ব্রিটেন গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রান্স-প্যাসিফিক বাণিজ্য চুক্তিতে ১২তম সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বের হয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) পর এটাই ব্রিটেনের বড় কোনো চুক্তিতে যুক্ত হওয়ার ঘটনা। জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী। মূলত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য সংযোগ জোরদার করার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রিটেন।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ব্রিটেন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ব্রিটেন গত বছর ঘোষণা করেছিল, তারা কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রগ্রেসিভ অ্যাগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা সিপিটিপিপিতে যোগ দেবে, যা ব্রেক্সিট-পরবর্তী তাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি।
এ সদস্যপদ অর্জনের মাধ্যমে ব্রিটেন রোববার থেকে সিপিটিপিপি বাণিজ্য নিয়ম প্রয়োগ করতে এবং ব্রুনাই, চিলি, জাপান, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে শুল্ক কমানোর সুযোগ পাবে। এ চুক্তি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ২৪ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। অন্যদিকে কানাডা ও মেক্সিকোর পক্ষ থেকে অনুমোদনের পর কার্যকর হতে ৬০ দিন লাগবে।
ব্রিটেন ধারণা করছে, এ চুক্তি দীর্ঘমেয়াদে প্রতি বছরে ২০০ কোটি পাউন্ড (প্রায় ২৫০ কোটি ডলার) আয়ের সুযোগ তৈরি করবে, যা দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ১ শতাংশের কিছুটা কম।
মালয়েশিয়া ও ব্রুনাইয়ের সঙ্গে ব্রিটেনের এটাই প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। যদিও চুক্তিভুক্ত অন্য দেশের সঙ্গে তাদের আগে থেকেই চুক্তি ছিল। তবে সিপিটিপিপি চুক্তি কোম্পানিগুলোকে ‘রুলস অব অরিজিনে’র ব্যবহারে আরো নমনীয়তা প্রদান করে।
সিপিটিপিপি ইইউর মতো পণ্য ও সেবার জন্য একক বাজার তৈরি করে না। ফলে নিয়মকানুন একই করার প্রয়োজন নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইইউ বাণিজ্য ক্ষেত্র থেকে ২০২০ সালের শেষ দিকে বের হয়ে আসার পর ব্রিটেনের জন্য এ চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ।
তবে শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত দিক থেকেও এ চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্রিটেন এখন চীন ও তাইওয়ানের মতো দেশগুলো এ গ্রুপে যোগ দেবে কিনা সে বিষয়ে প্রভাব রাখতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি ছিল এ চুক্তির মূলে। চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রভাবকে মোকাবেলা করার জন্য আংশিকভাবে টিপিপি গঠিত হয়েছিল। তবে ২০১৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি থেকে সরে যায়। পরে সিপিটিপিপি নামে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়।
কোস্টারিকা এ গ্রুপে যোগদানের প্রক্রিয়ার পরবর্তী আবেদনকারী দেশ। ইন্দোনেশিয়াও এতে যোগদানের লক্ষ্যে রয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply