শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ অপরাহ্ন

ভৈরবে ট্রেনে কাটা পড়ে ১ বছরে প্রাণ হারিয়েছেন ৭১ জন

ইমন মাহমুদ লিটন 
  • আপডেট : সোমবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২১৭ Time View

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: ভৈরব রেলওয়ে জংশন থানাধীন এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে গত ১ বছরে নারী পুরুষ ও শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছেন ৭১ জন। যাদের মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ, ১৭ জন নারী ও ৫ জন শিশু রয়েছে ।

নিহতদের অধিকাংশই অজ্ঞাত। এসকল মৃত্যুর ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় ৭১টি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে থানা পুলিশ।

রেলওয়ে থানা পুলিশ জানা যায় , গত ২০২৩ সালের ১লা জানুয়ারি হইতে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত পৃথক পৃথক ঘটনায় নারী, পুরুষ ও শিশু সহ মোট ৭১ জন ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ।

ভৈরব-টঙ্গী, ভৈরব-সরারচর রেল পথের বিভিন্ন এলাকায় গত ১২ মাসে অসতর্কতার কারনে উল্লেখিতরা ট্রেনে কাটা পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু বরণ করেন। নিহতদের মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ এবং ১৭ জন নারী ও ৫ জন শিশু রয়েছে ।

রেলওয়ে সুত্র জানায়, ভৈরব রেলওয়ে থানাধীন ভৈরব-টঙ্গী ৭০ কিলোমিটার ও ভৈরব-সরারচর পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার রেলপথ। ভৈরব রেলওয়ে থানা সীমানায় রয়েছে মোট ১৯টি রেলওয়ে ষ্টেশন। এ পর্যন্ত যারা মারা গেছে তারা চলন্ত ট্রেনে উঠানামা, রেলপথ পারপার, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণরত যাত্রী, দুই বগীর সংযোগ স্থলে বসে যাতায়াত কিংবা ট্রেনের দরজার হাতলে ঝুলন্ত অবস্থায় যাতায়াতকালে অসাবধানতা বশত ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এ সকল মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করলেও এইসব স্টেশন থেকে বিশেষ করে লোকাল ও মেইল ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী ট্রেনের বগীর সীমাবদ্ধতার কারনে ঝুকিপুর্ণ ভ্রমন করায় এসকল মৃত্যু হয়।

ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ইউছুফ আলী মোল্লা জানান, ট্রেন আসার আগ মুহুর্তে অপেক্ষমান যাত্রীদের উদ্দ্যেশ্যে স্টেশনে মাইকিং করে জানানো হয় যাত্রীরা যেন রেলাইন থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখে। রেল লাইন পারাপারের সময় ওভারব্রীজ ব্যবহার করে। চলন্ত অবস্থায় ট্রেন থেকে নামতে গিয়েও অনেকেই ট্রেনে কাটা পড়েন। এছাড়াও বিরতিহীন ট্রেন থেকে ধীরগতি অবস্থায় যাত্রীদের অনেকেই এ স্টেশনে উঠানামা করতে গিয়ে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন। চলন্ত অবস্থায় ট্রেনে উঠা নামা মোটেই উচিৎ নয়। রেল ষ্টেশন কর্তৃপক্ষ সব সময়ই যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতা মূলক প্রচারণা করে থাকে।

ভৈরব রেলওয়ে নিরাপত্বা বাহিনী ইন্সপেক্টর এস এম তাজবীর বলেন , রেল ভ্রমণে যাত্রীরা যেন ট্রেনের ছাদে , ইঞ্জিনে, কিংবা দুই বগীর সংযোগস্থলে বসে যাতায়াত না করে সেজন্য আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকি। দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেন আসার আগ মুহুর্তে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সাইরেন বাজিয়ে যাত্রীদের সতর্ক করে থাকে। অসতর্কতাবস্থায় যাত্রীদের রেল লাইন পারাপার কিংবা ট্রেনে উঠানামা করতে গিয়ে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আলীম সিকদার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ রেল ভ্রমণের কারণে রেলওয়ে পুলিশ আর্থিক জরিমানা করে আদালতে সোপর্দ করলেও পরবর্তীতে তারা বেরিয়ে এসে পুনরায় ঐ পথই বেছে নেয়। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে চলন্ত ট্রেনে উঠানামা ত্যাগ এবং ষ্টেশনে ষ্টপেজ নেই এমন ট্রেনে ভ্রমন না করাসহ ওভারব্রীজ ব্যবহার করা হলে ওই সকল অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে। ট্রেনের বগীর ভিতরে বসে যাতায়াত ব্যতিত ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমন অনেকটা রোধ করা গেছে। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর অপমৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে। ২০২৩ সালে ৭১টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসকল অপমৃত্যুর ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় ৭১টি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS