মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:২১ অপরাহ্ন

ট্রাম্পের বিশ্বাস ‘গ্রিনল্যান্ড, পাবে যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫

র্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করবে।’ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে স্বায়ত্তশাসিত ডেনিশ অঞ্চলটি অধিগ্রহণে নতুন করে আগ্রহ দেখানোর পর তিনি এ মন্তব্য করলেন। খবর বিবিসির।

গতকাল শনিবার (২৫ জানুয়ারি) এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি মনে করি এটি আমাদের হবে।” তিনি আরও বলেন, দ্বীপটির ৫৭ হাজার বাসিন্দা “আমাদের সঙ্গে থাকতে চায়।”

এই মন্তব্য এমন এক সময় এলো যখন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত ফোনালাপে জোর দিয়ে বলেন, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়।

২০১৯ সালে প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প বিশাল আর্কটিক অঞ্চলটি কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ “খুব প্রয়োজনীয়”।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি সেখানকার লোকজন আমাদের সঙ্গে থাকতে চায়।”

ট্রাম্প আরও বলেন, “আমি জানি না ডেনমার্কের কী দাবি আছে এটার ওপর, তবে এটা হতে দেওয়া না হলে সেটা খুবই অমিত্রতাপূর্ণ কাজ হবে, কারণ এটি বিশ্ব মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয়।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “গ্রিনল্যান্ড আমাদের হবে কারণ এটি বিশ্বের স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত” ।

তবে ট্রাম্পের আত্মবিশ্বাসের বিপরীতে গ্রিনল্যান্ড এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী দুজনে আগেই বলেছেন, দ্বীপটি বিক্রির জন্য নয়।

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুট এগেডে বলেছেন, দ্বীপটির ভূমির ব্যবহার “গ্রিনল্যান্ডের বিষয়”, যদিও তিনি প্রতিরক্ষা এবং খনিসম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক।

অন্যদিকে, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেন এই মাসের শুরুর দিকে বলেছেন, “গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডারদের” এবং শুধুমাত্র স্থানীয় জনগণই এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে ৪৫ মিনিটের উত্তপ্ত ফোনালাপে ফ্রেডেরিকসেন তার অবস্থান পুনরায় তুলে ধরেন।

ইউরোপীয় এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি জানিয়েছে, আলোচনাটি “ভয়ংকর” ছিল এবং ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণে আগ্রহ “গুরুতর এবং সম্ভাব্য বিপজ্জনক”।

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী দ্বীপটি বিক্রির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও যুক্তরাষ্ট্রের “বড় আগ্রহ” থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন।

উত্তর আমেরিকা থেকে ইউরোপ যাওয়ার সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথের ওপর অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড, কৌশলগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমেরিকান মহাকাশ স্থাপনারও বড় একটি কেন্দ্র। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রিনল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদ, যেমন বিরল খনিজ, ইউরেনিয়াম এবং লোহা আহরণের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। দ্বীপটি বিস্তৃত স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করলেও এটি এখনও ডেনমার্কের রাজত্বের অংশ।

তবে গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতা অর্জনের ব্যাপারে সাধারণ ঐকমত্য রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন ধরণের সম্পর্ক গড়ে তুলতে পথ সুগম করতে পারে।

গ্রিনল্যান্ডের জনগণ “আমাদের সঙ্গে থাকতে চায়” বলে ট্রাম্পের দাবি দ্বীপটির কিছু বাসিন্দাদের কাছে বিস্ময়কর মনে হতে পারে।

কাপিসিলিট এলাকায় এক মৎস্যজীবী বিবিসিকে বলেন, ট্রাম্প দ্বীপটি পরিদর্শন করতে চাইলে “স্বাগত,” তবে “গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডারদের।”

স্থানীয় গির্জার একজন প্রবীণ নেতা কালেয়েরাক রিংস্টেড বলেন, ট্রাম্পের ভাষা “গ্রহণযোগ্য নয়” এবং “গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়।”

ট্রাম্প কীভাবে এই অঞ্চল দখলে নিতে চান সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি সামরিক বা অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা নাকচ করতে পারেননি।

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য ডেনমার্কের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যার ফলে এই মাসের শুরুতে কোপেনহেগেনে তাড়াহুড়ো করে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক করা হয়েছে। 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS