শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৬ অপরাহ্ন

চুনারুঘাটে আশ্রয়ণের বাসিন্দারা দখল আর মামলায় অতিষ্ঠ হয়ে এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত

লিটন পাঠান,
  • আপডেট : শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৩

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার খেতামারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। দুই বছরেও ঘর গুলোতে দেওয়া হয়নি বিদ্যুৎ সংযোগ। রাস্তা এবং কালভার্ট না থাকায় বর্ষাকালে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদেরকে। এছাড়া প্রভাব বিস্তার, দুইপক্ষের মামলা চালাচালিসহ বহিরাগতদের উৎপাতে অতিষ্ঠ তারা বরাদ্দপ্রাপ্তদের অধিকাংশই ছেড়ে গেছেন আবাসন সেই সাথে আছে অন্যের কাছে ঘর ভাড়া দেয়া ও বিক্রির অভিযোগও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খেতামারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১২০টি ঘরের মধ্যে ৫০টি ঘরের দরজাতে তালা লাগানো সেখানকার বাসিন্দারা জানান, এই ঘরগুলো বরাদ্দ পাওয়ার পর কেউ কেউ একদিনের জন্যও এখানে আসেনি। আর বাকিরা অল্প কিছুদিন থাকলেও বিদ্যুৎ না থাকা, চলাচলের অসুবিধা এবং মামলা-হামলার ভয়ে ছেড়ে গেছেন আশ্রয়ণ। যারা আছেন তাদের কেউ কেউ একাই দখলে নিয়েছেন একাধিক ঘর। কেউ আবার নিজের বরাদ্দের ঘর ছেড়ে দখলে নিয়েছেন অন্যের ঘর।

আশ্রয়ণের ৬ নম্বর ঘরের বাসিন্দা জাহিদুল হক জানান এখানে রাস্তার অসুবিধা। তাছাড়া দুটি নালাও (খাল) আছে বর্ষাকালে এখান দিয়ে আসা-যাওয়া করা যায় না এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় গরমকালে খুব কষ্ট করে থাকা লাগে। এ কারণে সবাই এখানে থাকে না ২৪ নম্বর ঘরের বাসিন্দা রফিকুন্নেছা অভিযোগ করেন, ২০ নম্বর ঘরের বাসিন্দা আব্দুল খালেক ২টি ঘর দখলে নিয়েছেন তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ তারা। তার পরিবারের সদস্যদেরকে এ পর্যন্ত ৪টি মামলাতে জড়িয়েছে খালেক ফয়সল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তিও জানান, খালেক মিয়া অকারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদেরকে হেনস্তা করছেন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০ নম্বর ঘরের বাসিন্দা আব্দুল খালেকের চুনারুঘাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ শতাংশ জমি রয়েছে মামলার বিষয়ে আব্দুল খালেক বলেন, আমি কাউকে হয়রানি করার জন্য মামলা করিনি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমি মামলা দায়ের করেছি।

নিজের জমি থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আব্দুল খালেক বলেন আমার এবং আমার স্ত্রীর পেনশনের টাকা দিয়ে ৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেছিলাম। এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। এটি আমি ভোগ করতে পারছি না তিনি জানান, ২ বছর ধরে আশ্রয়ণে থাকলেও এখন পর্যন্ত বন্দোবস্ত পাননি বাসিন্দারা জানা যায়, রমিজ মিয়া, আহাদ মিয়া এবং মদরিছ মিয়া নামে আপন তিন ভাইয়ের আশ্রয়ণে কোনো ঘর বরাদ্দ না থাকলেও তারা ৩টি ঘর দখলে নিয়ে বসবাস করছেন। আশ্রয়ণের অল্প দূরেই রয়েছে তাদের আধাপাকা বাড়ি এ বিষয়ে রমিজ মিয়া বলেন, আমার বাবার সম্পত্তি থেকে আমরা তিন ভাই প্রত্যেকে ১ শতাংশ করে মোট ৩ শতাংশ জমি পেয়েছি, যা আমাদের ৩ জনের জন্য পর্যাপ্ত না। তাই আমার মায়ের নামে ১টি ঘর বরাদ্দ নিয়ে আশ্রয়ণে থাকছি ৯ নম্বর গাজিপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তারেকুর রহমান তুষার বলেন

এখানে অধিকাংশ গরিব মানুষই আসে থাকার জন্য কিন্তু কতিপয় ব্যক্তির অত্যাচারে আশ্রয়ণ ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে অনেকে। এছাড়া এখানে কালভার্ট ও বিদ্যুৎ না থাকায় আশ্রয়ণ ছেড়ে গেছেন অনেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুনারুঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ কথা বলতে রাজি হননি। বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এমপি বলেন, আমি আজই জিএমের সাথে কথা বলবো যাতে দ্রুততম সময়ের মাঝে সেখানে (আশ্রয়ণ) বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া আমি কিছুদিন আগে সেখানে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীকে পাঠিয়েছিলাম দেখে আসার জন্য। সেখানে একটি স্কুলও আছে। বলেছি এই রাস্তাটি জরুরি ভিত্তিতে পাকা করতে উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের খেতামারা গ্রামে প্রায় ৫ একর জমির উপর ২৪টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়।

সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের ৩৬০ পদাতিক ব্রিগেডের ১৩ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট এসব ব্যারাক নির্মাণ করে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি উপজেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে। প্রতিটি ব্যারাকে ৫টি করে ২৪টি ব্যারাকে ১২০টি ঘর, বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য প্রত্যেকটি ব্যারাকের জন্য আলাদা আলাদা টয়লেট ও ব্যারাক প্রতি দুটি টিউবওয়েল নির্মাণ করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS