যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ আরোপ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সফরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠকের পর লুৎফে সিদ্দিকী মঙ্গলবার রাতে তার ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান।
মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক চার দিনের সফরে মঙ্গলবার ভোরে ঢাকায় আসেন। তাঁর সহকর্মী যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপের বুধবার ভোরে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। বাংলাদেশে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মিয়ানমারে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম প্রতিনিধিদলের এ সফরে বাংলাদেশে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ, রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তা ও মিয়ানমার পরিস্থিতিসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা লুৎফে সিদ্দিকী তার ফেসবুকে আরো লিখেছেন, আজ আমার দপ্তরে উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানাই। তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদের বাণিজ্য এজেন্ডায় দ্রুত ও গঠনমূলক সাড়া দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আগামী সপ্তাহে (ওয়াশিংটন) ডিসিতে অবস্থিত ইউএসটিআর, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমার আরও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচি ঠিক করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশ ও অঞ্চলের পণ্যের ওপর রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ আরোপ করেছিলেন। অনেক দেশের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। পাশাপাশি ন্যূনতম শুল্ক ছিল ১০ শতাংশ। বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা হয়েছিল ৩৭ শতাংশ।
তবে এই শুল্ক কার্যকর হওয়ার দিন ৯ এপ্রিল ট্রাম্প ন্যূনতম ১০ শতাংশ রেখে বাকি শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এর আগে বিভিন্ন দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনা ও মার্কিন পণ্য আমদানি বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে। ট্রাম্প যেসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের রপ্তানি কম ও আমদানি বেশি, সেসব দেশের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করেছিলেন।
নতুন শুল্ক তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ৭ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) জেমিসন গ্রিয়ারের কাছে চিঠি পাঠান। চিঠি দুটি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ওই দিনই হোয়াইট হাউস ও ইউএসটিআরের দপ্তরে পৌঁছে দেয়।
বাংলাদেশের চিঠি দুটি পাঠানোর দুই দিন পর (৯ এপ্রিল) ইউএসটিআরের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে মার্কিন পণ্য আমদানিতে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করা এবং বাণিজ্যঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ কী কী পদক্ষেপ নিতে চায়, তা জানতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply