শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন

বিশ্ব বাজারে ফের কমলো তেলের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২

বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেলের আমদানিকারক চীনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধীরগতি এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারে। চীনের চাহিদা কমে যাওয়ায় সোমবার বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম আবারও কমেছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সোমবার (১৫ আগস্ট) দ্বিতীয় সেশনে বিশ্ব বাজারে দুই দফায় কমেছে তেলের দাম। অন্যদিকে, বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক কোম্পানি সৌদি আরামকোর প্রধান বলেছেন, তেলের উৎপাদন বাড়াতে তার কোম্পানি প্রস্তুত আছে।

বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম প্রতি ব্যারেলে (এক ব্যারেল=১৫৯ লিটার) ৮৯ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ কমে ৯৭.২৬ ডলারে নেমেছে। এছাড়া সোমবার প্রথম সেশনে যুক্তরাষ্ট্রের বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের প্রতি ব্যারেলের দাম ৮২ সেন্ট কমে ৯১.২৭ ডলারে হয়েছে। এর আগে, প্রথম সেশনে এই তেলের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে যায়।

গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধার পর থেকেই মন্দাভাব শুরু হয়েছে জ্বালানি তেলের বাজারে। জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শতাংশ হিসেবে গত ৬ মাসে বিশ্ব বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম কমেছে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ।

চীনের সরকারি তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রুড তেলের আমদানিকারক চীনে গত জুন মাসে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করায় জুলাইয়ে তা কমে যায়। চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অপ্রত্যাশিত ধীরগতির কারণে জুলাই মাসে দেশটিতে দৈনিক তেল পরিশোধনের পরিমাণ ১ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে নেমে গেছে। যা ২০২০ সালের মার্চের পর দেশটিতে দৈনিক সর্বনিম্ন তেল পরিশোধন।

বিশ্বের শীর্ষ ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিসের অর্থনীতিবিদ হেরন লিন বলেছেন, চীনের সরকারি তথ্য-উপাত্তে তেলের রেকর্ড দামের কারণে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ এবং ভোক্তাদের চাহিদা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।

রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সৌদি আরামকোর প্রধান নির্বাহী আমিন নাসের বলেছেন, সৌদি সরকারের কাছ থেকে চাহিদা পেলে সৌদি আরামকো দৈনিক সর্বোচ্চ ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত আছে।

তিনি বলেন, উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার অথবা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে চাহিদা অথবা অনুরোধ পেলে যে কোনো সময় দিনে এক কোটি ২০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদনের জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। চীন করোনাভাইরাস বিধি-নিষেধ শিথিল এবং বিমান পরিবহন পুরোদমে শুরু করায় জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তেলের একটি পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মেক্সিকো উপসাগরের কয়েকটি অফশোরে উৎপাদন ব্যাহত হয়। যে কারণে গত সপ্তাহে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়।

যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মেক্সিকো উপসাগরের ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন শুক্রবার রাতের দিকে মেরামত করায় কিছু উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের স্থগিত হয়ে যাওয়া উৎপাদন পুনরায় শুরু করেছে।

চলতি শীতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল এবং পরিশোধিত জ্বালানি সরবরাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী তেলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। তবে ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাব যদি ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করে সেক্ষেত্রে তেলের সরবরাহ বাড়তে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত হলে ইরানের তেল রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়ে যাবে।

সূত্র: রয়টার্স

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS