সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০১:৩০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

ভোটপ্রতি মোটরসাইকেল অথবা এক লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধা জেলা পরিষদ নির্বাচন-

এক ভোটের বিনিময়ে ইউপি চেয়ারম্যানরা পাচ্ছেন মোটরসাইকেল। আর অন্য ভোটাররা পাচ্ছেন ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। এ তথ্য দিয়েছেন গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগ, সিপিবিসহ নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীরা।

সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা মিহির ঘোষ বলেন, জেলা পরিষদের ভোটকে সামনে রেখে টাকা উড়ছে গাইবান্ধায়।গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, প্রার্থী হয়েছেন ২ জন। একজন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক ও অন্যজন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আতাউর রহমান আতা। তাদের মধ্যে জাপার প্রার্থীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির আরেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি আব্দুর রশিদ সরকার। এই ভোটের মাঠে এই জঘন্য খেলা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা জাপা প্রার্থীর পেছন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। কারণ তিনি জাতীয় পার্টির নাম ভাঙিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করেন।

জেলা পরিষদ থেকে নামে বেনামে মন্দির, মসজিদ, কবরস্থানসহ বিভিন্ন অনুদান দেখিয়ে টাকা কামিয়েছেন। সেই কালো টাকা তিনি এবার ভোটের মাঠে খরচ করছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় প্রার্থী হলেও তিনি শূন্য হাতে মাঠে নেমেছেন। টাকা দিয়ে ভোট কিনতে হবে এমন কথা আওয়ামী লীগের আমলে হবে না। তার শক্তি দল। দলের নেতাকর্মী ও চেয়ারম্যান মেম্বাররা তাকে সামনে নিয়ে আসবেন। তার জন্য দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশ পালন করছেন আওয়ামী লীগের শহর থেকে শুরু করে মাঠের কর্মীরাও।

গাইবান্ধার ৭ উপজেলা সাঘাটা, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ সাদুল্লাপুর ও গাইবান্ধা সদরসহ ৭ উপজেলায় ১৯২৪ জন জনপ্রতিনিধি এই ভোটে অংশ নেবেন। গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফরহাদ আব্দুল্লাহ হারুন বাবলু বলেন, জাপা নেতা আতাউর রহমান টাকা দিয়ে ভোট কিনে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। তিনি অন্তত ২০ কোটি টাকা দিয়ে ভোট কিনে চেয়ারম্যান হয়েছেন। এই টাকাও তিনি জেলা পরিষদ থেকে তুলে নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকে অনেক অভিযোগ। তদন্ত হয় কিন্তু প্রতিকার হয় না।

কামারজানি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, গেলো বার ভোটে আতা চেয়ারম্যান আমাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন। শুনেছি এবার কাউকে মোটরসাইকেল, কাউকে ১ লাখ টাকা নগদ দিচ্ছেন। তবু তার চেয়ারম্যান হওয়া চাই। জেলা পরিষদের আওতায় সাত কেন্দ্রে যারা ভোট দেবেন, তারা ভাগ্যবান। তাদের পকেটে ঢুকছে মোটা অঙ্কের টাকা।

জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাপার কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, প্রায় ২ হাজার জনপ্রতিনিধি ভোটাররাও ঘাপটি মেরে বসে আছেন। তাদের ভোটের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে।

আতাউর রহমান আতা বলেন, আমি তো আর এমনি এমনি চেয়ারম্যান হই না। আমার যোগ্যতা আছে বলেই দুইবার ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। আগামী ১৭ই অক্টোবর খেলা হবে খেলা। কারণ আমি দীর্ঘদিন গাইবান্ধার উন্নয়নের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের ম্যানেজ করেছি। তাদের চাহিদা পূরণ করেছি। তারা আমাকে ভোট দিবে না কেন? আমি নিশ্চিত এবারো আমি চেয়ারম্যান হবো।

আওয়ামী লীগ মনোনীত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এক সময় জাতীয় পার্টির প্রভাব ছিল, কিন্তু এখন জাপার দু’একজন নেতা ছাড়া মাঠে তাদের কোনো নাম নেই। তাছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আতাউর রহমান আতা ভোটারদের ভোট নিতে কাউকে মোটরসাইকেল দিচ্ছেন আর কাউকে দিচ্ছেন টাকা। টাকার প্রভাব কিছুটা পড়লেও আমাকে ভোটে হারানোর মতো ক্ষমতা তার নেই। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ভোট চুরি, জালিয়াতি, ভোট কেনাবেচায় বিশ্বাসী নয়। আওয়ামী লীগের ইমেজেই আমি বিজয়ী হবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS