মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান এক সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর ফলে আন্তঃব্যাংক ও রেমিট্যান্স বাজারে ডলারের দাম কমেছে ২ টাকা ৯০ পয়সা। ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলারের চাহিদা কমে যাওয়া এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বেড়ে যাওয়াই দরপতনের মূল কারণ।
গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বেশ কয়েকটি ব্যাংক রেমিট্যান্সের ডলারের জন্য সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত রেট দেয়। কেউ কেউ ১২০ টাকা ৬০ পয়সায় প্রতি ডলার কিনলেও বেশিরভাগ ব্যাংক দিন শেষে ১২০ টাকার বেশি দিতে চায়নি। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও এই দর ছিল ১২২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ৯০ পয়সা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এখন আর আগের মতো ডলারের চাহিদা নেই। বরং অনেক ব্যাংক এখন হাতে থাকা ডলার বিক্রি করে দিতে চাইছে। আমদানি এলসির চাপ কমে যাওয়া এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি থেকে নিয়মিত আয় আসার কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে মাত্র দুই কার্যদিবসে ডলারের দর ১২৮ টাকায় উঠে গিয়েছিল। তখন বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। গভর্নর তখন অভিযোগ করেছিলেন, কিছু ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউস কৃত্রিমভাবে ডলারের দাম বাড়াচ্ছিল।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজারে ডলারের জোগান বাড়লে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমে এবং আমদানির খরচও হ্রাস পায়। আগে যেখানে ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে হিমশিম খেত, এখন সেই সমস্যা আর নেই।
রেমিট্যান্স প্রবাহেও দেখা দিয়েছে ইতিবাচক পরিবর্তন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন রেকর্ড ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছর প্রতি মাসেই এসেছে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এমনকি এক মাসে ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বিপরীতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, বর্তমান গভর্নরের নির্দেশনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বাজার থেকে ডলার কিনে আমদানি বিল পরিশোধ করেছে। ফলে তাদের আর ব্যাকলগ নেই। এখন রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় ভালো থাকায় ডলারের জোগান স্বাভাবিক। তাই দর আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত মে মাসে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক শর্ত ছিল। এই নীতির পর থেকেই ধাপে ধাপে ডলারের দাম কমতে শুরু করে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply