অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের একটি চিড়িয়াখানা সংগ্রহে থাকা ১২টি সিংহ নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল ও অগ্রসর প্রদেশ পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরের চিড়িয়াখানা ‘লাহোর সাফারি জু’ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চিড়িয়াখানার উপ পরিচালক তানভির আহমেদ জানজুয়া পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডনকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের সংগ্রহে বর্তমানে ২৯টি সিংহ রয়েছে। তারমধ্যে ১২টিকে আমরা নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী ১১ আগস্ট চিড়িয়াখানা চত্বরে হবে এই নিলাম আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে।’
এই পদক্ষেপ নেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বাজারে প্রতিদিনই মাংসের দাম বাড়ছে। এদের প্রতিদিনের খাদ্য যোগান দেওয়ার মতো বাজেট বর্তমানে আমাদের কাছে নেই।’
জানজুয়া আরও জানান, নিলামে প্রতিটি সিংহের নূনতম দাম দেড় লাখ পাকিস্তানি রুপি ধার্য করা হবে। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আশা করছে, প্রতিটি সিংহ ২ লাখ রুপিরও বেশি দামে বিক্রি হবে।
তবে টাকা থাকলেই যে কেউ নিলামে অংশ নিতে পারবেন— ব্যাপারটি এমন নয়। যারা এ নিলামে অংশ নিতে ইচ্ছুক, তাদেরকে অবশ্যই প্রাদেশিক সরকারের কাছে নিবন্ধন করতে হবে এবং সিংহ কেনার পর তার দেখভাল করা ও যত্ন নেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে— এ বিষয়ক প্রমাণ ও নথি দেখাতে হবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে।
পাকিস্তানে অবশ্য বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ কেনার ঘটনা খুব বিরল নয়। দেশটির ধনী লোকজনদের অনেকেই নিজেদের বাড়িতে এসব প্রাণী রাখেন। এ ব্যাপারটিকে পাকিস্তানে আভিজাত্যের স্মারক হিসেবে দেখা হয়।
তবে চিড়িয়াখানার এই উদ্যোগে আপত্তি জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রাণী সংরক্ষণবাদীরা। আন্তর্জাতিক প্রাণী সংরক্ষণবাদী সংস্থা ডব্লিউডব্লিউএফ পাকিস্তান শাখার কর্মী উজমা খান বার্তাসংস্থা এএফপিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘বিভিন্ন চিড়িয়াখানা নিজেদের মধ্যে প্রাণী অদল-বদল করতে পারে, কিংবা কোনো চিড়িয়াখানাকে অন্য চিড়িয়াখানা নিজেদের প্রাণী দানও করতে পারে, তাতে কোনো সমস্যা নেই।’
‘কিন্তু যখন কোনো চিড়িয়াখানা অন্য কোনো চিড়িয়াখানার পরিবর্তে খোলাবাজারে তাদের প্রাণী বিক্রি করে, তার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বন্যপ্রাণী কেনাবেচার যে ব্যবসা চলছে, তাকে উৎসাহিত করা হয়। এটা প্রাণী সংরক্ষণ নীতির বিরোধী।’
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply