নিজস্ব প্রতিনিধিঃ এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন।
অবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও জাতীয় সংগীত এর মাধ্যমে কর্মসূচির শুরু হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্যে যুগ্ম আহবায়ক প্রিন্সিপাল দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সু-স্পষ্ট ঘোষণা ছিল, “শিক্ষার জন্য খরচ কোন ব্যয় নয় বরং ইহা উত্তম বিনিয়োগ।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত ও ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশে ১৯৭৩ সালে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছেন, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ৫০ টাকা থেকে ৭৫ টাকায় উন্নীত করেন এবং বেসরকারি কলেজের বেতন ১৫০ টাকায় উন্নীত করেন।
তাছাড়া প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের জন্য রেশনিং এর ব্যবস্থা করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে প্রায় ২৬ হাজার একশরও বেশী প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছেন । ২০১৮ খ্রি. এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিগণের বেতন ৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও বৈশাখী ভাতার ব্যবস্থা করেন । এরই ধারাবাহিকতায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ সময়ের দাবি।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণে প্রয়োজন শুধু সরকারের সদিচ্ছা ও সুষ্ঠু নীতিমালা। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ও টিউশন ফি বাবদ যা আয় হয় তার যথাযত ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলেই ভর্তুকী ব্যাতিরেকেই জাতীয়করণ সম্ভব। উপস্থিত শিক্ষক-কর্মচারিগণকে কর্মসূচি সফল করতে ধৈর্য সহকারে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থানের আহবান জানান।
গতকাল বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন মিয়া বলেন “স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিগণ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। তিনি জাতীয়করণে আন্দোলনের বীজ রোপন করে গিয়েছিলেন কিন্তু আজ পর্যন্ত জাতীয়করণ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। জাতীয়করণের ঘোষনা না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
অনান্য বক্তারা বলেন অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে শিক্ষক-কর্মচারিগণের নিকট থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০% হারে কেটে রাখলেও বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে এ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই। অনেক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারী টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। অধিকাংশ শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে চাকরি করেন তাদের জন্য বদলী ব্যবস্থা চালু অতীব জরুরি।
অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত নামমাত্র ১০০০ টাকা বাড়িভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা একজন শিক্ষক ২৫% উৎসব ভাতা পান। এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগ এনটিআরসিএ সুপারিশ করলেও নিয়োগ দিতে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির বাড়তি অর্থ গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ হলে সবচেয়ে বেশী লাভবান হবে গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠি। মেধাবীরা এ পেশায় আসবে ফলে স্বল্প খরচে সকল নাগরিক একই মানের মানসম্মত শিক্ষা পাবে, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া হাস পাবে, প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে থাকা হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারের নিয়ন্ত্রনে আসবে ফলে অপচয় ও দূর্ণীতি রোধ হবে। বিনিময়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক- কর্মচারিগণ চাকরির নিশ্চয়তা পাবেন। অভিভাবকগণের শিক্ষা ব্যয় অনেক কমবে, শিক্ষায় কাঙ্খিত পরিবর্তন আসবে।
বক্তব্য রাখেন বাবেশিকফো মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম, বাশিস সভাপতি ড. ইদ্রিস আলী,বাবেশিকফোর সহ সভাপতি ফয়েজ আহমেদ, অনলাইন শিক্ষক পরিষদের সভাপতি শাহ্ আলম, বাশিস সভাপতি তালুকদার আব্দুল মান্নাফ, জহিরুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার, বিপ্লব দাস, শেখ মো. জসীম উদ্দিন, মো. মতিউর রহমান দুলাল মেসবা উল আলম প্রিন্স, অরুপ সাহা, আফজালুর রশীদ, ইমরান হোসেন, জি এম শাওন, বেণী মধাব দেবনাথ, এনামুল ইসলাম মাসুদ, ফরিদ উদ্দিন, রেহান উদ্দিন, মোহাম্মদ গোলাম সাদেক, বাসেত আলী, মোহাম্মদ গোলাম ফারুকী, কামরুজ্জামান চৌধুরী, আবুল বাশার, মান্নান ভূঁইয়া, মীর তৈয়ব আলী, তোফায়েল সরকার, আবু হানিফ, মোস্তফা কামাল, রাকিবুল রাসেল, ঝর্ণা বিশ্বাস, ঊর্মি বড়ুয়া, মোহাম্মদ সেলিম, জসিম উদ্দিন, আব্দুল আলীম, মোখলেসুর রহমান, বসির উদ্দিন, ইব্রাহিম খলিল, ফজলুল হক আদি, লুৎফুর রহমান, আবুল বাসার নাদিম প্রমুখ।
কর্মসূচিতে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন। উপস্থিত শিক্ষক-কর্মচারিগণ জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষনা না আসা পর্যন্ত রাজপথে অবস্থানের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply