রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২১ অপরাহ্ন

আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো ১২ শতাংশের বেশি সুদ আদায় করতে পারবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০২২
  • ১৮৫ Time View

ঋণের বিপরীতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১২ শতাংশের বেশি সুদ আদায় করতে পারবে না। যদিও ব্যাংকের সর্বোচ্চ সুদ নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ শতাংশ।

ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও ঋণের সর্বোচ্চ সুদ হার বেঁধে দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি আমানতের সর্বনিম্ন সুদ হার বেঁধে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গতকাল রোববার এই বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। তবে ব্যাংকের সর্বোচ্চ সুদ ৯ শতাংশ হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তা হবে আরও ৩ শতাংশ বেশি। কারণ, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণ দেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আমানত ও ঋণের সুদ হারের ব্যবধান হবে ৪ শতাংশ। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতের সুদ হবে ৮ শতাংশ ও ঋণের সুদ হার হবে ১২ শতাংশ। শিগগির এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পরিচালনা পর্ষদ সুদ হার বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার বিবেচনা করে হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে। শিগগিরই এটা করা হবে।’

২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে নতুন ও পুরোনো সব ধরনের ঋণে সুদ হার হয় ৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে মেয়াদি আমানতের সুদ হার গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম না হওয়ার শর্ত দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে আমানতের সর্বনিম্ন সুদ হার হয় প্রায় ৬ শতাংশ।

তবে অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা সুদ হার বেঁধে দেওয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়। সুদ হার বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। এখন উল্টো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুদ হার বেঁধে দিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের সুদ হার কমানোর জন্য আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক নানা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এরপরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ঋণের সুদ ২০ শতাংশ পর্যন্ত আদায় করছে। এখন দেশে ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে ১১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদ হার ছিল ১২ শতাংশের বেশি। ফলে নতুন সুদ হার কার্যকর করতে হলে তাদের সুদ কমাতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ফিনিক্স ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, হজ ফাইন্যান্স ও সিভিসি ফাইন্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণের সুদহার কমানোর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা সেটা না কওে উল্টো বেশি হাওে সুদ আদায় করছে। অনেক ক্ষেত্রে তা ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই কারণে সুদ হার বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জানা গেছে, আলোচিত পিকে হালদারের কারণে বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সংকট তৈরি হয়েছে। এই কারণে তারা বেশি সুদে টাকা ধার করছে, সেই টাকা আবার বেশি সুদে ঋণ দিচ্ছে। এর পাশাপাশি কিছু ভালো প্রতিষ্ঠানও বিভিন্ন ঋণ পণ্যের বেশি সুদ নিচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন সুদহার কার্যকর হলে সংকটে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা আরো খারাপ হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS