নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির দশম দিন। সকল নাগরিকের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ জরুরী।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকাল ৫.০০ টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।
সমগ্র দেশ থেকে প্রতিদিনের মতো আজও কযেক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষক-কর্মচারিগণ বলেন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি শহর কেন্দ্রিক হওয়ায় অভিভাবকগণ সন্তানদের পড়পশুনার জন্য শহরে বাসা ভাড়া বসবাস করেন ফলে অভিভাবকগণের শিক্ষা ব্যয় হাতের নাগালের বাইরে।
যুগ্ম আহবায়ক প্রিন্সিপাল মুহম্মদ দেলাওয়ার হোসেন আজীজী মাদ্রাসার এবতেদায়ী মাথায় উপবৃত্তি চালুর দাবী জানান। রাষ্ট্র চলে জনগণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের টাকায়। জনগণ যেমন রাষ্ট্রকে যোগান দেয় তেমনি রাষ্ট্রও জনগণকে সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে। সকল জনগণের সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশীদারিত্ব থাকলেও সকল উন্নয়ন থেকে সকল জনগণ সুবিধা গ্রহণের প্রয়োজন হয় না।
শিক্ষা এমন একটি বিনিয়োগ ও উন্নয়ন পরিকল্পণা যা থেকে সকল জনগণ সমান সুযোগ পাবে এবং শিক্ষায় বৈষম্যের অবসান হবে। একই দেশে বাস করে একজনের সন্তান ২০টাকা মাসিক বেতন ব্যয়ে সরকারি স্কুলে পড়বে কিন্তু অন্যজনের সন্তান ২০০ টাকা মাসিক বেতনে পড়বে তা হতে পারে না। অন্যদিকে একই কর্ম ঘণ্টা, একই কাজ, একই সিলেবাস থেকে পড়িযে কেউ সরকারি শিক্ষক আবার কেউ বেসরকারি শিক্ষক। কেউ বাড়ি ভাড়া পায় মূল স্কেলের ৪৫-৬০% কেউ আবার নির্ধারীত এক হাজার টাকা।
সরকারি শিক্ষক হলে সন্তানের জন্য শিক্ষা ভাতা পাবে, বেসরকারি শিক্ষক হলে পাবে না। এ সকল বৈষম্য দূরীকরণের এক মাত্র উপায় সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক যোগে জাতীয়করণ করা। এতে শিক্ষার মান বাড়বে, প্রতিষ্ঠান থেকে পেশী শক্তি প্রভাব দূর হবে, প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি দূর হবে, অধিক মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতায় আসবে এবং টাকার অভাবে কোনো শিশু শিক্ষা গ্রহণ থেকে সরে গিয়ে শিশু শ্রমিক হবে না।
দেড় যুগ ধরে চালু হওয়া ১০০০ টাকা বাড়িভাড়া, ২৫% উৎসব ভাতা ও ৫০০ টাকার চিকিৎসা ভাতা পরিবর্তনেরও দাবি জানানো হয়। প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিলে কোন ভূর্তুকি বাতিরেকেই জাতীয়করণ সম্ভব এ বিষয়ে হিসাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রেরিত হয়েছে পাশাপাশি একটি জাতীয় কমিশন গঠন এর দাবি জানানো হয়। জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষনা না আসা পর্যন্ত প্রোজার দেড়ে শিক্ষক-কর্মচারিগণ যাবেন না এই মর্মে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
জোটের আহবায়ক অধ্যক্ষ মোঃ মাইন উদ্দিন এবং সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন আহমেদ দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয়করণের দাবিটি বিবেচনায় নিবেন নতুবা আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। গত নয় দিনে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী অনেক শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং অনেকে চিকিৎসা শেষে পুনরায় অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন।
সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষক-কর্মচারিগণের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাবেশিকফো যুগ্ম মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, মো. জহিরুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার, মতিউর রহমান দুলাল, আব্দুল হাই সিদ্দিকী, ইসমাঈল হোসেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক অনলাইন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুল রাসেল, বাসিশ মহাসচিব মেসবাহ উল ইসলাম প্রিন্স, জাতীয়করণ মঞ্চের সভাপতি আফজানুর রশীদ, বাবেশিকতো সহসভাপতি অধ্যক্ষ আফজাল তালুকদার, অধ্যক্ষ হক আবিদ, খন্দকার মো নূরুল আমীন, অধ্যক্ষ সৈয়দ এনামুল হক, ঝর্ণা বিশ্বাস, তোফায়েল সরকার, রুহুল আমীন, জ্যোতিৰ মজুমদার, সাজু সরকার, মোহাম্মদ গোলাম সাদেক, ইব্রাহিম খলিन, মোস্তফা কামান, ফরিদ উদ্দিন, মনিরুল ইসলাম, ইমরান হোসেন, আরেফিন সিদ্দিকী, মিজানুর রহমান, মোহসেন আলী, আশ্রাফুন্নাহার শিল্পী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাবেশিকতো যুগ্ম মহাসচিব রবিউল ইসলাম ও ইমরান হোসেন।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply