করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) অতিমারি বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে অনেকটা থমকে দিয়েছিল। বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়েছিল অনেক জায়ান্ট কোম্পানি। এর মধ্যে বীরের মতো উঠে এসেছিল কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যালস ও বায়োটেক কোম্পানি। এই কোম্পানিগুলো কোভিডের টিকা আবিস্কার করে একদিকে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে, অন্যদিকে ওই টিকার কারণে তাদের মুনাফা ফুলেফেঁপে উঠেছে।
কিন্তু চলতি বছরে পুঁজিবাজারে দিন ভাল যাচ্ছে না এমন তিনটি তারকা কোম্পানির। কোম্পানি তিনটি হচ্ছে-ফাইজার, বায়োএনটেক ও মডার্না। চলতি বছরে কোম্পানি তিনটির শেয়ারে বড় রকমের দর পতন হয়েছে।
তথ্য অনুসারে, চলতি বছর নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে মডার্নার শেয়ারের দর কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। শেয়ারের ৩৫ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে বায়োএনটেক। আর ফাইজারের শেয়ারের দাম কমেছে ১৫ শতাংশ।
দর পতনের শিকার তিনটি কোম্পানি-ই জানিয়েছে, আগের বছরের মতো এবছরও তারা ভাল ব্যবসা করছে। ফাইজার জানিয়েছে, তারা আশা বরছেন এ বছর ৩৫ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আসবে। অন্যদিকে মডার্নার আশা- টিকা বিক্রি থেকে তারা ২০ বিলিয়ন ডলার আয় করবে।
আগের বছরের ভাল ব্যবসা করার পর এ বছরও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার সম্ভাবনার মুখে শেয়ারের দাম কমছে কেন? সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে এটি মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম কমাটা-ই স্বাভাবিক। পুঁজিবাজারের ব্যকরণ বা চর্চা এটাই বলে। সাধারণভাবে কথা প্রচলিত পুঁজিবাজারে-গুজব বা সংবাদের প্রাথমিক পর্যায়ে শেয়ার কেনো, আর নিউজ এলে তা বেচে দাও।
অর্থাৎ কোনো ঘটনা বা সুখবরের সম্ভাবনার সময় সংশ্লিষ্ট শেয়ারের প্রতি সবার ব্যাপক আগ্রহ থাকে, বাজারে থাকে শেয়ারের বাড়তি চাহিদা। ফলে দাম বাড়তে থাকে। ওই খবরটি চলে আসার পর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চাহিদা তৈরি হয়, যারা আগে থেকে ওই খবর সম্পর্কে কিছুুই জানতো না। তাদের কাছে তখন আগের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে থাকেন। অন্যদিকে সামনে আশাবাদী হওয়ার মতো নতুন কিছু না থাকায় শেয়ারের চাহিদা কমে আসে। ফলে শেয়ারের দাম কমতে থাকে। আলোচিত তিন কোম্পানির ক্ষেত্রেও তা ঘটেছে।
গত বছর নানা গুজব, আলোচনা ও প্রত্যাশা থাকায় তিনটি কোম্পানির শেয়ারের দামই অনেক বেড়েছিল। এদের মধ্যে বায়োএনটেকের শেয়ারের দাম বেড়েছিল ২১৫ শতাংশ, মডার্নার ১৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে ফাইজারের শেয়ারের দাম বেড়েছিল ৬০ শতাংশ। এখন এই বাড়তি দাম সমন্বয় হচ্ছে।
তাই বলে কোম্পানি তিনটির শেয়ারের সম্ভাবনা কী ফুরিয়ে গেছে? না, যায়নি। তিনটি কোম্পানিই কোভিডের শিশু-কিশোরদের ব্যবহার উপযোগী টিকা আবিস্কার করেছে। এগুলোর ব্যবহারের অনুমতি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শেষ হলে আবার কোম্পানি তিনটির মুনাফায় বড় উল্লম্ফন হতে পারে। আর এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে আবার ইউ টার্ন করতে পারে শেয়ারের দাম।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply