আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। কোনো কারণে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে নির্বাচন বড়জোর মাসখানেক পেছানো হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।
এই সূত্রগুলো গণমাধ্যমে বলছে, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে কোনো পরিস্থিতিগত কারণে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে ভোট হবে বলে মনে করছেন সরকার-সংশ্লিষ্ট অনেকেই।
কারণ, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজান শুরু হবে। রমজান ও পবিত্র ঈদুল ফিতর মিলিয়ে দেড়-দুই মাস সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না। এরপর কালবৈশাখী ও বর্ষা মৌসুম শুরু হবে। সাধারণত বর্ষায় জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হয় না। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন শীর্ষ একটি দৈনিকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, অক্টোবরের দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। আমি যদি খুব ভুল না করে থাকি তাহলে অক্টোবরের দিকে তফসিল ঘোষণা, ডিসেম্বরে নির্বাচন এবং জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকার গঠন হতে পারে—এমন সংকেত পাচ্ছি।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব। এই নির্বাচনের দিনক্ষণ তারাই ঠিক করে। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখেআওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নির্বাচন কবে হবে—তা মূলত নির্ভর করছে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর। ইসি সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে তারা আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন—এমনটা ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইতিমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চলতি মাসে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ কিছু রাজনৈতিক দল আলাদাভাবে ইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে দলগুলো নির্বাচন প্রশ্নে তাদের অবস্থানও তুলে ধরে। বিএনপি এবং বাম জোট এ বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তারা আগে স্থানীয় নির্বাচন করার বিপক্ষে মত দিয়েছে।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য কোনো সময় বেঁধে দেয়নি। তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াত চায় আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন।
এ ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। তারা একাধিকবার এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বক্তব্য দিয়েছে এবং সংস্কার করেই নির্বাচনের কথা বলেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অল্প সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে, আর আরেকটু বেশি সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply