ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সম্পত্তির ভাগ ও নেশার টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডায় আপন ভাইয়ের হাতে বোনকে খুনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৩ জুলাই) উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোমা বেগম ও অভিযুক্ত খুনি বাবুল মিয়া শিবপুর ইউনিয়নের মোতালিব মিয়া ও আয়েশা বেগমের ছেলে-মেয়ে।
নিহত সোমা বেগমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মধ্যরাতেই পুলিশ বাবুল মিয়াকে আটক করে। বাবুল শম্ভুপুর বাজারে ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করত।
নিহত সোমা বেগমের পিতা মোতালিব মিয়া বলেন, শনিবার (২৩ জুলাই) বিকাল ৪টায় মায়ের সঙ্গে সম্পত্তির ভাগ ও নেশার টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় বাবুল মিয়ার। বাকবিতণ্ডের এক ফাঁকে মা আয়েশা বেগমের শরীরে আঘাত করেন ছেলে বাবুল। এক পর্যায়ে ভাইকে বাধা দেয় বোন সোমা বেগম। কেন বাধা দিলেন রাগে ক্ষোভে বোনকে গাছের ডাল দিয়ে আঘাত করে বাবুল। স্থানীয়রা ছুটে আসলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বাবুল। আহত অবস্থায় সোমাকে শিবপুর রেল গেইট এলাকায় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে এসে সোমা বমি করে।
পরে অবস্থা অবনতি হলে প্রথমে পৌর শহরের স্টেডিয়াম পাড়া সাজেদা আলাল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঐখান থেকেও চিকিৎসারা সোমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যেতে বললে এরই মধ্যে সোমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।
এ বিষয়ে নিহতের ছোট বোন বিউটি আক্তার বলেন, আমার বড় ভাই বাবুল মাদকসেবী। সে নেশা করে এসে আমার মা-বাবাকে অত্যাচার করত এবং আমার মা কে প্রায়ই মারধর করত। এই জন্য ভাইকে কয়েক বছর আগে বাবা-মা বাড়ি থেকে বের করে দেন। সে পরিবার নিয়ে শিবপুর রেল গেইট এলাকায় বাসা ভাড়া থাকে। বাবুল প্রায় সময় মায়ের কাছে এসে নেশার টাকা দেয়ার জন্য বলতো ও সম্পত্তির ভাগ চাইতো এবং মাকে মেরে ফেলার হুমকি দিত।
ঘটনার দিন বিকাল ৪টায় বাবুল মাকে নেশার টাকা ও সম্পত্তির জন্য চাপ দেয়, এক পর্যায়ে মাকে মারধোর করে। পরে আমার বড় বোন সোমা বেগম বাধা দিলে তাকে গাছের ডাল দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তখন প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে বাবুল পালিয়ে যায়।
তিনি আরোও বলেন, ঘটনার দিন সকালে তার বোন শ্বশুর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বিকালে সে তার শ্বশুরবাড়ি কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর এলাকায় চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে এই ঘটনা ঘটে যায়। আমার বোনের তিন বছর ও সাত বছরে দুইজন ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্বামী নাম শাহীন মিয়া।
শিবপুর ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম সাব্বির বলেন, বাবুল নেশার টাকা ও সম্পতির ভাগের জন্য প্রায়ই বাড়িতে এসে তার মাকে মারধর করত। ঘটনার দিন যখন বাবুল তার মাকে মারতে যাই তখন তার ছোট বোন সোমা বাধা দিলে তাকে গাছের ডাক দিয়ে আঘাত করে। এতে সোমা আহত হয়। পরে সোমার মৃত্যু হয় বলে জানান যায়।
এ বিষয়ে ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাবুল সম্পত্তি ভাগের জন্য প্রায়ই সময় তার তাকে মারধর করত। সে এর আগেও এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার দিন বাবুল যখন তার মাকে মারতে যাই তখন তার বোন বাধা দিলে সে তার বোনকেও আঘাত করে আহত করে। পরে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার খবর পেয়ে আমিসহ ওসি ও শহর ফাঁড়ির ইনচার্জ ঘটনাস্থলে যাই। আসামীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার ধরতে সক্ষম হয়।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply