মানুষের মধ্যে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে অর্গানিক খাদ্যের চাহিদা। পুষ্টির অন্যতম প্রধান উৎস দুধও এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। বিশ্বজুড়ে দ্রুত গতিতে বাড়ছে অর্গানিক দুধের বাজার। আগামী দশ বছরে প্রতি বছর এই বাজারের আকার গড়ে ১০ শতাংশ করে বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্গানিক দুধ কী?
অর্গানিক দুধ হচ্ছে, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে উৎপাদিত দুধ। যে গাভী থেকে এই দুধ উৎপাদন করা হয়, সেই গাভীকে লালন-পালনে অনুসরণ করতে হয় বিশেষ পদ্ধতি বা গাইডলাইন। শুধু লালন-পালন নয়, দোহন করা দুধের প্যাকেজিং ও বিপণনের ক্ষেত্রেও মানতে হয় গাইডলাইনের নানা নির্দেশনা।
অর্গানিক দুধ সংক্রান্ত বিভিন্ন দেশের গাইডলাইনের মধ্যে কিছু ভিন্নতা থাকলেও মৌলিক বিষয়গুলো প্রায় একইরকম।
অর্গানিক দুধ উৎপাদনের জন্য গাভীকে অবশ্যই অর্গানিক খাদ্য দিতে হয়। তাজা ঘাস বা খড় যা-ই খাওয়ানো হোক না কেন, সেগুলোতে কোনো কীটনাশক, ছত্রাকনাশক ইত্যাদি থাকতে পারবে না।
গাভীকে এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। দেওয়া যাবে না এন্টিবায়োটিক বা হরমোন ইঞ্জেকশন।
কোনো কোনো দেশের গাইডলাইন অনুসারে, অর্গানিক দুধ উৎপাদন করতে হলে অবশ্যই গাভীকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে চারণ করাতে হবে। খামারের শেডের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা আটকে রাখা চলবে না।
অর্গানিক দুধের প্যাকেজিংয়ে ব্যবহার করতে হবে ফুড গ্রেড উপকরণ, যাতে কোনো ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া হতে না পারে। আবার বাইরে থেকে ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস দুধে মিশতে না পারে।
নিয়মিত দুধ ও অর্গানিক দুধের পার্থক্য কী?
নিয়মিত দুধ (Regular Milk) ও অর্গানিক দুধের মধ্যে বেশ কিছু দিক থেকে অনেক মিল রয়েছে; আবার কিছু পার্থক্যও রয়েছে। পুষ্টির দিক থেকে এই দুই ধরনের দুধের মধ্যে পার্থক্য খুবই কম। উভয় প্রকার দুধে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ১২ সহ ১৬ ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে।
তবে অর্গানিক দুধে নিয়মিত দুধের চেয়ে ওমেগা ৩ ফ্যাটের পরিমাণ থাকে বেশি।
নিয়মিত দুধে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাত্রায় এন্টিবায়োটিক ও হরমোনের উপস্থিতি থাকে। কিন্তু অর্গানিক দুধ এসব ক্ষতিকর উপাদান থেকে মুক্ত।
অর্গানিক দুধের বাজার
এককভাবে অর্গানিক দুধের বাজারের আকার সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য উপাত্ত তেমন সহজলভ্য নয়। তবে দুধসহ অর্গানিক ডেয়ারি পণ্যের বাজারের নানা পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। এসব পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৯ সালে অর্গানিক ডেয়ারি ফুডের বাজার ছিল ১৯.৬৫ বিলিয়ন ডলার। গতবছর তা বেড়ে ২৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। ২০২৭ সাল নাগাদ এটি বেড়ে ৪২ বিলিয়ন ডলার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply