মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন

রেস্টুরেন্ট-গ্রাহক দু’পক্ষকেই ঠকাচ্ছে ফুডপান্ডা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২৩

অনলাইনে খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে ওজন ও দরে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহক যে পরিমাণ খাবার অর্ডার করেছেন তার অর্ধেকেরও কম পরিমাণ গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো হয়েছে। একইসঙ্গে অ্যাপে খাবারের দাম যা দেখানো হয়েছে তার থেকে বেশি অর্থও আদায় করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও যে প্রতিষ্ঠান থেকে খাবার সরবরাহ করা হয়, সেখান থেকেও ৪০ শতাংশের বেশি কমিশন নেয় ফুডপান্ডা।

সম্প্রতি মুহিবুল্লাহ মুহিব নামে একজন গ্রাহক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফুডপান্ডার অনিয়ম তুলে ধরে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন। ভিডিওতে তিনি জানান, ফুডপান্ডায় তিনি ৫০০ গ্রাম বিফ শাহী হালিম অর্ডার করেন। বিপরীতে তিনি পেয়েছেন ২০০ গ্রাম হালিম। অর্ডারের সময় ৫০০ গ্রাম হালিমের দাম ২৫২ টাকা প্রদর্শন করা হলেও আদায় করা হয়েছে ২৮০ টাকা। একইভাবে মোগলাইয়ের দাম ৯০ টাকা দেখিয়ে আদায় করা হয়েছে ১০০ টাকা করে।

মুহিবুল্লাহ মুহিবকে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে মিরপুরের আবেশ হোটেল অ্যান্ড বিরিয়ানী হাউজ থেকে। মুহিব জানান, তিনি ওই হোটেলে যোগাযোগ করলে তাঁরা তাকে নিশ্চিত করেছেন, হোটেল থেকে পাঠানো বক্সটি ২৫০ গ্রাম ওজনের।

আবেশ হোটেলের পরিচালক মো. সুমন মিয়া অর্থসংবাদকে বলেন, যখন অর্ডারটি ডেলিভারি দেওয়া হয়, তখন আমি দোকানে ছিলাম না। আমার স্টাফ ভুল করে ২৫০ গ্রাম ওজনের হালিম ডেলিভারি করেছে। পরবর্তীতে আমরা আবার ৫০০ গ্রাম হালিম পাঠিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ফুডপান্ডা আমাদের থেকে যেসব খাবার নেয় সেগুলোতে আমরা ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দিই।

এদিকে ফুডপান্ডা যে হালিমের (৫০০ গ্রাম) দাম ২৮০ টাকা বিল করেছে, সেটি আবেশ হোটেলে বিক্রি হয় ২০০ টাকায়। আর যে মোগলাই ১০০ টাকা করে বিল করেছে সেটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আবার এই বিলের সঙ্গে ডেলিভারি ও সার্ভিস চার্জ আলাদাভাবে আদায় করছে প্রতিষ্ঠানটি।

গ্রাহক

ভুক্তভোগী মুহিব উল্যাহ অর্থসংবাদকে বলেন, হোটেল থেকে পুনরায় হালিম পাঠানো হয়েছে। পাঠানোটা জরুরি না। ওরা সম্পূর্ণ প্রতারণা করছে। ফুডপান্ডাও করছে। ফুডপান্ডার দায়িত্ব হচ্ছে অর্ডার অনুযায়ী পণ্য ডেলিভারি দিবে। কিন্তু আসলে ভেতরে কি আছে, না আছে সেটি দেখে না। জাস্ট দিয়ে চলে যায়। ওরা (ফুডপান্ডা) কোন কথা শুনতেও চায় না।

তিনি বলেন, আবেশ হোটেল প্রায়ই এটা করে থাকে। আমি মেপে দেখার কারণে বিষয়টি ধরা পড়ছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফুডপান্ডা বাংলাদেশের সিইও আম্বারিন রেজা বলেন, ফুডপান্ডা একটি গ্লোবাল কোম্পানি। আমাদের নির্দিষ্ট পলিসি আছে, সেগুলো মেন্টেইন করতে হয়। এসব বিষয়ের জন্য আমাদের পিআর ফার্ম আছে। পিআর হেডকে ফোন করলে ভালো হয়। যে কোন সংবাদমাধ্যম থেকে পিআর সেকশনে যোগাযোগ করলে অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

তবে পিআর ফার্মের যোগাযোগের নম্বর চাইলে তাৎক্ষনিকভাবে দিতে পারেননি ফুডপান্ডা সিইও।

ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। আগে থেকেই খাবার মিসিং, কম দেওয়া বা একটার বদলে আরেকটা খাবার দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশও হয়েছে।

২০২১ সালে পেটুক কাপল নামের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিওর মাধ্যমে অভিযোগ জানানো হয়, ফুডপান্ডা থেকে খিচুড়ি আর কাচ্ছির রাইস অর্ডার করে তারা পেয়েছেন কাচ্ছির রাইস আর রোস্ট। খিচুড়ির জায়গায় কেন রোস্ট দেওয়া হলো এমন অভিযোগ করা হলে ফুডপান্ডার হেল্পলাইন থেকে ৫৩ টাকার একটি ভাউচার দেওয়া হয়। ভাউচারের পরিবর্তে খিচুড়ি চাইলে প্রায় তিন ঘণ্টা চ্যাটিং হেল্পলাইনের সময়ক্ষেপণ করেও সমাধান দেওয়া হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS