প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পাওয়া নতুন বাংলাদেশ গড়ার আমাদের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শ্রম সংস্কার কমিশন বাস্তবায়ন হলেই নতুন বাংলাদেশে গড়া সম্ভব হবে। মালিক-শ্রমিক মিলে আমরা নতুন দেশকে গড়ে তুলবো। এটা হবে আজকের নতুন বাংলাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।
বৃহস্পতিবার (১ মে) মহান মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অপূর্ণাঙ্গ থেকে যাবে যদি শ্রমিকদের অবস্থার কোন পরিবর্তন না হয়ে আগের মতোই থেকে যায়। কাজেই এটা আমাদের সবার দায়িত্ব। যারা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছে, আহত হয়ে লড়াই করছেন এবং যারা সমর্থন দিয়েছে। এটা আমাদের দায়িত্ব ও অনেক বড় সুযোগ ও তৈরি হয়েছে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের।
শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সব পক্ষের মতামত নিয়ে শ্রম সংস্কার কমিশন সুপারিশ তৈরি করেছে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে এটা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। সংস্কার আর কিছুর হোক বা না হোক, শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন হলেই নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি রচিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের আকাঙ্খা আমাদের আগে কখনো সৃষ্টি হয়নি। তাই এটা আমাদের সবচেয়ে বড় সুযোগ। শ্রমিকদের জন্য কী করবো তা শ্রম সংস্কার কমিশন আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। সেই সুপারিশ খুবই সুন্দর ও গঠনমূলক। আমাদের দায়িত্ব হলো সুপারিশ অনুযায়ী শ্রমিকদের জন্য তা বাস্তবায়ন করা। কমশিনের রিপোর্ট বাস্তবায়নগুলো করতে পারলেও অনেকদূর এগিয়ে যাব।
লিখিত বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ১ মে শুধু সাধারণ দিবস নয়। এটি শ্রমজীবী মানুষের অনুপ্রেরণার অংশ। তার সাথে যুক্ত হয়েছে আমাদের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান। এবারের ১ মে আমাদের কাছে নতুন বার্তা নিয়ে এলো।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শ্রমিকের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে একটি রোডম্যাপ বাস্তবায়ন ও শ্রমমান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীতকরণে আমরা কাজ করছি। যার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনাও রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনগণের অভ্যুত্থান একটি নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছে। তবে সেই নতুন বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ নেবে না, যদি শ্রমিকদের অবস্থা আগের মতোই থেকে যায়। আজকের স্লোগানটি আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শ্রমিক মালিকের সুসম্পর্কের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক। পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আমরা একটি আত্মনির্ভরশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব বলে বিশ্বাস করি।
শ্রমিকদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হলে মালিক-শ্রমিকের ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। শ্রমিকের সম্ভাবনা বিকাশের মাধ্যমে দেশ গঠনে তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply