মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

পাটগ্রামে ব্লক তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ, এলাকাবাসীর বাধায় কাজ বন্ধ

রেজাউল ইসলাম
  • আপডেট : বুধবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৩

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা নদীতে” সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষন ও উন্নয়ন প্রকল্প “কাজে ব্যবহারের জন্য নিম্নমানের ব্লক তৈরির অভিযোগ তুলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর বাধার মুখে ওই কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।

 গত বুধবার বেলা ৯টায় এলাকাবাসীর তীব্র বাধায় ব্লক তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

লালমনিরহাট পাউবো সূত্র জানায়, পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙন প্রতিরোধে পাউবোর অধীনে কাজ পেয়েছে নাটোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেভি সেহা – ইউবি । ওই এলাকার আদশ্যপাড়া থেকে নদীর আট শত পচিশ মিটার পর্যন্ত ( প্রায় এক কিলোমিটার) ওই  ব্লক ফেলা হবে। কাজের প্রাক্কলিত মূল্য তেরো কোটি পঁচিশ লক্ষ চল্লিশ হাজার দুইশত ছয় টাকা ।

আজ বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, নদী থেকে বালু তুলে রাখা হয়েছে। এর পাশে রয়েছে ধুলামাটি মিশ্রিত ছোট-বড় পাথর।  নদী থেকে ভেকু দিয়ে তুলে রাখা বালু দিয়েই চলছিলো ব্লক তৈরী। কাজ বন্ধ করে দেয়ায় ঠিকাদারের লোকজন কাজ বন্ধ রেখে অলস সময় কাটাচ্ছেন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, গত ২০ শে সেপ্টেম্বর থেকে ওই নদীর তীর রক্ষায় ব্লক তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু ব্লক নির্মাণে নদীর মাটি মিশ্রিত বালু, নিম্নমানের পাথর ও কম পরিমাণে সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ব্লক নদীর তীরে ব্যবহার করামাত্রই নষ্ট হয়ে যাবে।ওই গ্রামের রুহুল আমিনের অভিযোগ, ‘ব্লকগুলো তৈরিতে সাত ভাগ বালু, এক ভাগ পাথর ও সামান্য পরিমাণে সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি সারা দেশে অনেক ঠিকাদারের অধীনে কাজ দেখেছি। কিন্তু এত নিম্নমানের কাজ কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। 

এ কারণে আমরা এলাকাবাসী  আজ বুধবার ঠিকাদারের লোকজনকে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি।’

ওই গ্রামের বাবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘ডোল ভর্তি করি বালা (বালু), অল্প করি পাতর (পাথর), আর স্যালকে একনা সেমেট (সিমেন্ট) দিয়া বোলোক (ব্লক) বানাওচে। এইগলাতো নদীত দেলে কিছুদিন পর এমনি ভাঙ্গি, গলি যাইবে।’

ওই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি সাফিউল ইসলাম বাবলু  বলেন, কতটুকু বালু, সিমেন্ট ও পাথর দিয়ে ব্লক তৈরি করার সরকারি নিয়ম আছে, সেই কাগজ না দেখানো পর্যন্ত তাঁরা ঠিকাদারকে আর কাজ করতে দেবেন না।

জানতে চাইলে ঠিকাদারের ব্যবস্থাপক সোহেল হোসেন বলেন, ‘আমরা সঠিকভাবেই ব্লক তৈরি করেছি। তারপরও এলাকার শতাধিক লোক এসে ব্লক তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

কাজ শুরু থেকে এ পযন্ত প্রায় আট হাজার ব্লক তৈরি করা হয়েছে।’

নাম প্রকাশ না করে ঠিকাদারের প্রধান মিস্ত্রি বলেন, বিধিমোতাবেক প্রতিটি ব্লক তৈরিতে পাঁচ কড়াই পাথর, এক কড়াই সিমেন্ট ও তিন কড়াই বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ব্লক তৈরিতে ওই নদীর বালু ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেন তিনি। 

দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন,সরকারের উন্নয়ন কাজ যথাসময়ে শেষ করতে হবে তাই বলে ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করবে তাও হবে না। ব্লক তৈরিতে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। দ্রুত ঠিকাদারের প্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বিষয়টির সমাধান করা হবে । 

সংশ্লিষ্ট পাউবোর কার্য সহকারী রমজান আলী নিম্নমানের ব্লক তৈরির অভিযোগ সঠিক না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন বুয়েটে এসব ব্লক পরীক্ষা করার পর কাজের বিল ছাড় দেওয়া হবে। 

তিনি দাবী করেন বালু পরীক্ষার পড়েই নদীর বালু দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যেহুতু ঠিকাদার বার বার পরিবর্তন হচ্ছে তাই এ ঠিকাদার দিয়েই আমাদের কাজ শেষ করতে হবে। নিম্নমানের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS