বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরে খুলনা টাইগার্সের আজম খানের ব্যাটে এসেছিল প্রথম সেঞ্চুরি। অন্যদিকে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি আসতেও খুব বেশি দেরি হলো না। একই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসেই ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন উসমান খান। ম্যাক্স ও’দাউদের সঙ্গে জুটি গড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৯ উইকেটের বড় জয় এনে দেন এ পাক ব্যাটার।
মিরপুরে সোমবার (৯ জানুয়ারি) খুলনার দেয়া ১৭৯ রান তাড়া করতে নেমে ৪ বল হাতে রেখে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় চট্টগ্রাম। ৫৮ বলে ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে চট্টগ্রামের জয়ের নায়ক উসমান। ওপেনিং জুটিতে তার সঙ্গে ১৪১ রানের জুটি গড়া ম্যাক্স ও’দাউদ আউট হন ৫০ বলে ৫৮ রান করে।
মিরপুরে এদিন যেন চার ছক্কার-বন্যা বইয়েছে ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংসে ১০টি ছক্কার সঙ্গে ১৬টি চার হাঁকিয়েছিল খুলনার ব্যাটাররা। ৫৮ বলে ১০৯ রানের ইনিংস খেলার পথে আজম খান একাই হাঁকান ৯টি চার ও ৮টি ছয়। অন্যদিকে চট্টগ্রামের ইনিংসে ৮ ছক্কার পাশাপাশি আসে ১৫ চার।
রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই খুলনার বোলারদের ওপর চড়াও হন ও’দাউদ ও উসমান। ১৫ ওভার মোকাবিলায় তারা ওপেনিং জুটিতে দলকে এনে দেয় ১৪১ রান। তাতে জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় খুলনার। ৫০ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কার মারে ৫৮ করে নাহিদুলের শিকার হয়ে ডাচ ব্যাটার ও’দাউদ সাজঘরে ফিরলেও, ক্রিজে তাণ্ডব চালিয়ে যান উসমান। ফিফটি হাঁকিয়ে তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন সেঞ্চুরির পথে।
উসমান অবশ্য ব্যক্তিগত ৬৬ রানেই সাজঘরে ফিরতে পারতো। কিন্তু তার ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে সে সুযোগ হাতছাড়া করেন পল ফন মিকেরেন। জীবন পেয়ে উসমান তুলে নেন তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। দলকে জিতিয়ে এ পাক ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ১০৩ রানে। ৫৮ বল মোকাবিলায় ১০ চার ও ৫ ছক্কার মারে সাজানো ছিল তার ইনিংস। তাকে সঙ্গ দিতে আসা আফিফ হোসেন অপরাজিত থাকেন ১০ বলে ৫ রান করে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে খুলনা টাইগার্স। দলীয় খাতায় মাত্র ১২ রান যোগ হতেই সাজঘরে ফেরেন শার্জিল খান (৫) ও হাবিবুর রহমান (৬)। ওপেনার তামিম ইকবাল একপ্রান্ত আগলে ধরলেও সুবিধা করতে পারছিলেন না ব্যাট হাতে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে খুলনাকে লড়াইয়ে ফেরান আজম খান। দুজনের জুটিতে আসে ৯২ রান।
তাদের জুটি অবশ্য ৩০ রানেই ভেঙে যেতে পারতো। দলীয় ৪১ রানে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বলে লং অনে তুলে মারার চেষ্টা করেন তামিম। বল চলে যায় সেখানে থাকা ফিল্ডার জিয়াউর রহমানের হাতে। তবে তিনি বল তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন। ৮ রানে জীবন পাওয়া তামিমের মন্থর গতির ব্যাটিং শেষ পর্যন্ত থামে ৪০ রানে। ৩৭ বলে ৫ চার ও এক ছক্কার মারে সাজানো ছিল তার ইনিংস। তাকে বোল্ড করেন লঙ্কান স্পিনার বিজয়াকান্থ।
অন্যপ্রান্তে অবশ্য ঝড় তুলে ফিফটি হাঁকিয়ে নেন আজম খান। চতুর্থ উইকেটে তাকে সঙ্গ দিতে আসা ইয়াসির আলীকে (১) বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান জিয়াউর। তবে ক্রিজের অপরপাশে দাঁড়ানো আজমকে কোনোভাবেই দমাতে পারছিলেন না চ্যালেঞ্জার্সের বোলাররা। তাকে সঙ্গে দিতে ক্রিজে আসেন সাব্বির রহমান। ১৯তম ওভারে বল করতে আসা আবু জায়েদের দ্বিতীয় বলে ছয় হাঁকিয়ে পরের বলেও হিট করেন ওভার বাউন্ডারির উদ্দেশে। তবে বল-ব্যাটের সংযোগ ঠিকঠাক না হওয়ায় বাউন্ডারি লাইনের আগেই সেটা তালুবন্দি করে নেন উম্মুখ চাঁদ।
অন্যদিকে চার-ছক্কার বৃষ্টি ঝরিয়ে মাত্র ৫৭ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন আজম। এবারের আসরে এটিই কোনো ব্যাটারের প্রথম সেঞ্চুরি। নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারেও প্রথম শতকের দেখা পেলেন এ পাক ব্যাটার। তার চার-ছক্কার বৃষ্টি চলমান থাকে ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত। ৫৮ বলে ৯ চার ও ৮ ছক্কায় ১০৯ রানে অপরাজিত থাকেন আজম। তাতে নির্ধারিত ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান সংগ্রহ করে খুলনা।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply