শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩২ অপরাহ্ন

হবিগঞ্জে ১৮ দিনের মধ্যে মোস্তাক হত্যার তদন্ত রিপোর্ট চায় ট্রাইব্যুনাল

লিটন পাঠান
  • আপডেট : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মোস্তাক হত্যার অভিযোগ তদন্তের আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এতে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়। ট্রাইব্যুনালের প্রশাসনিক শাখার সূত্র এ তথ্য দেন। নিহত মোস্তাক আহমেদের ভাই ময়না মিয়া গত ৭ নভেম্বর অভিযোগটি দিয়েছিলেন। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিতুল হক এনাম চৌধুরী গত ১৪ নভেম্বর অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের আদেশ দেন। সূত্রটি জানায় অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিচারের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে। নিহত মোস্তাক আহমেদ সিলেট সদর উপজেলার গৌরীপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন একটি প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক ৩ সংসদ সদস্য, ৩ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ২ মেয়রসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে এ অভিযোগ দেওয়া হয়। অজ্ঞাত আসামী রাখা হয়েছে ৩০০ জন।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ আবু জাহির, আব্দুল মজিদ খান, সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন, হবিগঞ্জ সদর সার্কেলের সাবেক এএসপি খলিলুর রহমান, সদর মডেল থানার সাবেক ওসি অজয় চন্দ্র দেব, সাবেক এমপি মোঃ আবু জাহিরের তৎকালীন দেহরক্ষী মাহবুব আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীর চৌধুরী, সাবেক পৌর মেয়র আতাউর রহমান সেলিম, বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, লাখাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদ, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আকবর হোসেন জিতু, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সামছুল হক, বন্দুকধারী প্রবাসী আওয়ামী লীগ ক্যাডার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, পুরান মুন্সেফী এলাকার আব্দুর রাজ্জাক রাজা মিয়া হবিগঞ্জ 

পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ছালেক মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল আজাদ রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী, ফয়জুর রহমান রবিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মোত্তালিব, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা তজম্মুল হক চৌধুরী, লুৎফুর রহমান তালুকদার, গোপায়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, জালাল আহমেদ, জহিরুল ইসলাম রুহেল, ফরহাদ আহমেদ, নোয়াখালের মোঃ ছালেক মিয়া, মাহমুদাবাদের মোঃ সামছুল হক, জেলা মৎসজীবী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান নবীগঞ্জের আব্দুল হাই। এর আগে গত ২ আগস্ট হবিগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ও ছাত্র আন্দোলনে মোস্তাক আহমেদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে গত ২১ আগস্ট সদর মডেল থানায় মামলা রুজু হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জে শহরের কোর্ট মসজিদের সামনে অবস্থান নেন। পরে তাঁরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। টাউন হল এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহিরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। এ সময় মোস্তাক আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS