শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন

এশিয়ার যে দেশে জন্মহার বাড়াতে সপ্তাহে তিনদিন ছুটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

জাপানের টোকিও মেট্রোপলিটন কর্তৃপক্ষ কর্মীদের জন্য ৪ দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করতে যাচ্ছে। এ কর্মসূচির অধীনে কর্মীরা নিয়মিত ২ দিনের সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে একটি অতিরিক্ত ছুটির দিন বেছে নিতে পারবেন।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ব্রিটেন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করছে।

টোকিও মেট্রোপলিটন কর্তৃপক্ষ কর্মীদের জন্য চারদিনের কর্মসপ্তাহ চালু করতে যাচ্ছে। এ কর্মসূচির অধীনে কর্মীরা নিয়মিত দুদিনের সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে একটি অতিরিক্ত ছুটির দিন বেছে নিতে পারবেন। কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মাঝে ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি শিশু লালনপালনে উৎসাহিত করতে এ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে বাস্তবায়ন হবে।

জাপান ছাড়াও অনেক দেশ আজকাল ‘ফোর-অন, থ্রি-অফ’ পদ্ধতি গ্রহণ করছে। বিভিন্ন স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনার বিষয় হয়ে ওঠা এ পদক্ষেপে এমন সময় যুক্ত হলো টোকিওতে, যখন জাপানের জনসংখ্যা টানা ১৬তম বছর পতনের পথে রয়েছে।

টোকিওর গভর্নর ইউরিকো কোইকে এ উদ্যোগকে নারীর ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তার মতে, এতে সন্তান জন্মদান ও পরিবারিক জীবনের সঙ্গে ক্যারিয়ার ভারসাম্য তৈরি হবে।

২০১২-২২ সালের মধ্যে টোকিওতে জন্মহার ১৫ শতাংশেরও বেশি কমেছে। পুরো জাপানে জন্মহার ২০২৪ সালে সাত লাখের নিচে নেমে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে, যা ১৮৯৯ সালে পরিসংখ্যান সংগ্রহ শুরু হওয়ার পর সর্বনিম্ন।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সাপ্তাহিক কর্মদিবস কমানোর এ উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী কম কর্মঘণ্টার পরীক্ষামূলক প্রকল্পগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ-সংক্রান্ত একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, কর্মদিবস কমানোর পদক্ষেপ কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়ায়, কর্মী ধরে রাখার হার উন্নত করে এবং অসুস্থতাজনিত ছুটি কমিয়ে আনে।

গভর্নর ইউরিকো কোইকে সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমরা নিজেদের কাজের শৈলীকে নমনীয়ভাবে পর্যালোচনা করব। যেন কাউকেই শিশু জন্ম ও যত্ন নেয়ার মতো দায়িত্বের কারণে ক্যারিয়ার বিসর্জন দিতে না হয়।’

ফোর ডে উইক গ্লোবালের প্রতিষ্ঠাতা শার্লট লকহার্ট উল্লেখ করেছেন, কম কর্মঘণ্টার সুবিধাগুলো বিশ্বব্যাপী সামঞ্জস্যপূর্ণ, কারণ মানুষ সর্বত্রই বেশি অবসর সময় চান। দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও জার্মানিসহ ২০টি দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

জাপান সরকার এরই মধ্যে নিম্ন জন্মহারের মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আর্থিক প্রণোদনা, করছাড় ও ডে কেয়ার সুবিধার সম্প্রসারণ। টোকিও স্থানীয় সরকারের উদ্যোগে একটি ডেটিং অ্যাপও চালু হয়েছে, যা বিয়েকে উৎসাহিত করতে এবং জন্মহার বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা সম্প্রতি জাপানের নিম্ন জন্মহারকে ‘নীরব জরুরি অবস্থা’ বলে অভিহিত করেছেন। একই সঙ্গে শ্রমশক্তির ঘাটতি ও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর দেখভালজনিত সমস্যা সমাধানে জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS