বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

ইলন মাস্কের নতুন দল গঠন হাস্যকর : ট্রাম্প

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক কর ছাড় আইনের জবাবে ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের হুমকি এবার বাস্তবায়ন করার কথা জানিয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। তার এই সিদ্ধান্তকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প।

স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক লিখেছিলেন, ‘দেশকে দেউলিয়া করার এই অপচয় ও দুর্নীতির খেলায় আমাদের এখানে আসলে একদলীয় শাসন চলছে, গণতন্ত্র নয়। আজ আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে আমেরিকা পার্টি গঠন করা হলো।’

একসময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মাস্ক ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওইজি) নামে পরিচিত সরকারের খরচ কমানো সংস্থার প্রধান ছিলেন। তবে প্রেসিডেন্টের এই কর ছাড় আইন নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন। শুক্রবার এই আইনটি চূড়ান্তভাবে স্বাক্ষরিত হয়।

আইনটি কংগ্রেসে পাস হওয়ার পথে থাকতেই মাস্ক হুমকি দেন, ‘যদি এই বেসামাল খরচের বিল পাস হয়, তাহলে আমি আমেরিকা পার্টি গঠন করব।’

যদিও হোয়াইট হাউসে তার শেষ দিকে মাস্ক বলেছিলেন—ভবিষ্যতে তিনি রাজনীতিতে ‘অনেক কম’ অর্থ ব্যয় করবেন।

এদিকে, রোববার (৬ জুলাই) নিউ জার্সির নিজ বাসা থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার আগে মাস্কের এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘মাস্কের এই উদ্যোগ পুরোপুরি হাস্যকর।’

তিনি আরও বলেন, ‘রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে আমরা দারুণ সাফল্য অর্জন করেছি। তাছাড়া, ডেমোক্রেটরা তাদের পথ হারিয়েছে, কিন্তু এটা বরাবরই দ্বিদলীয় ব্যবস্থা ছিল। আমার মনে হয় তৃতীয় দল গঠন শুধু বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করবে। এটা মূলত দুই দলের জন্যই তৈরি ব্যবস্থা।’

এছাড়া তৃতীয় দলগুলো কখনোই কার্যকর হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

নতুন রাজনৈতিক দল গঠন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে নতুন নয়, তবে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট পার্টির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সমর্থন টেনে নেওয়া সাধারণত কঠিন। তবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক, যিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের পেছনে অন্তত ২৫ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন।

যদি তিনি ২০২৬ সালের কংগ্রেস নিয়ন্ত্রণ নির্ধারণকারী নির্বাচনে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেন, তবে ভোটের সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারেন বলে মনে করেন অনেকে।

তবে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার পুনরায় শুরু হওয়া দ্বন্দ্ব মাস্কের জন্য আর্থিকভাবে বিপর্যয়করও হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ সরকার থেকে কোটি কোটি ডলারের চুক্তির ওপর নির্ভরশীল তার ব্যবসা এবং তার কোম্পানি টেসলা ইতোমধ্যেই শেয়ারবাজারে ধাক্কা খেয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে মাস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন করেছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। রোববার মাস্ক বা তার রাজনৈতিক কমিটি আমেরিকা পিএসির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

যদিও রোববার সকালে মাস্ক এক্স পোস্টের মাধ্যমে পার্টি নিয়ে ব্যবহারকারীদের মতামত নিচ্ছিলেন এবং এই দল ব্যবহার করে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে সক্রিয় হবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

গত মাসেও ট্রাম্পের বিলের পক্ষে ভোট দেওয়া প্রতিটি কংগ্রেস সদস্যকে তিনি নির্বাচনে পরাজিত করার চেষ্টা করবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। ওই বিলে ফেডারেল ঘাটতি আরও বাড়াবে বলে সতর্ক করেছিলেন। 

এদিকে রোববার সিএনএনর ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘ডিওজিউয়ের নীতিগুলো জনপ্রিয় হলেও, ইলন মাস্ক মোটেও জনপ্রিয় ছিলেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, তার পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা কালকের (শনিবার) ঘোষণায় মোটেই খুশি হননি এবং তাকে তার ব্যবসায় মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করবেন, রাজনীতিতে নয়।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS