সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়ায় মাথাভাঙ্গা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন অব্যাহত, নদীভাঙনের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া বাজারসংলগ্ন মাথাভাঙ্গা নদী থেকে প্রকাশ্যে চোষা মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী চক্র। উপজেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দিনের আলোয় এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এতে নদীভাঙনের আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঈদগাহ ময়দান উন্নয়নের নামে বালু উত্তোলন শুরু করলেও তা এখন বানিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নদীর পাড় থেকে তুলে নেয়া বালু ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন নির্মাণস্থলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সরোয়ার হোসেন লাড্ডু সম্প্রতি ভাংবাড়িয়া ঈদগাহ ময়দানের উন্নয়নকাজের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছ থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকার বরাদ্দ পান। উন্নয়নের সেই বরাদ্দকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বালু উত্তোলন। স্থানীয়দের দাবি, প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, “আমরা শুরুতে আপত্তি করেছিলাম। কিন্তু এরপর রাজনৈতিক চাপ আসে। একদিন প্রশাসন এসে বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু আবার শুরু হয়েছে। এখন অভিযোগ করলেই উল্টো হুমকি আসে।”

নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, বর্ষা মৌসুম সামনে। এই সময় নদীতে পানি বাড়বে এবং স্রোত থাকবে তীব্র। আর তখন নদীর গভীর তলদেশ থেকে উত্তোলিত বালুর কারণে দুপাড় ভেঙে বসতভিটা, ফসলি জমি ও স্থানীয় রাস্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে।

পরিবেশকর্মীরা বলছেন, এভাবে খোলা নদী থেকে বালু তোলা বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দিনেদুপুরে অবাধে এ কার্যক্রম চলায় আশঙ্কাজনক পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।

বালু উত্তোলনে জড়িত মেশিন মালিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “ঈদগাহ ময়দান ভরাটের জন্যই বালু তোলা হচ্ছে। বিএনপি ও ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে অবগত আছেন। ডিসি ও ইউএনও মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন।”

তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেহেদি ইসলাম বলেন, “ভাংবাড়িয়া এলাকার মাথাভাঙ্গা নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি জানি না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে সরোয়ার হোসেন লাড্ডুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

এলাকাবাসী ও সচেতন মহল বলছে, অবিলম্বে কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপ না নিলে মাথাভাঙ্গা নদীপাড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায় শুধু জনজীবন নয়, পরিবেশ ও কৃষিজমিও হুমকির মুখে পড়বে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS