বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
মিরসরাইয়ে ভারী বৃষ্টির মধ্যে ঝরনায় বেড়াতে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাংলাদেশের দেওয়া সুবিধার সদ্ব্যবহার করতে ভুটানের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে গতি আনতে শিল্প উপদেষ্টা-বিএসইসির বৈঠক চুয়াডাঙ্গা জুড়ে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’: বৈষম্যহীন বাংলাদেশের দাবিতে রাজপথে গর্জে উঠলো জনতার গণস্বর ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং: ২০ হাজার কোটি টাকার আমানতের মাইলফলক! মালিকানা জমি  খাস খতিয়ানে রেকর্ড করার প্রতিবাদে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ দর বৃদ্ধির শীর্ষে রহিম টেক্সটাইল লেনদেনের শীর্ষে ব্র্যাক ব্যাংক আফগানিস্তানে ওষুধ রপ্তানি করবে ইন্দো-বাংলা ফার্মা আজ ডিএসইতে ৬৯০ কোটি টাকা লেনদেন

উদ্বোধনের অপেক্ষায় অষ্টম চীন মৈত্রী সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২

এস এল টি তুহিন, বরিশাল প্রতিনিধি: পিরোজপুরের কচা নদীর ওপর নির্মিত অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সেতুর মূল কাজ এরইমধ্যেই শেষ হয়েছে ৯৭ ভাগ। চলছে শেষ মুহূর্তের পরিচ্ছন্নতা ও রংয়ের কাজ। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি। সেতুটি চালু হলে এ অঞ্চলের ১৮টি জেলার কয়েক কোটি মানুষের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মানের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।

পাশাপাশি দক্ষিণের যোগাযোগ খাতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে এ সেতু। প্রতিদিনই দূর থেকে এক নজর দেখতে স্বপ্নের সেতুর কাছে যান পথচারীরা। খুলনা টু বরিশাল রুট এবং পিরোজপুরের আন্তঃজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে তরান্বিত করতে জেলা সদরের কুমিরমারা ও কাউখালী প্রান্তের বেকুটিয়ায় পয়েন্টে নির্মিত হয়েছে অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মেত্রী সেতু। ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর শুরু হয় সেতুটির নির্মাণ কাজ।  

সেতু চালু হলে বরিশালের সঙ্গে খুলনার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনসহ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দর এবং বেনাপোল ও বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরকে সেতুটি সরাসরি সড়ক সংযুক্ত করবে। তৈরি হবে কলকারখানসহ শিল্প প্রতিষ্ঠান। মানুষের জন্য সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এ সেতুটি। ফলে পিরোজপুর পরিণত হবে একটি আধুনিক জেলায়, স্বপ্ন জেলাবাসীর। 

সেতু দেখতে আসা এক দর্শনার্থী সামীম হোসেন জনি এর  সাথে কথা হয় রিপোর্টার এস এল টি তুহিন এর তখন  তিনি বলেন, ‘সময় পেলেই বাইক নিয়ে বন্ধুরা মিলে ঘুরতে আসি নতুন নির্মিত সেতুর কাছে। এ অঞ্চলের সব থেকে বড় সেতু এটি। তাই আমাদের আগ্রহ অনেক বেশি। তাছাড়াও এখানে রয়েছে একটি বড় নদী (কচা নদী)। ভালোই লাগে পরিবেশটা। নাফিস মাহমুদ বলেন, পিরোজপুরে আমাদের বিনোদন কেন্দ্র বলতে তেমন কিছু নেই।

বেশির ভাগ সময় নদীর পাড়ে অথবা বলেরশ্বর ব্রিজে সময় কাটাই। তবে নতুন সেতুটি অনেক বড় এবং সুন্দর হওয়ায় আমাদের আগ্রহ এবং ভালো লাগা এটা।সেতুটির নির্মাণের বাকিটুকু কাজ দ্রুতই শেষ করে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা বরিশাল-খুলনা রুটের যাত্রীদের।

পিরোজপুর বেকুটিয়া ফেরিঘাটে অবস্থানকালে  প্রতিবেদককে মো. মালেক মিয়া বলেন, আমি একটি বেসরকারি ব্যাংকে জব করি। আজ অফিস শেষ করে বাড়ির পথে রওনা হই। খুলনা-বরিশাল রুটের বড় সমস্যা বেকুটিয়া ফেরি। এই রুটের যাতায়াতের অর্ধেকেরও বেশি সময় নষ্ট হয় ফেরি পারাপারে। প্রায় ১৮টি জেলার মানুষের পারাপারে জন্য চলে মাত্র একটি ফেরি। এতে মাঝে মাঝে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।আশা করি সরকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দ্রুতই খুলে দিবে সেতুটি।

মো. মিরাজ হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, এ সরকারের আমলে দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে এটা ঠিক। তার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। বেকুটিয়ায় এতো বড় সেতু নির্মাণ হয়েছে। তাতে আমরা সবাই খুশী। এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুলে দিলে কোটি মানুষের কষ্ট দূর হবে। জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা নকীব বলেন, সেতুকে ঘিরে এরই মধ্যেই শুরু হয়েছে এ এলাকার উন্নয়ন প্রক্রিয়া।

হোটেল-মোটেল রেস্তোরাঁসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। এ সেতুটি চালু হলে পাল্টে যাবে এ জেলার যোগাযোগ ও অর্থনীতির চিত্র। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরবাসী ছিলো উন্নয়ন থেকে অবহেলিত। তবে এ সেতু নির্মাণের ফলে উন্নয়ন যাত্রায় অনেকটাই এগিয়ে যাবে পিরোজপুর বাসী তথা দক্ষিণাঞ্চল।

অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান, চীন সরকারের সহযোগীতায় নির্মিত ৯৯৮ মিটার দীর্ঘ ও ১৩.৪০ মিটার প্রস্থ অষ্টম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতুটি নির্মাণে খরচ হয় ৮০৯ কোটি টাকা। সেতুটিতে রয়েছে ১০টি পিয়ার, ৯টি স্প্যান ও গার্ডার এবং ১৫টি ভায়া ডেক। 

তিনি আরো জানান, জুন মাসের শুরুতেই কাজ শেষ করে চীনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দেওয়ার পর আগামী এক মাসের মধ্যে সেতুটি উদ্বোধন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

পিরোজপুরের ডিসি মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, ‘সেতুটি চালু হলে সব থেকে বেশি উন্নতি হবে জেলার কৃষি ও মৎস্য পণ্যের। কারণ এ জেলার ৬০ ভাগ মানুষ কৃষি ও মৎস্য পণ্যের সঙ্গে জড়িত। এতোদিন যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ না থাকায় সময় মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারেননি তারা। তাই তাদের লাভ কম হয়ে থাকে। তবে সেই দিনগুলো পাল্টে যাবে সেতু চালুর সঙ্গে সঙ্গে। খুব কম সময়ে পৌঁছে যাবে কৃষক ও মৎস্যজীবীদের পণ্য আর আগের থেকে ভালোই লাভবান হবেন তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS