সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

গাইবান্ধার নির্বাচনই প্রমাণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, গাইবান্ধার উপ-নির্বাচনে মাঠে কর্মরত নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা লিখিত দিয়েছেন ভোট সুষ্ঠু হয়েছে, কোনো গন্ডগোল হয়নি। আর পাঁচশ কিলোমিটার দূরে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নির্বাচন কমিশন পুরো উপ-নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছে। জনগণই বলছে, কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এটিও প্রমাণিত হয়েছে যে, নির্বাচন সবসময় নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়, তাদের সিদ্ধান্তই সবাই ওপরে, সরকারের সেখানে ভূমিকা নেই। ফলে বিএনপিসহ কেউ কেউ যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার প্রভৃতি নানা ধরনের সরকারের ফর্মুলা দেয়, এসবের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে গাইবান্ধার উপ-নির্বাচনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বা মন্ত্রী হিসেবে নয়, সেখানকার ভোটার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টকশোতে আমি যা দেখেছি-শুনেছি, তা থেকে মনে হচ্ছে সাধারণ জনগণ তাদের এই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছে। কারণ নির্বাচনী এলাকার কোথাও কোনো ধরনের গন্ডগোল হয়নি। এ ছাড়া কোনো পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ ছিল না। আর নির্বাচন কমিশন পাঁচশ কিলোমিটার দূরে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নির্বাচন বাতিলের সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

এ সময় তিনি প্রিজাইডিং অফিসারদের লিখিত রিপোর্টের কপি উপস্থাপন করে বলেন, যেখানে নির্বাচন কমিশন এই কথাগুলো বলছে, সেখানে আমার কাছে ৯৮টি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের লিখিত রিপোর্ট আছে যে, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে, কোনো গন্ডগোল হয়নি। রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে ভোট বন্ধ হয়েছে।

যুক্তি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, হু ইজ অন দ্য গ্রাউন্ড, প্রিজাইডিং অফিসার ইজ অন দ্য গ্রাউন্ড। তারা লিখিত দিয়েছেন ভোট সুষ্ঠু, অবাধ ও স্বচ্ছ হয়েছে। আর এখানে পাঁচশ কিলোমিটার দূরে বসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ভোট যখন বন্ধ করা হলো, মানুষ এতে শুধু হতবাক হয়নি, মানুষ বলছে, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত প্রশ্নবোধক। তা আমি বলছি না, আমার দলও বলছে না। সেখানে আমাদের প্রার্থী এবং প্রার্থীর সমর্থকরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ঢাকা থেকে পাঁচশ কিলোমিটার দূরের ক্যামেরার রেজুলেশন কেমন ছিল, ইন্টারনেট সংযোগ কেমন ছিল, সেটি বড় প্রশ্ন- উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটি একটি দুর্গম এলাকা। সেখান থেকে সিসি ক্যামেরা কতটুকু স্বচ্ছ বা কারেক্ট ফুটেজ দিচ্ছিল সেটি একটি বড় প্রশ্ন। বোদ্ধাজনেরা বলছেন, সেখানে একজন বৃদ্ধ লোককে আরেকজন হাঁটতে সাহায্য করছে, পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারদের জন্য কেউ চা এনেছে, পানি এনেছে, কেউ প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে গেছে, আবার ঢুকেছে। নির্বাচন কমিশন যে বলছে সেখানে কোনো কোনো কেন্দ্রে তারা ভোটারের বাইরে লোক দেখতে পেয়েছে। ইন্টারনেট রেজুলেশন যেখানে আপ-ডাউন করে, সেখানে পাঁচশ কিলোমিটার দূরে বসে ঠিকভাবে মানুষ চিহ্নিত করা সম্ভব কি না, প্রশ্ন রেখেছেন বোদ্ধাজনেরা।

৫৩ কেন্দ্রের বিষয়ে অভিযোগে পুরো নির্বাচন বাতিল হওয়া যৌক্তিক কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেছে ৫৩টি কেন্দ্রে তারা এ ধরনের ঘটনা দেখেছে। ৫৩টি কেন্দ্র মানে ১৪৫টি কেন্দ্রের এক তৃতীয়াংশ। আমাদের প্রার্থীও প্রশ্ন রেখেছেন, সেই ৫৩টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত বা বাতিল হতে পারতো। বাকি কেন্দ্রের ভোট কেন বাতিল হলো? কমিশনের মতে অন্য কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, নির্বাচন কমিশনেরও কোনো আপত্তি নেই। তাহলে অন্য কেন্দ্রের ভোট কেন স্থগিত হলো, মানুষের কাছে সেটিও একটি বড় প্রশ্ন।

বুধবার চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, এই সমাবেশ করার আগে বিএনপি হাঁকডাক দিয়েছিল যে, লাখ লাখ মানুষ হবে এবং চট্টগ্রাম শহরে জনজোয়ার তৈরি হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পলোগ্রাউন্ডের এক তৃতীয়াংশও পূর্ণ হয়নি। আমাদের ছেলেবেলায় পলোগ্রাউন্ডে মাঝে মধ্যে ভ্যারাইটি শো হতো। ভ্যারাইটির শোর সময় যতো লোক হতো, গতকাল তাদের সমাবেশে তার চেয়ে একটু বেশি হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ যে তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি সেটির প্রমাণ হলো, সেখানে তাদের কর্মীরাও আসেননি। গতকাল তাদের সমাবেশে কেউ বাধা সৃষ্টি করেনি। নির্বিঘ্নে তারা নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রামগড়, কক্সবাজার একশ-দেড়শ কিলোমিটার দূর থেকে সবাই এসেছেন। এরপরও পলোগ্রাউন্ড মাঠের এক তৃতীয়াংশ পূর্ণ হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS