সৌদি আরব, রাশিয়া, কাতার, মরক্কো ও স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। নতুন সরকারের অধীনে এটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম বৈঠক।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, এক হাজার ১৪১ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে সৌদি আরব, রাশিয়া, কাতার, মরক্কো ও স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ইউনিয়া, ৮০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি, ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি এবং ৩০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি রয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সৌদি আরব থেকে ১ম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার কিনবে। প্রতি মেট্রিক টন ৫৮৯ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট খরচ পড়বে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৫৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা খরচ হবে।
এ ছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে বিএডিসি মরক্কোর ওসিপি, এসএ থেকে ৩য় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার কিনবে। প্রতি মেট্রিক টন ৩৮৬ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট খরচ পড়বে ১ কোটি ১৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা খরচ হবে।
একই প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে বিএডিসিকে ৩য় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রতি মেট্রিক টন ৫৪৭.৫০ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট খরচ পড়বে ২ কোটি ১৯ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকা খরচ হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আরও জানায়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় রাশিয়ার থেকে জেএসসি ফরিং ইকোমিক কর্পোরেশন ‘প্রোডিন্টরগ’ থেকে ৪র্থ লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রতি মেট্রিক টন ৩০২.১০ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট খরচ পড়বে ৯০ লাখ ৬৩ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৯ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে।
অপরদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনকে (বিসিআইসি) কাতারের কাতার কেমিক্যাল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (মুনতাজাত) থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রতি মেট্রিক টন ৩১৩.৪২ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট খরচ পড়বে ৯৪ লাখ ২ হাজার ৬০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৩ কোটি ৪২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে বিসিআইসি সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে দুইটি লটে ৬০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির করবে। প্রতি মেট্রিক টনে ৩১৩.৪২ মার্কিন ডলার হিসেবে খরচ পড়বে এক কোটি ৮৮ লাখ ৫ হাজনর ২০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০৬ কোটি ৮৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা খরচ হবে।
আর শিল্প মন্ত্রণালয় আওতায় বিসিআইসি কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) বাংলাদেশের কাছ থেকে ১৩তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনবে। প্রতি মেট্রিক টন ৩১৬.৬২৫ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট খরচ পড়বে ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৪ কোটি ৪৮ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা।
ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য (টেবিলে ৩টি প্রস্তাবসহ) ১২টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছিল। প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৪টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৪টি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ৩টি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ১টি প্রস্তাবনা ছিল।
ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ১২টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ৩ কোটি ৫৮ লাখ ১০ হাজার ৬৬০ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৮৬১ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার ১৬০ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক অর্থায়ন করবে ১ হাজার ১৪১ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply