নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের উখিয়ায় সরকারি পাহাড় কাটার সময় ভোররাতে প্রাণ গেলো তিন শ্রমিকের। ঘটনাটি বুধবার(২৯ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে রাজাপালং ইউনিয়নের মুহুরীপাড়া এলাকায় ঘটে। নিহত তিনজনই রোহিঙ্গা বলে জানা যায়। নিহতরা হলেন কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্টের বি-১ ব্লকের সৈয়দ আকবর,ক্যাম্প-১ ডাব্লিউ সি-১৪ ব্লকের জাহিদ হোসেন ও ক্যাম্প-১৭ এর নুর কবির। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম চালায় উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম। দীর্ঘ চেষ্টার পর তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস।
উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইমদাদুল হক জানায়,বুধবার ভোরে পাহাড়ের মাটি চাপা পড়ে তিনজন নিহতের ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুহুরীপাড়ার টুনা মিস্ত্রির ভোগদখলীয় সরকারি জমিতে পাহাড় কাটার সময় এ দূর্ঘটনা ঘটে। তবে টুনা মিস্ত্রির পাহাড় হলেও মাটি নিয়ে ভরাট করছিলো এক আওয়ামী লীগ নেতা বলে জানা যায়। তবে নির্দিষ্ট কারো নাম মুখে নিতে অপারগতা জানায় স্থানীয়রা।
এ ঘটনার পর বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, সরকারি পাহাড় নিধনের অভিযোগ ছিলো টুনা মিস্ত্রি সহ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। তাদের ৬জনের নামে বিগতদিনেও মামলা দায়ের করেছিলো বনবিভাগ। পাহাড় কর্তনের দায়ে মামলা দায়ের করা ৬জন হলেন,মুহুরী পাড়ার নেছার আহমদ, মোহাম্মদ আলম,নুর মোহাম্মদ,ভুলু সওদাগর ও মাছকারিয়ার বিলের নুর মাঝি।
ঘটনার পরপরই নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে পালংখালী এলাকা থেকে অবৈধভাবে পাচার করা বালিভর্তি তিনটি ডাম্পার জব্দ ও একজনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব। সাথে ছিলেন উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম সহ বনবিভাগের কর্মকর্তারা। এদিকে, পাহাড় কাটার সময় তিনজন নিহতের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ইউএনও।
স্থানীয়রা জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা বেষ্টনী ও এপিবিএন পুলিশ থাকার পরেও লোকালয়ে চলে আসছে রোহিঙ্গারা। যারা এসব রোহিঙ্গাদের কম মজুরিতে কাজ করিয়ে নেওয়ার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানায় তারা।
ঘটনার ব্যাপারে উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, মুহুরী পাড়া এলাকায় পাহাড় কাটার সময় মাটি চাপা পড়ে তিনজন নিহত হয়। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply