গত ২৩ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের সাবেক শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অনুব্রত ও তার সঙ্গীদের জেরা চলছে। জেরা করা হচ্ছে সস্ত্রীক অভিষেককে। এই পটভূমিকায় দিল্লিতে মমতা-মোদী বৈঠকে বসবেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লি এসে পৌঁছাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটের সময় তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বৈঠক হওয়ার কথা। সাড়ে ছয়টায় মমতা যাবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করতে। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এই প্রথমবার তার সঙ্গে দেখা করবেন মমতা। সময় বের করতে পারলে সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলেও যাবেন। রোববার নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচির মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে মোদীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক। এর আগেও দিল্লি এসে অনেকবারই মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতা। কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা অতীতে বহুবার অভিযোগ করেছেন, মোদী-মমতার রাজনৈতিক সমঝোতা নিয়ে। ব্রিগেডের জনসভা থেকে সিপিএম সারদা নিয়ে মোদী-মমতা সমঝোতার অভিযোগ করেছে।
কিন্তু অন্যবারের তুলনায় এবারের পরিস্থিতি আলাদা। পার্থ-অর্পিতার একের পর এক সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে ইডি। বুধবারও তারা শান্তিনিকেতনে গিয়েছিল এরকমই কিছু বাড়িতে তল্লাশি চালাতে। অর্পিতার বাড়ি থেকে ৫০ কোটি টাকা ও প্রচুর গয়না উদ্ধার হয়েছে। পার্থকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তোলপাড় চলছে। শুধু পার্থই নয়, বুধবার অনুব্রত মন্ডলের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি হয়েছে। অনুব্রতকেও সিবিআই জেরা করেছে, আবার করতে পারে বলে সূত্র জানাচ্ছে। অনুব্রতকে কয়লাকাণ্ড ও গরুপাচারের অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা প্রশ্ন করেছেন বলে সূত্র জানাচ্ছে।
অভিষেক ও তার স্ত্রীকেও নিয়মিত জেরা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মূলত কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়েই তাদের জেরা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী দিল্লিতে বিজেপি-র শীর্ষনেতৃত্বকে অনুরোধ করে এসেছিলেন যে, এখন মোদী-মমতা বৈঠক হলে ভুল বার্তা যাবে। তাই প্রধানমন্ত্রী যেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক না করেন। কিন্তু তাদের সেই অনুরোধ রাখা হয়নি।
পার্থ-অর্পিতার বাড়িতে ইডি-র তল্লাশি ও সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পত্তির খোঁজ পাওয়ার পর তৃণমূল থেকে পার্থকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার মন্ত্রীপদও গেছে। কিন্তু তারপরেও সিপিএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য অভিযোগ করেছেন, যা সামনে এসেছে, তা কিছুই নয়। কালীঘাটের বাড়িতে তল্লাশি না হলে আসল জায়গা বাদ থেকে যাবে। কংগ্রেসও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে।
সূত্র: ডিডাব্লিউ
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply