বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রথম দিনেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে বাসে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকা, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বিএনপি নেতা-কর্মীরা গাছের গুঁড়ি, সিমেন্টের পিলার ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে। লাঠিসোটা হাতে দফায় দফায় মিছিল করে তারা। এ সময় বিএনপির সন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করলে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘর্ষ।
সংঘর্ষে পাঁচরুখী এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ সময় দুটি বাসও ভাঙচুর করা হয়। একটি অ্যাম্বুলেন্সেও হামলায় চালায় অবরোধকারীরা। অ্যাম্বুলেন্সটিকে ধাওয়া দিয়ে সেটিতে লাঠিসোটা নিয়ে আঘাত করতে দেখা যায়।
পরে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জের বন্দরে দুটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেয়ার হয়েছে।
এদিকে গাজীপুরের হারিনাল এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গাড়িটি জয়দেবপুর থেকে হারিলাল হয়ে মাওনা যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে দুই যুবক পিকআপে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে দেশব্যাপী অবরোধের শুরুতেই মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ভোর ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড মোড়ে একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। তবে বাসটি যাত্রীশূন্য হওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে সিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার পংকজ দত্ত জানান, ইপিজেড মোড়ে শ্রমিকদের নেয়ার জন্য যাত্রীবাহী বাসটি দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় হঠাৎ করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সাময়িক সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের দামপাড়ায় ইউনেস্কো কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসে আগুন লাগার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করে ছাত্র ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
তবে অবরোধে রাজধানীর চিত্র ভিন্ন। সকাল থেকেই চলছে ব্যক্তিগত গাড়ি, গণপরিবহন। ট্রেনও ছেড়েছে সময়মতো। রাজধানীর মোড়ে মোড়ে সতর্ক পাহারায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।
গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ কর্মসূচি থেকে পরদিন দেশজুড়ে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এরপর একদিন বিরতি দিয়ে টানা তিন দিন (মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি) দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে দলটি।
২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি দেশজুড়ে অবরোধের ডাক দিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তার প্রায় ৮ বছর পর আবারও অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply