শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ০২:১৫ পূর্বাহ্ন

গণ-অভ্যুত্থানের শহীদেরা ‘জুলাই শহীদ’, আহতরা ‘জুলাই যোদ্ধা’ স্বীকৃতি পাবেন : ফারুক ই আজম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৯ Time View

গণ-অভ্যুত্থানের শহীদেরা ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতরা ‘জুলাই যোদ্ধা’ নামে পরিচিতি পাবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।

গতকাল সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম এ কথা বলেন।

জেলা প্রসাশকদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা ‘জুলাই শহীদ’ নামে খ্যাত হবেন। এই নিরিখে তাদের পরিবারগুলো সনদ ও পরিচয়পত্র পাবেন। অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তারা ‘জুলাই যোদ্ধা নামে’ খ্যাত হবেন। তারা এই নিরিখে সনদ ও পরিচয়পত্র পাবেন এবং অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও আজীবন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি তারা ভাতাও পাবেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, যারা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবার এককালীন ৩০ লাখ টাকা পাবেন সঞ্চয়পত্রের নিরিখে। চলতি অর্থ বছরেই তাদের সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। বাকি ২০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রের নিরিখে আগামী অর্থবছরের জুলাই মাস থেকে পাবেন।

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে আহতদের তালিকা যাচাই সহজীকরণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গণ-অভুত্থানে আহতদের তালিকার সঠিকতা যাচাই, ফাউন্ডেশন কর্তৃক শহীদ পরিবারকে অর্থ সহায়তা প্রদান এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য পিজি হাসপাতালসহ অন্যান্য বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রেরণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

জুলাই অধিদপ্তর গঠনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, ‘আশা করছি, চলতি সপ্তাহে অধিদপ্তর গঠন হয়ে যাবে। অধিদপ্তর করার নিরিখে একটি নীতিমালাও হয়েছে।’

আন্দোলনে আহতরা তিন ক্যাটাগরিতে সহায়তা পাবেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আহতরা আজীবন চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। তারা ভাতাও পাবেন। যারা গুরুতর আহত তারা এককালীন পাঁচ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। একটি অঙ্গহানি হয়েছে এমন আহত যারা আছেন, তারা প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতা এবং এককালীন তিন লাখ টাকা পাবেন। সামান্য আহত ছিলেন, চিকিৎসা নিয়েছেন, ভালো হয়ে গেছেন, তারা চাকুরিসহ পুনর্বাসন কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার পাবেন। তারা কোনো ভাতা পাবেন না।

আহতরা বিভিন্ন মাত্রায় প্রশিক্ষণ পাবেন। সরকারি, আধা-সরকারি ও অন্যান্য চাকুরিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের কর্মসংস্থান করা হবে। তারা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাবেন বলেও জানান তিনি।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে জানিয়ে ফারুক ই আজম বলেন, আজকের সভায় অনেক ডিসি অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন জায়গায় অনেকে মুক্তিযুদ্ধ না করেও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জেলা প্রশাসকদের মধ্য থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। তারা এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা চেয়েছেন।

ডিসিদের দেওয়া নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা বলেছি, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল পুনর্গঠন হয়েছে। জামুকার যে আইনটি ছিল, তারা সেটিতে সংশোধনী আনছেন। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞার নিরিখে এই সংশোধনী আসছে। এই সংশোধনী আসার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদও পুনর্গঠিত হবে। সংসদ পুনর্গঠিত হলে প্রত্যেক জেলায় জেলায় আমরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করব। যাদের আমরা শনাক্ত করতে পারব তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ফারুক ই আজম বলেন, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসকরা তাদের পর্যবেক্ষণ আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন। সেগুলো আমরা শুনেছি। যে বিষয়গুলোতে তাদের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার, সেটি তাদের দেওয়া হয়েছে। আর যেসব বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সেগুলো আমরা নোট করে নিয়েছি এবং সেগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করবে।

স্থানীয় পর্যায়ে পুর্নবাসন কার্যক্রম, কাবিখাসহ বিভিন্ন বরাদ্দগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ডিসিদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এই বরাদ্দের নিরিখে যে প্রকল্পগুলো গ্রামীণ অবকাঠামোতে গ্রহণ করা হবে, সেগুলো যাতে যথাযথভাবে হয়।

ফারুক ই আজম বলেন, বরাদ্দপত্রের ক্ষেত্রে আগের যে কেন্দ্রীয় প্রথা ছিল, সেটি আমরা পরিবর্তন করেছি। এগুলো সম্পর্কে তাদের ধারণা দিয়েছি। যেমন কম্বল আগে কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ করে বিতরণ করা হতো। এখন সেটি মাঠ পর্যায়ে সংগ্রহ করে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে। একইভাবে গৃহ নির্মাণের সরঞ্জামগুলো স্থানীয় পর্যায়ে সংগ্রহ করে চাহিদার নিরিখে বিতরণ করা হবে। কোনোটাই আর কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয়নি। গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো রকমের বৈষম্য যেনো সৃষ্টি না হয়, এগুলো সম্পর্কে তাদের সতর্ক করা হয়েছে।  

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, মন্ত্রণালয়ের সাইক্লোন সেন্টারসহ যে স্থাপনাগুলো গ্রামীণ পর্যায়ে আছে, সেগুলোর যাতে যথাযথ ব্যবহার হয় সেই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS