক চিকিৎসা না করলে এই সমস্যা আরও বাড়বে। জেনে নিন কোন ভিটামিনের অভাবে এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১. ভিটামিন ডি: ত্বকের কোষের গঠন, বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এই ভিটামিন। তাছাড়া ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ঠিক রাখে ভিটামিন ডি। এটি ক্ষতিকারক রোগ-জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা কবজ হিসেবে কাজ কর। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন ডি এর অভাবে একজিমা এবং সোরিয়াসিস হতে পারে। এটির সঠিক চিকিৎসা না করলে বড় আকার ধারণ করতে পারে। এর প্রধান উৎস সূর্যের আলো। তাছাড়া, স্যামন মাছ, ডিম, কমলায় শুধু ভিটামিন সি-ই থাকে না, থাকে ভিটামিন ডি-ও।
২. ভিটামিন ই: ত্বক ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে ভিটামিন ই -এর অভাবে। অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে ত্বক। ভিটামিন ই হলো একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রি র্যাডিক্যাল এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি কোষের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে এবং সুস্থ ত্বক বজায় রাখতে সহায়তা করে। শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ই এর অভাব হলে ত্বক শুষ্ক ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ত্বকের জ্বালা বা প্রদাহ হতে পারে। এই গোত্রের খাবার গুলো- সূর্যমুখী, কুসুম এবং সয়াবিন তেল, সরিষা বীজ, বাদাম, চিনাবাদাম, চিনাবাদাম, মাখন, বিট গ্রিনস, কলার্ড গ্রিনস, পালং শাক।
৩. ভিটামিন সি: ত্বক-প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ভিটামিন সি। এটি ত্বকের সংস্পর্শে আসা দূষিত পদার্থের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই ভিটামিন কোলাজেন উৎপাদনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। এই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন মূলত শাকসবজিতেই পাওয়া যায়। লেবু ও লেবুজাতীয় সব টক ফল ভিটামিন সির চমৎকার উৎস। কমলা, মালটা, আঙুর, পেঁপে, আনারস, জাম ইত্যাদি ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি।
৪. ভিটামিন বি: এই ভিটিামিনের অভাবে ব্রণ, ফুসকুড়ি, শুষ্ক ত্বক, ঠোঁট ফাটা এবং বলিরেখা হতে পারে। ত্বক লালচে হয়ে যেতে পারে এবং ত্বকে জ্বালা হতে পারে। ভিটামিন বি-তে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা একজিমা, ব্রণ বা ত্বকের অন্যান্য ধরনের জ্বালা প্রতিরোধে সাহায্য করে। বি থাকে এমন খাবার হলো- মাংস, দুধ, পনির, দই, ডিম, মাছ, ঝিনুক, পালং শাক, বিট, মাশরুম ,অ্যাভোকাডো, মটরশুটি, কিডনি বিন, ছোলাবাদাম, তরমুজ।
৫. ভিটামিন এ: জ্বালাপোড়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি ত্বকের কোষ তৈরি ও মেরামতের জন্য ভিটামিন এ অপরিহার্য। পর্যাপ্ত ভিটামিন এ না পাওয়া গেলে একজিমা এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশ কিছু ক্লিনিকাল গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন এ একজিমা দূরে রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ভিটামিন এ জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে- হলুদ ও সবুজ শাকসবজি, রঙিন ফলমূল, সাধারণত যে শাকসবজি বা ফলের রঙ যত গাঢ় হয় তাতে ভিটামিন ‘এ’ র পরিমান তত বেশি হয়। এছাড়া গাজর, কুমড়া, পাকা পেঁপে, ঘি, মাখন ও অন্যান্য সব্জি, ফল ইত্যাদিতে ভিটামিন ‘এ’ থাকে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply