বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
মিরসরাইয়ে ভারী বৃষ্টির মধ্যে ঝরনায় বেড়াতে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাংলাদেশের দেওয়া সুবিধার সদ্ব্যবহার করতে ভুটানের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে গতি আনতে শিল্প উপদেষ্টা-বিএসইসির বৈঠক চুয়াডাঙ্গা জুড়ে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’: বৈষম্যহীন বাংলাদেশের দাবিতে রাজপথে গর্জে উঠলো জনতার গণস্বর ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং: ২০ হাজার কোটি টাকার আমানতের মাইলফলক! মালিকানা জমি  খাস খতিয়ানে রেকর্ড করার প্রতিবাদে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ দর বৃদ্ধির শীর্ষে রহিম টেক্সটাইল লেনদেনের শীর্ষে ব্র্যাক ব্যাংক আফগানিস্তানে ওষুধ রপ্তানি করবে ইন্দো-বাংলা ফার্মা আজ ডিএসইতে ৬৯০ কোটি টাকা লেনদেন

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করলো জার্মানি-ফ্রান্স

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২৫

ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দখল করতে সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকি ফিরিয়ে না নেওয়ায় নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করেছে জার্মানি ও ফ্রান্স। খবর বিবিসির। 

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, সীমানার অখণ্ডতার নীতি প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তা খুব ছোট বা খুব শক্তিশালী দেশ যাই হোক না কেন।  

অন্যদিকে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-নোয়েল ব্যারো বলেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে কখনই বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সার্বভৌম সীমান্তে আক্রমণ করতে দেবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

এদিকে, গত মঙ্গলবার ট্রাম্প আবারও তার গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছেন, আর্কটিক দ্বীপ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’। 

২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম মেয়াদে গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। এরপর তিনি বারবারই এই ধারণা উত্থাপন করে আসছেন। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মার্কিন মিত্র ডেনমার্ক স্পষ্ট করে জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। আর অঞ্চলটির মালিক মূলত এর বাসিন্দারা। 

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুট এগিদ ডেনমার্কের কাছ থেকে তার দেশকে স্বাধীন করার জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। তবে, তিনিও স্পষ্ট করে বলেছেন যে অঞ্চলটি বিক্রির জন্য নয়। বুধবার তিনি কোপেনহেগেন সফর করেন।

চ্যান্সেলর শলৎজ বলেন, আসন্ন মার্কিন প্রশাসনের বক্তব্যগুলোয় কিছুটা ভুল ধারণা রয়েছে। সীমান্তের অখণ্ডতার নীতি- পূর্ব বা পশ্চিম-যেকোনো দেশের জন্য প্রযোজ্য, বলেন তিনি।

জার্মানি, ফ্রান্স ও ডেনমার্ক মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সদস্য। 

শলৎজ জোর দিয়ে বলেন, ন্যাটো আমাদের প্রতিরক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার এবং আটলান্টিক মহাসাগর উপকূলীয় দেশগুলোর সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু।

এর আগে বুধবার জাঁ-নোয়েল ব্যারো ফ্রান্স ইন্টার রেডিওকে বলেন, আপনি যদি আমাকে প্রশ্ন করেন যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ড আক্রমণ করবে কিনা, তাহলে আমার উত্তর হবে- না। আমরা কি এমন এক যুগে প্রবেশ করেছি যেখানে আবারও শক্তিশালীদের টিকে থাকার নিয়ম দেখা দিচ্ছে? তাহলে এর উত্তর হবে- হ্যাঁ।

তাহলে কি আমাদের নিজেদেরকে ভয় ও উদ্বেগে কাবু হতে দেয়া উচিত, অবশ্যই না। আমাদের জেগে উঠতে হবে এবং নিজেদের শক্তি গড়ে তুলতে হবে, বলেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

জার্মানি ও ফ্রান্স ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউ’র প্রধান দুই সদস্য, যাদের প্রায়ই এই জোটের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে অভিহিত করা হয়।

তবে ইইউ কীভাবে সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে তা অনুমান করা বেশ কঠিন। ইইউ’র নিজস্ব কোনো প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেই এবং এর ২৭টি সদস্য দেশের বেশিরভাগই ন্যাটোর অংশ।

আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেবেন ট্রাম্প। এর দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক স্বাধীন সংবাদ সম্মেলনে তিনি গ্রিনল্যান্ড নিয়ে এই মন্তব্য করেন।

গ্রিনল্যান্ড বা পানামা খাল দখলের জন্য তিনি সামরিক বা অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, না, আমি আপনাকে এই দুটির কোনোটির বিষয়েই আশ্বস্ত করতে পারছি না। কিন্তু আমি এটুকু বলতে পারি যে অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের এগুলো প্রয়োজন। 

স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকে গ্রিনল্যান্ডে মার্কিন রাডার ঘাঁটি রয়েছে। আর ওয়াশিংটনের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। 

ট্রাম্প বলেন, দ্বীপটি চীনা ও রাশিয়ান জাহাজগুলোর অবস্থান চিহ্নিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেগুলো তার মতে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি মুক্ত বিশ্বের সুরক্ষার কথা বলছি।

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন মঙ্গলবার ডেনিশ টেলিভিশনকে বলেন, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা গ্রিনল্যান্ডবাসীর এবং কেবল স্থানীয় জনগণই এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারেন। তবে, তিনি জোর দিয়ে বলেন, ডেনমার্কের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতাও প্রয়োজন।

গ্রিনল্যান্ডের পার্লামেন্ট সদস্য কুনো ফেনকার বিবিসিকে বলেন, তারা ট্রাম্পের কাছ থেকে কিছু ‘জোরালো মন্তব্যের’ জন্য প্রস্তুত ছিলেন, তবে দ্বীপের সার্বভৌমত্ব ও নিজেদের সবকিছু নিজেদেরই নিয়ন্ত্রণের থাকার আলোচনা এসবের ঊর্ধ্বে।

গ্রিনল্যান্ডের শাসক জোটের অংশ সিউমুট পার্টির ফেনকার বলেন, গঠনমূলক সংলাপ এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে পারস্পরিকভাবে লাভজনক অংশীদারিত্বকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ স্বাগত জানাবে।

ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়কেই অন্তর্ভুক্ত করে একটি মুক্ত সহযোগিতার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেননি তিনি। 

যদিও তিনি বলেছেন, এটি কোনো এক রাজনীতিবিদের একক সিদ্ধান্ত নয়। এটি এমন একটি সিদ্ধান্ত যা গ্রিনল্যান্ডের জনগণকে নিতে হবে। 

মাত্র ৫৭ হাজার জনসংখ্যার দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে স্বায়ত্তশাসন রয়েছে, তবে এর অর্থনীতি মূলত কোপেনহেগেন থেকে আসা ভর্তুকির ওপর নির্ভরশীল এবং এটি এখনও ডেনমার্কের অংশ। 

প্রায় ৮০ শতাংশ অঞ্চল তুষারাবৃত হলেও এই দ্বীপে বিরল খনিজ পদার্থের সবচেয়ে বড় মজুদ রয়েছে, যা ব্যাটারি এবং উচ্চ-প্রযুক্তির ডিভাইস তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ড্যানিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের জ্যেষ্ঠ আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক স্টেফেন ক্রেটজ গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী নুক থেকে বিবিসিকে জানান, তিনি যাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাদের বেশিরভাগই ট্রাম্পের সামরিক শক্তি ব্যবহার করে অঞ্চলটি দখল করার হুমকি শুনে ‘স্তম্ভিত’।

যদিও গ্রিনল্যান্ডের বেশিরভাগ মানুষ ভবিষ্যতে স্বাধীনতার আশা করছেন। তিনি বলেছিলেন, সেখানে এটাও ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যে তাদের এমন এক অংশীদারের প্রয়োজন যিনি জনসেবা, প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক ভিত্তি দিতে পারে যেমনটি ডেনমার্ক এখন করেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS