বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৫৬ অপরাহ্ন

র‌্যাব পরিচয়ে ৭১ লাখ টাকা লুট

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কেরাণীগঞ্জের কোনাখোলা এলাকায় গত ৩১ জানুয়ারি দুই সোনা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে র‌্যাব পরিচয়ে ৭১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল। এ ঘটনায় ডাকাত দলের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিদের এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান।

গ্রেফতাররা হলেন সুজন (৩৯), আলামিন ওরফে রেহান, কবির (৪৬), মিল্টন (৪৩), জাবেদ ওরফে সিরাজুল (৪০), নয়ন ওরফে বাবু (২৮), কামাল (৪৫) ও আ. রহমান ওরফে সাজ্জাদ (৪৫)।

পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানান,  গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা-নবাবগঞ্জ ও ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে সক্রিয় একাধিক ডাকাত চক্র। ডাকাতরা র‌্যাব পরিচয়ে ঢাকা-নবাবগঞ্জ রোড এবং ঢাকা-মাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যাতায়াতকারী বাস থামিয়ে ব্যবসায়ীদের জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। তাদের মূল টার্গেট ছিল সোনা ব্যবসায়ীরা।

চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি দুপুরে দোহারের সোনা ব্যবসায়ী নাহিদ ও খোকন সোনা বিক্রি করার জন্য ঢাকার তাঁতীবাজারে যায়। সোনা বিক্রি শেষে নাহিদ ৪০ লাখ টাকা ও খোকন ৩১ লাখ টাকা সঙ্গে নিয়ে দোহারের উদ্দেশে নবকলি বাসে উঠে। বাসটি কেরাণীগঞ্জের কোনাখোলা এলাকায় পৌঁছালে একটি সাদা মাইক্রোবাস বাসটিকে থামায়। র‌্যাবের পোশাক পরা ৫ জন বাসে প্রবেশ করে যাত্রীদের জানায়, বাসটিতে দুইজন আসামি আছে।

পরে বাসে থাকা স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাহিদ ও খোকনকে তারা অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগসহ জোর করে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তোলে। সত্যিকার র‌্যাব সদস্য কিনা জানতে চাইলে দুই স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বেধড়ক পেটানো হয়। তাদের সঙ্গে থাকা ৭১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে নির্জন এলাকায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে যায় কথিত র‌্যাব।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী দুজন বাদী হয়ে মামলা করে। এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে র‌্যাব পরিচয়ে ডাকাতি করা দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের সন্ধান পায় ঢাকা জেলার পুলিশ। কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন কবীর, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মামুন-অর রশিদের সমন্বয়ে গঠিত আভিযানিক দল কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ এবং ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করে।

ভুক্তভোগীরা জানায়, বাস থেকে নামিয়ে তাদেরকে একাট মাইক্রোবাসে তোলা হয়। এসময় র‌্যাবের আইাডকার্ড দেখতে চাইলে তাদের মারধর করা হয়। পরে তাদের কাছে থাকা ৭১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাদের পাশের জঙ্গলে ফেলে রাখা হয়।

আসাদুজ্জামান আরও জানান, এই ডাকাত চক্রটির বেশিরভাগ সদস্য রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ডাকাতির টাকা তারা খরচ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে।

গ্রেফতার সুজন মন্ডল কোতোয়ালি থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক, মিল্টন ও জাবেদ দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার যুগ্মসাধারণ সম্পাদক। আলামিন ও সুজন মন্ডলের বিরুদ্ধে এর আগে চারটি, কবির হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা-মাওয়া এবং ঢাকা নবাবগঞ্জ সড়কে কিছু ব্ল্যাক স্পট চিহ্নিত করেছে পুলিশ যেখানে ডাকাতির ঘটনা বেশি হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁতীবাজারে আসা সোনা ব্যবসায়ীরাই ডাকাত দলটির মূল টার্গেট বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS