মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন

মসজিদে শিবলিঙ্গ পাওয়ার দাবি, দ্বিমত করায় অধ্যাপককে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ২১ মে, ২০২২

ভারতের বহুল আলোচিত জ্ঞানবাপী মসজিদে শিবলিঙ্গ পাওয়ার দাবি উঠেছে। এই দাবির সাথে দ্বিমত প্রকাশ করে বিপাকে পড়েছেন দেশটির ইতিহাসের এক অধ্যাপক। তিনি মসজিদে শিবলিঙ্গ পাওয়ার বিষয়টিকে সন্দেহজনক ও অসত্য দাবি করে টুইটারে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে গেছে স্থানীয় পুলিশ।

খবর আনন্দবাজার পত্রিকা, দ্যা ওয়্যার ও এনডিটিভির

ভারতের হিন্দু জঙ্গীবাদী গোষ্ঠিগুলো সম্প্রতি বিভিন্ন মসজিদ, মাজার ও মুসলিম স্মৃতি সংশ্লিষ্ট পুরাকীর্তিকে বিতর্কিত করার মিশনে নেমেছে। বিভিন্ন পুরনো স্থাপনা সম্পকে তাদের দাবি, এগুলো এক সময় হিন্দুদের মন্দির ছিল। মোঘল আমলে সেগুলো দখল করে মুসলিম উপাসনালয়ে পরিণত করা হয়েছে। উত্তর প্রদেশের জ্ঞানবাপী মসজিদ সম্পর্কেও এমন অভিযোগ তুলে সেটি খতিয়ে দেখা এবং ওই মসজিদে মুসলমানদের নামাজ আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশ চেয়ে আদালতে গিয়েছে একটি গোষ্ঠি।

এই আবেদনের প্রেক্ষিতে উত্তর প্রদেশের বারাণসী আদালত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিশন গঠন করে দেয়। সম্প্রতি এই কমিশন আদালতকে জানিয়েছে, তারা মসজিদ প্রাঙ্গনে শিবলিঙ্গের নিদর্শন খুঁজে পেয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে আদালত ওই ‘শিবলিঙ্গ’ এর আশপাশের কিছুটা জায়গা সুরক্ষিতভাবে ঘিরে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তবে মুসলমানদের নাজাম আদায়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।

ভারতের রাজধানী দিল্লীর হিন্দু কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক রতন লাল আলোচিত কমিশনের কথিত দাবির সাথে দ্বিমত প্রকাশ করে টুইট করেন। মসজিদ প্রাঙ্গনে পাওয়া যাওয়া বস্তুটির শিবলিঙ্গ না হওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে এর স্বপক্ষে যুক্তিও তুলে ধরেন।

গত মঙ্গলবার অধ্যাপক লালের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করেন দিল্লির এক আইনজীবী। তাঁর অভিযোগ, শিবলিঙ্গ নিয়ে যে পোস্ট অধ্যাপক করেছেন, তা আপত্তিজনক এবং বিশেষ সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্যে লেখা। অধ্যাপকের এই ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ কাজের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেন তিনি। এর পরেই শুক্রবার রাতে ওই অধ্যাপককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

রতন লাল শুধু একজন শিক্ষাবিদই নন, তিনি দেশটির দলিত সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার একজন সোচ্চার কর্মী। তিনি অম্বেদরকরনামা নামের একটি নিউজপোর্টালের প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। অসাম্প্রদায়িকতার স্বপক্ষের কর্মী ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারেরর একজন সমালোচক।

গ্রেপ্তারের ঠিক আগে আগে আরেকটি টুইটে তিনি বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝেড়ে লিখেন, ‘‘ভারতে কোনও বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা মানেই কারও না কারও ভাবাবেগে আঘাত লাগবে। তাই, এটা নতুন কিছু নয়।’’ অধ্যাপকের আরও সংযোজন, ‘‘আমি নিজে ইতিহাসবিদ। আমার কিছু পর্যবেক্ষণ আছে। সে সবই ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলাম।’’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS