শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন

প্রতিশ্রুতি-অর্থছাড় কমেছে, বেড়েছে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে। একইসঙ্গে কমেছে অর্থছাড়ও। তবে ঝুঁকির বিষয়- এই সময়ে সরকারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-জানুয়ারি সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থছাড় কমেছে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। ঋণ পরিশোধে বেড়েছে ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ বা প্রায় আড়াই বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ- ইআরডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছে ৩ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৩৯৮ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করেছিল ১ দশমিক ৮৫৬ বিলিয়ন ডলার, যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে ২ দশমিক ৪১৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

একই সময়ে আসল পরিশোধ ১ দশমিক ০৯ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৫৪৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। আর সুদ পরিশোধ ১৬০.৭ মিলিয়ন থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৭৪ মিলিয়ন ডলার।

ইআরডি জানায়, অন্তবর্তীকালীন সরকারের মধ্যমেয়াদি ঋণ কৌশলে বৈদেশিক ঋণ কম নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমেছে। উন্নয়ন সহযোগীরা গত অর্থবছরের চেয়ে বেশি ঋণ দিতে আগ্রহ দেখালেও- এক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার আগ্রহ কম সরকারের। শুধুমাত্র জরুরি বাজেট সহায়তা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সরকার ঋণ নেবে। এর ফলে ঋণ চুক্তিও হচ্ছে ধীরগতিতে। এর প্রভাবে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে।

উল্লেখ্য সরকার গত অর্থবছরে সরকার উন্নয়ন সহযোগীদের আসল পরিশোধ করেছিল ৪ দশমিক ১৬৬ বিলিয়ন ডলার। আর সুদ পরিশোধ করেছিল ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ১০ দশমিক ৭৩৯ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিল।

সরকারি অর্থায়নের প্রকল্পের মতো বিদেশি ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নেও গতি কমেছে নতুন সরকারের সময়ে। অনেক বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পেরও ঠিকাদার চলে গেছে। অনেক প্রকল্পে পরিচালক পরিবর্তন হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাস্তবায়নে। আবার বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন স্থবির হয়ে গেছে বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমেছে। এসব কারণে বাস্তবায়ন কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থছাড় কমেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে বিশ্বব্যাংক। এই সংস্থার কাছ থেকে এসেছে ৯৪৪.৫ মিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা ছিল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি এসেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে। সংস্থাটি ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা ছাড় করে মোট ৭০০ মিলিয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বা ঋণ চুক্তি সই হয়েছে।

এছাড়া জাপানের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে ২৫২.১২ মিলিয়ন ডলার, এশিয়ান ইনফ্রাস্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এর কাছ থেকে এসেছে ১৬০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি।

জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করে এডিবি, যা পরিমাণ ১.০৯ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৬৭.৬৪ মিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করে বিশ্বব্যাংক। এছাড়া জাপান ৬৯৬.৩২, রাশিয়া ৫৩৬.৮৭, চীন ২৬৭.৮১ মিলিয়ন, এবং ভারত ৮০.১৪ মিলিয়ন ডলার ছাড় করে এই সময়ে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS