শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন

এই জয় জিম্বাবুয়েরই প্রাপ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২

রিচার্ড গাভারা, লুক জংগুয়ে বা তানাকা চিভাংগা হয়তো আইপিএলে নাম দেওয়ার সাহসই পাননা। পাবেন কি করে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে এমন কিছু তো করেননি যে তাদের ঘিরে হট্টগোল হবে! বা নিলাম থেকে তাকে কেউ দলভুক্ত করবে। কিন্তু এই তিন পেসারও জানেন ডেথ ওভারে কিভাবে বল করতে হয়। রান আটকে রাখতে হয়। 

ব্যাটসম্যানরা তখন মারমুখী থাকে বলে ফুলার লেন্থ বল করা যাবে না, ফুলটস দেওয়া যাবে না, বল করতে হবে ইয়ার্কার, ওয়াইড ইয়র্কার বা অন্য কিছু। অথচ ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে পতাকা উড়িয়ে বেড়ানো মোস্তাফিজুর রহমান জানেন না কিভাবে ডেথ ওভারে বোলিং করতে হয়! নিজের সেরা অস্ত্র স্লোয়ার, কাটার যেন তার ভরসা! এর বাইরে তার বোলিংয়ে নেই কোনো ধার। উইকেট থেকে সাহায্য না পেলেও বাঁহাতি পেসার স্রেফ ফ্যাকাসে। 

শরিফুল আইপিএলে না খেললেও বয়সভিত্তিক দল ও অন্য সব খেলা মিলিয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞ। কিন্তু শেষের আক্রমণে একেবারেই ছন্নছাড়া এ পেসার। তাসকিন যেন টি-টোয়েন্টিতে নিজেকে মানিয়েই নিতে পারছেন না।

বাংলাদেশের তিন পেসার ও জিম্বাবুয়ের তিন পেসারের ডেথ ওভারের পার্থক্যটাই দেখুন। 

১৫-২০ এই ৬ ওভারে তাসকিন, শরিফুল ও মোস্তাফিজ ২টি করে ওভার করেছেন। ২ ওভারে খরচ তারা করেছেন- তাসকিন ২৭, শরিফুল ৩২ ও মোস্তাফিজ ৩৩। আর রিচার্ড গাভারা, লুক জংগুয়ে ও তানাকা চিভাংগা ১৬-২০ ওভারে বোলিং করেছেন ৫ ওভার। চিভাংগা ১ ওভার বাদে বাকি দুজন ২টি করে ওভার করেছেন। রান খরচে তারা করেছেন কিপটেমি। চিভাংগা ১ ওভারে মাত্র ১০ রান, গাভারা ১৮ ও জুংগুয়ে ২০ রান দিয়েছেন। 

পরিসংখ্যানই বলে দেয়, নিজেদের কন্ডিশনে, চিরচেনা মাঠে কতটা নিয়ন্ত্রিত ছিলেন জিম্বাবুয়ের বোলাররা। আর বাংলাদেশের পেস ত্রয়ী ছিলেন একেবারেই হতশ্রী। তাসকিন ৪ ওভারে ৪২, মোস্তাফিজুর ৫০ এবং শরিফুল ৪৫ রান দিয়েছেন। আর জিম্বাবুয়ের পেসারের গাভারার সর্বোচ্চ রান ৪৩! 

পেসারদের দুর্দিনে জিম্বাবুয়ের ব্যাটস্যামনরা ছিলেন উড়ন্ত। কোনো পাওয়ার হিটিং ছাড়াই তারা রান তুলেছে ২০৫। বাংলাদেশ শত চেষ্টার পরও ১৮৮ রানের বেশি করতে পারেনি। ১৭ রানে হেরে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে যাত্রা শুরু করলো বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশের থেকে ম্যাচটা ছিনিয়ে নেওয়া সিকান্দার রাজা মাত্র ২৬ বলে ৬৫ রান করেছেন। ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ডানহাতি ব্যাটসম্যান মাঠ মাতিয়ে রাখেন। তবে ইনিংস মেরামত করেছেন মাধভেরে। তিনে নেমে ৪৬ বলে ৪৭ রান করেছেন এ তরুণ তুর্কী। শন উইলিয়ামস ১৯ বলে ৩৩ রান তুলে অবদান রাখেন। 

বাংলাদেশের বোলিংয়ের মতো টপ অর্ডারে লিটন বাদে বাকিদের ব্যাটিং ছিল হতশ্রী। মুনিম মাত্র ৪ রান করেন। লিটন ১৯ বলে ৩২ রান করে উইকেট মিলিয়ে আসেন। তিনে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে ব্যর্থ এনামুল। ২৭ বলে করেন ২৬ রান। নাজমুল হোসেন ২৫ বলে ৩৭ রান করে আশার আলো দেখালেও বড় কিছু করতে পারেননি। তবে শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেছেন সোহান। ২৬ বলে ৪২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি।

শেষের লড়াইয়ে বাংলাদেশ পরাজয়ের ব্যবধান কমালেও টি-টোয়েন্টিতে ১৭ রানের পরাজয় বড় কিছুই। ম্যাচের শুরু থেকে জিম্বাবুয়ের যে জেদ, শারীরিক ভাষা, দলগত ঐক্য মাঠে ফুটে উঠেছিল, বাংলাদেশ ছিল পুরোপুরি উল্টো। বিবর্ণ বোলিংয়ের সঙ্গে গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে দুর্দশা। সঙ্গে যোগ হয় সীমাবদ্ধ ব্যাটিং দুর্বলতা। সব মিলিয়ে হারারেতে দিনটা কোনোভাবেই ছিল না বাংলাদেশের। তাইতো এই জয় ছিল জিম্বাবুয়েরই। ভুল শোধরানোর সুযোগ নেই। রোববারই দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে দুই দল। 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS