জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক দেশব্যাপী গত ১৮-২০ আগস্ট ২০২২ তারিখে ডিম ও ব্রয়লার মুরণিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সংক্রান্ত বাজার তদারকি করা হয়। বাজার তদারকিতে প্রাপ্ত পর্যবেক্ষনসমূহ।
নিম্নরূপ:
১। প্রয়োজনীয় রশিদ, কাগজপত্র তথ্য প্রমাণাদিবিহীন ডিম ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।
২। ডিমের ক্রয়মূল্য যাই হোক না কেন ডিম ব্যবসায়ী সমিতিগুলো মোবাইল ফোনে মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে রাজার অস্থিতিশীল করে তুলেছেন।
৩। গত ৯ আগস্ট থেকে ডিমের মূল্য অস্থিতিশীল হতে শুরু করে এবং গত ১৩ আগস্ট সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে সারা দেশে ডিমের মূল্য বৃদ্ধি পায়। ৪। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ডিম প্রতি পরিবহন ব্যয় ০৩ হতে ০৪ পয়সা বেড়েছে যার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা ডিম প্রতি নাম বাড়িয়েছে ২.৭০ টাকা। ৫। ডিম ব্যবসায়ীরা ক্রয়-বিক্রয় রশিদ সংরক্ষণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় ভোক্তা সাধারণ প্রতারিত হচ্ছেন।
৪। অর্গানিক ডিমের মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে নিজেই ডিমের গায়ে সিল দিয়ে বেশি মূল্যে সাধারণ ডিম বিক্রয় হতে দেখা যায়।
৫। ডিম উৎপাদনকারী বড় ফার্মগুলো কমিশন এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে মূল্য কারসাজি এবং নিলাম প্রক্রিয়ায় নিজেদের নিয়োগকৃত এজেন্ট ব্যবহার করে মূল্য বাড়িয়েছেন।
৬। কোন কোন ব্যবসায়ী নিজেদের মধ্যে ভূয়া কেনাবেচা দেখিয়ে (ভূয়া রশিদ সংরক্ষণ) লাইভ চিকেনের মূল বাড়িয়েছেন।
৭। ডিম ও লাইভ চিকেনের ক্ষেত্রে মূল্য কারসাজির মাধ্যমে কতিপয় বড় হাম ও কড়িয়া (মধ্যসত্ত্বভোগী) লাভৱান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শতশত প্রান্তিক খামারি এবং সাধারণ ভোক্তা।
৮। ডিম ব্যবসায়ী সমিতি নামে যে সব সংগঠন আছে তাদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮-২০ আগস্ট ২০২২ তারিখে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক ডিম ও ব্রয়লার মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী ১২৩টি বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তদারকিকালে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ভোক্তা বিরোধী কার্য করায় বিভিন্ন অপরাধে ১৪১টি প্রতিষ্ঠানকে ১৯,৮০,৫০০/- (উনিশ লক্ষ আশি হাজার পাঁচশত) টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
সুপারিশ:
১। ডিম ও লাইভ চিকিনের বাজার ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয়ের নাম ঠিকানাসহ মুদ্রিত রসিদ (পাকা রসিদ) সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
২। সমিতি হতে মূল্য নির্ধারণের প্রথা বাতিল করতে হবে। ৩। উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ নিলাম পদ্ধতি প্রবর্তন।
৪। নিলাম প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সরকারি সংস্থার (জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা) উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
৫। নিরবিচ্ছিন্ন তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা। ভোক্তা সাধারণকে সচেতন করা এবং প্রতারিত হওয়া মাত্র অভিযোগ জানাতে উৎসাহিত করা
৭। মূল্য বৃদ্ধির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী সংগঠন কর্তৃক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ।
৮। প্যাকেটজাত এবং অর্গানিক ডিমের নামে অতিরিক্ত মূল্যের বিষয়টি পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক দেশব্যাপী বাজার তদারকির ফলে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির রাজার
মূল্য নিম্নমুখী হয়েছে। বাজারে প্রতি ডজন ডিমের ৩০-৩৫ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি দাম কেজিতে ৩৫-৪০ টাকা হ্রাস পেয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply