সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

৫,০০০ কোটি টাকা তারল্য সুবিধা পেল সংকটে থাকা ৬ ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪

ঋণ জালিয়াতিসহ নানান অনিয়মের কারণে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে তারল্য গ্যারান্টি দিচ্ছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক। এখন পর্যন্ত ৬টি ব্যাংক গত একমাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টি পেয়েছে প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এরমধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটিড পেয়েছে ১,৪৯৫ কোটি টাকা; সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ১,০০০ কোটি টাকা; গ্রোবাল ইসলামী ২৯৫ কোটি টাকা; ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৭৭৫ কোটি টাকা; ইউনিয়ন ব্যাংক ১৫০ কোটি টাকা এবং ন্যাশনাল ব্যাংক পেয়েছে ৮২০ কোটি টাকা।

তারল্য সংকটে থাকা এসব ব্যাংকগুলোকে তারল্য সুবিধা দিয়েছে— সোনালী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক।

ব্যাংকাররা জানান, আন্তঃব্যাংক থেকে এই সহায়তা পাওয়ায় দুর্বল ব্যাংকগুলোর প্রতি গ্রাহকর আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। অনেক গ্রাহকদের উদ্বেগ কেটে যাওয়া এখন আর আগের মত এসব ব্যাংকগুলোতে আমানতের টাকা তুলতে গ্রাহকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে না। যদিও এখনও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী আমানতের টাকা ফেরত দিতে পারছে না অনেক ব্যাংকই।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) চারটি ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টি সুবিধা পেয়েছে ৮৭৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ৬৯৫ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৫০ কোটি টাকা এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ২৫ কোটি টাকা। 

জানা যায়, বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে যেসব ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাদের সংকট কাটাতে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি সাক্ষেপে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে ভালো ১০টি ব্যাংক ঋণ সহায়তা দিতে রাজি হয়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরে সঙ্গে এক বৈঠকে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) তাদের তারল্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেন। 

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ব্যাংকখাতে আওয়ামী লীগের প্রভাবে থাকা অনেক ব্যাংকের পর্ষদ ভাঙা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৮টি ব্যাংকসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙেছে অন্তর্বর্তী সরকার। 

এছাড়া, আগস্ট শেষে দেখা যায়, বেসরকারি খাতে অন্তত ৯টি ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঘাটতি ১৮,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ৭,২৬৯.৬৬ কোটি টাকা— যা সবচেয়ে বেশি; সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ৩,৩৯৪ কোটি টাকা এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি ছিল ২,৩৪২ কোটি টাকা। 

ঘাটতিতে থাকা অন্যান্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে— ইউনিয়ন ব্যাংকের ২,২০৯.১৫ কোটি টাকা; ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ২,২০১.৯৫ কোটি টাকা; বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৩৮০.৯৫ কোটি টাকা এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ঘাটতি ৩৯.৩৯ কোটি টাকা। 

এছাড়াও, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পদ্মা ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ছিল যথাক্রমে ২৩৪.৪৮ কোটি টাকা এবং ৯৫.৪২ কোটি টাকা।
 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS