পুঁজিবাজারে কারচুপি, স্বজনপ্রীতি ও অর্থলোপাটের দায়ে গ্রেফতার ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) চিত্রা রামকৃষ্ণকে আরও কিছু দিন জেলেই কাটাতে হবে। জেল থেকে বের হওয়ার লক্ষ্যে জামিন চাইলেও তিনি জামিন পাননি। আদালত তার জামিন নাকচ করে দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দিল্লীর একটি আদালতে চিত্রার জামিনের শুনানী হয়। আদালত চিত্রার অপরাধকে গুরুতর উল্লেখ করে বলেন, এই ঘটনা দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আদালত একই ঘটনায় স্টক এক্সচেঞ্জটির প্রাক্তন গ্রুপ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আনন্দ সুব্রহ্মণ্যমের জামিনের আবেদনও খারিজ করে দেন।
নিজের খেয়ালখুশি মতো কর্মীদের পদোন্নতির অভিযোগ ও দুর্নীতির দায়ে ভারতের কেন্দ্রীয় পুলিশ মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশটির ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) সাবেক প্রধান নির্বাহী চিত্রা রামকৃষ্ণকে গ্রেপ্তার করে। যোগসাজশের মাধ্যমে কিছু নির্দিষ্ট ব্রোকারকে আগে আগে লেনদেনের তথ্য পাবার সুযোগ করে দেওয়ার (Co-location) অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনায় স্টক এক্সচেঞ্জটির প্রাক্তন গ্রুপ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আনন্দ সুব্রহ্মণ্যমকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৮ সালে চিত্রার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও কো-লোকেশনের অভিযোগ উঠে। তার বিরুদ্ধে এই বছরের মে মাসে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) বিষয়টির তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়।
এই ঘটনায় ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ ও চিত্রাসহ কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়। স্টক এক্সচেঞ্জ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে তাদের চাকরিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। স্থগিত করা হয় এর আইপিও।
এই ঘটনায় গত মার্চ মাসে চিত্রাকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তখন থেকেই তিনি জেলে আছেন।
বৃহস্পতিবার আদালতে চিত্রা ও আনন্দের জামিনের বিষয়ে আদালতে শুনানী হয়। আদালত জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়। দীর্ঘ রায়ে দিল্লির বিশেষ আদালতের বিচারক সঞ্জীব অগ্রবাল তুলে এনেছেন বব ডিলানের গানের লাইন। যার অর্থ ‘টাকা শুধু কথাই বলে না, তার প্রভাবের ব্যাপ্তি আরও বিস্তৃত’। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
বিশেষ বিচারক সঞ্জীব অগ্রবাল তাঁর ৪২ পাতার রায়ে বলেছেন, ‘প্রাথমিক ভাবে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্ত (চিত্রা) এনএসইকে একটি ক্লাব চালানোর ঢঙে পরিচালনা করছিলেন। নোবেলজয়ী সঙ্গীতকার বব ডিলান একদা বলেছিলেন, ‘মানি ডাজন্ট টক, ইট সোয়ার্স’। ১৯৬৪-তে ‘ইটস অলরাইট মা অ্যাম ওনলি ব্লিডিং’ অ্যালবামের এই লাইটির অর্থ হল, টাকা শুধু কথাই বলে না, তার প্রভাবের ব্যাপ্তি আরও বিস্তৃত। এমনকি কখনও কখনও তা মানুষের উপর বিকৃত প্রভাবও ডেকে আনে।’
উল্লেখ্য, প্রাক্তন এমডি-সিইও চিত্রা রামকৃষ্ণ এক অজ্ঞাতপরিচয় ‘যোগী’-র কথায় চলতেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই যোগীর কথায় নাকি চিত্রা এনএসই-র গোপন তথ্য ফাঁস করতেন। তদন্তকারী সংস্থার সূত্র উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, চিত্রার উপদেষ্টা আনন্দই হচ্ছেন হিমালয়ের সেই ‘সাধু’।
খবরে, হিন্দুস্থান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply