নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গত পাঁচ বছরে দিনাজপুর জেলার ছয়টি আসনের ছয়জন সংসদ-সদস্যের প্রত্যেকেরই সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। তাদের মধ্যে কারও কারও সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ পর্যন্ত। কারও স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে আবার কমেছে কারও স্ত্রীর।
নির্বাচন কমিশনে উল্লিখিত প্রার্থীদের দাখিল করা হলফনামায় এমন তথ্য মিলেছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচনি হলফনামায় দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের সংসদ-সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপালের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে এক কোটি ৩৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দাখিলকৃত হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছিল এক কোটি ১১ লাখ ৭৩ হাজার ১১০ টাকা। পাঁচ বছরে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ২৭ লাখ ৪২ হাজার ৩৬৬ টাকা। স্থাবর সম্পত্তি হিসাবে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ৬ একর ৮৮ শতক কৃষিজমি, নিজের অর্জন করা ১০ একর ৬ শতক অকৃষি জমি, পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ৫ শতক জমিতে দালান, নিজের অর্জন করা ৩ শতক জমিতে দালান এবং রাজউকে ৯ কাঠা ১৫ ছটাকের একটি প্লট দেখানো হয়েছে। এ ছাড়াও তার স্ত্রীর নামে সাড়ে ৭ শতক অকৃষি জমি এবং ৪ শতক জমিতে একটি দালান দেখানো হয়েছে।
দিনাজপুর-২ (বিরল-বোঁচাগঞ্জ) আসনের সংসদ-সদস্য বর্তমান নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর বর্তমান অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছে তিন কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল এক কোটি ৭০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে দুই কোটি আট লাখ ২৩ হাজার টাকা। এছাড়াও স্থাবর সম্পদ হিসাবে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ১৮ একর ২৫ শতক জমি এবং ঢাকার উত্তরায় ৫ কাঠার একটি প্লট দেখানো হয়েছে। তার স্ত্রীর নামে স্বর্ণালংকার ছাড়া কোনো সম্পদ উল্লেখ করা হয়নি।
দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ-সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের বর্তমান অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে তিন কোটি ৯৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে তার অস্থাবর সম্পদ ছিল তিন কোটি ২৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। পাঁচ বছরে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৭৩ লাখ ২৮ হাজার ৮৮৫ টাকা। এছাড়াও তার স্থাবর সম্পত্তি হিসাবে দেখানো হয়েছে চার একর কৃষিজমি, ঢাকার বসুন্ধরায় তিন কাঠা জমি, উত্তরায় পাঁচ কাঠা জমির ওপর ভবন ও ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট। হুইপ ইকবালুর রহিমের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ কমেছে। এবার তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয় ৩৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে এর পরিমাণ ছিল ৫৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬৪ টাকা।
দিনাজপুর-৪ (চিরিরবন্দর-খানসামা) আসনের সংসদ-সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সম্পদ পাঁচ বছরে বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। বর্তমানে তার অস্থাবর সম্পদ ১৬ কোটি তিন লাখ ১৩ হাজার ৪৭০ টাকা। পাঁচ বছর আগে তার অস্থাবর সম্পদ ছিল ছয় কোটি ১৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ৯ কোটি ৮৭ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে কোনো সম্পদ দেখানো হয়নি।
দিনাজপুর-৫ (ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর) আসনের সংসদ-সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের সম্পদ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এ ছাড়াও তার স্ত্রীর সম্পদও বেড়েছে। মোস্তাফিজুর রহমানের বর্তমান অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে দুই কোটি ৮৪ লাখ ৮১ হাজার ৪৯৪ টাকা। পাঁচ বছর আগে অস্থাবর সম্পদ ছিল এক কোটি ৬৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা। এ ছাড়াও তার স্থাবর সম্পদ হিসাবে দেখানো হয়েছে তিন একর কৃষিজমি, এক শতাংশ অকৃষি জমি এবং ফুলবাড়িতে ৪৬৬.৬৫ বর্গমিটার আয়তনবিশিষ্ট একটি মার্কেট। পাঁচ বছরে সম্পদ বেড়েছে তার স্ত্রীরও। পাঁচ বছর আগে তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয় ৭৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। এবার দেখানো হয়েছে এক কোটি ২০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। এ ছাড়াও তার স্ত্রীর নামে দিনাজপুর শহরে ৪৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা মূল্যের একটি বাড়ি দেখানো হয়েছে। আর পাঁচ বছর আগের মতো এবারও তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি হিসাবে দেখানো হয় ফুলবাড়িতে ৭ শতাংশ জমিতে চারতলা মার্কেট।
দিনাজপুর-৬ (বিরামপুর-হাকিমপুর-নবাবগঞ্জ-ঘোড়াঘাট) আসনের সংসদ-সদস্য শিবলী সাদিকের পাঁচ বছরে সম্পদ বেড়েছে প্রায় চারগুণ। বর্তমানে তার অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে ১১ কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে তার অস্থাবর সম্পদ ছিল দুই কোটি ৯৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। পাঁচ বছরে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে আট কোটি ৫৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply