গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিন। এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ১৩ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর দাপ্তরিক সংখ্যা ১২ হাজার ৭৯৯ জন। অনেক মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, ফলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। আহত হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৯৪২ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া ৫৯৮ শিক্ষক ও স্কুল প্রশাসক প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০১ জন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও এই হামলার প্রভাব ভয়াবহ। ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় ৪২৫টি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়েছে। পশ্চিম তীর থেকে ৫৩৮ শিক্ষার্থী এবং ১৫৮ শিক্ষক ও প্রশাসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাজার গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। আটক ব্যক্তিদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
ইসরায়েলের আগ্রাসনের মুখে প্রতিরোধও অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ গাজায় স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েলের দুই সেনা নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোশিকো ম্যাক্সিম রোজেনওয়াল্ড (৩৫), যিনি নাহাল ব্রিগেডের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন। অপর নিহত সেনার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠী হুতি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। হুতি মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, “প্যালেস্টাইন ২” নামে ক্ষেপণাস্ত্রটি ব্যবহার করে তারা ইসরায়েলের দিকে আক্রমণ চালিয়েছে। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশের আগেই প্রতিহত করা হয়েছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি আগ্রাসনে নারী, শিশু, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে প্রতিরোধ আন্দোলন ও আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে যেতে না পারলে এই সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply