ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কেউ রিক্সাচালক, কেউ সবজি বিক্রেতা আবার কেউ গার্মেন্টস কর্মী। এসব নিম্ন আয়ের মানুষ গত সোমবার (২৩ অক্টোবর) ভৈরব থেকে ছেড়ে যাওয়া এগারো সিন্ধুর ট্রেনে করে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করেন। কিন্তু ভৈরব রেলস্টেশন আউটার সিগনালে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় এগারোসিন্ধুর ট্রেনের শেষের দুইটি বগি উল্টিয়ে যায়। এতে সতেরো জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়।
আহত রোগীদের অনেককে স্থানীয় বা পাশ্ববর্তী শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।গুরুত্বর আহতদের ঢাকায় পাঠানো হয়। আবার অনেককে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়ার পর রিলিজ দেয়া হয়।
দূর্ঘটনায় গুরুত্বর অবস্থায় আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে এমন খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ভৈরব এবং ঢাকার স্বেচ্ছাসেবীরা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে উপস্থিত হয়। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের রক্তদান থেকে শুরু করে রক্ত যোগাড়সহ অন্যান্য সহযোগীতা করেন তারা।
আহত অন্যান্য রোগীদের মত আহত অবস্থায় নিম্ন আয়ের ছয় জন রোগী ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়। এর মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেল, দুইজন পঙ্গু হাসপাতাল ও তিনজন চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে পঙ্গু হাসপাতালে থাকা দুইজন রোগী রিক্সাচালক, একজন রোগী সবজি বিক্রেতা। এছাড়া চক্ষু হাসপাতালে থাকা ছোট্ট শিশুর বাবা রিক্সাচালক ও মা গার্মেন্টসকর্মী। ছয় জন রোগীর মধ্যে চার জনের রোগীর আর্থিক অবস্থা ছিল বেশি অস্বচ্ছল।
আবার অনেক রোগীদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা হলে তারা জানান, দূর্ঘটনার দিন একজন রোগীর জন্য রক্তের ব্যাগ কেনার টাকা ছিলনা তার পরিবার এর কাছে। ধার করে টাকা এনে ব্যাগ কিনে রক্ত দেয়াতে হয়েছে রোগীকে।আরেকজন রোগীর প্রতিদিন ছয়শত এর বেশি টাকার ইনজেকশন এবং মলম লাগছে। যার ব্যয় ভার রিক্সাচালক রোগীর বহন করা সাধ্যের বাহিরে।
এসব কথা জানাচ্ছিলেন সিস্টারহুড (বাংলাদেশ) এর প্রতিষ্ঠাতা হালিমা তুজ্ স্নিগ্ধা।
এমতাবস্থায় সিস্টারহুড(বাংলাদেশ) এর পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয় আহতদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার। পরে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সিস্টারহুড (বাংলাদেশ )এর পক্ষ থেকে তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এছাড়া সম্মিলন ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা সামিউজ্জামান সুমন এবং ভৈরবের সিনিয়র সিটিজেন যারা ঢাকায় অবস্থান করছেন উনাদের পক্ষ থেকেও একই দিন আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
ট্রেন দূর্ঘটনার পুরো পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধারকাজ, রক্তদাতারা রক্ত দিয়ে এবং দাতারা আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন। তাই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা হালিমা তুজ স্নিগ্ধা এই দূঃসময়ে যারা সাহায্য সহযোগিতা করেছে তাদের সকলের প্রতি তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply