সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের মহাখালী অবরোধের কর্মসূচি ঘিরে কলেজটির সামনে বিপুল পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। একইসঙ্গে রাওয়া ক্লাবের সামনে থেকে মহাখালী রেলগেট পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়েছেন সেনাবাহিনীর শতাধিক সদস্য। এ ছাড়া মহাখালী রেলগেট, আমতলীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকাতেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে তিতুমীর কলেজ ছাড়াও মহাখালী রেলগেট, আমতলী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন উপস্থিতি চোখে পড়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মহাখালী অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেজন্য, কলেজটির সামনে ও ভেতরে বিপুল পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির জনসংযোগ শাখার এডিসি ওবায়দুর রহমান বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হন। তারা তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে কমিশন গঠনের দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করলে রাজধানীজুড়ে চরম যানজট সৃষ্টি হয়। কুর্মিটোলা থেকে বানানী পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ি আটকে থাকে। বনানী থেকে তেজগাঁও, তেজগাঁও থেকে বনানী, মহাখালীর আমতলী থেকে জাহাঙ্গীরগেইট এবং মহাখালী থেকে গুলশান পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে দীর্ঘসময়।
সোমবার দুপুরে মহাখালী রেলক্রসিংয়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তারা রেললাইনে অবস্থান নিলে ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনের লোকোমাস্টার ব্রেক কষেন। তবে, ট্রেনটি থামে অবরোধস্থল পার হওয়ার পর।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রেন ছুটে আসার মধ্যে আন্দোলনকারীরা রেল লাইন থেকে দ্রুত সরে যাওয়ায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান। আর এর মধ্যেই কেউ কেউ ট্রেনটিতে ঢিল ছোড়েন। তাতে এক শিশুসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। ফেসবুকে রক্তাক্ত শিশু ও আহত যাত্রীদের ছবি ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে।
অবরোধের কারণে কমলাপুর থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকার দিকে আসা ট্রেনগুলো ট্রেনগুলো বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেন না চলায় তারা দিনভর ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন। ৫ ঘণ্টা বাদে বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা রেল ও সড়ক থেকে সরে গেলে ফের বাস ও ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এর ঘণ্টা দুয়েক পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিতুমীর কলেজের সামনে মহাখালী-গুলশান সড়কে অবস্থান নিয়ে দাবি জানাতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের পর তারা সড়ক ছাড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি পূরণ না হওয়ায় সবধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মহাখালী অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply