চলতি জুলাই মাসের প্রথম ৭ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৬ কোটি ৫৬ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা ধরে যার পরিমাণ ৫ হাজার ৫১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, জুলাই মাসের প্রথম ৭ দিনে মোট ৪৬ কোটি ৫৬ লাখ মার্কিন ডলার এসেছে দেশে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫ কোটি ৭২ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ কোটি ৮৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং বিদেশিখাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
আলাচিত সময়ে এগারো ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়ীত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব, বেসরকারি খাতের বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, কমিউনিটি ব্যাংক লিমিটেড, সিটিজেনস ব্যাংক পিএলসি, সীমান্ত ব্যাংক লিমিটেড, বিদেশি খাতের সিটি ব্যাংক এনএ, হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ওয়ারি ব্যাংক এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
এদিকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সাথে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। গত মাসে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ ব্যাপকহারে বাড়ে। মাসটিতে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ঢাকা জেলার প্রবাসীরা। আর সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে পার্বত্য অঞ্চলের জেলা বান্দরবানে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে ঢাকা জেলায় রেমিট্যান্স এসেছে সর্বোচ্চ ৬৯৬ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। আর বান্দরবানে এসেছে মাত্র ১ কোটি ৯৯ লাখ ডলার।
এদিকে ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সদ্যসমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। তার আগের অর্থবছরে বিক্রি করে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির কারণে ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। সবশেষ ২৫ জুন পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এতে সংকট আরও বেড়ে যায়। পরে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর। এরপর থেকে এ দুই সংগঠন মিলে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে।
সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ২ হাজার ১০২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। যার পরিমাণ এর আগের অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১.০৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply