রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে আরো বড় জাহাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২
  • ৭৪ Time View

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বন্দর চ্যানেলের সক্ষমতা যাচাই নিয়ে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গবেষণা করছে ইংল্যান্ডের এইচ আর ওয়েলিং পোর্ট নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই চট্টগ্রাম বন্দরের ড্রাফট এবং লেংথ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আগামী ২৪ এপ্রিল ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সার্ভে রিপোর্ট উপস্থাপনের পর এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ড্রাফট এবং লেংথ বৃদ্ধি পেলে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে আরো বড় জাহাজ (মাদার ভ্যাসেল)। এর ফলে দেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহণে কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার আরিফুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্নভাবে ড্রেজিংয়ের ফলে বন্দর চ্যানেলের গভীরতা বেড়েছে। তাছাড়া আমরা বিভিন্ন ধরনের শক্তিশালী টাগ সংগ্রহ করেছি। যাতে যে কোনো ধরনের রিস্ক আগের চেয়ে অনেক বেশি কাভারের সক্ষমতা বন্দরের রয়েছে।

ড্রাফট ও লেংথ বাড়ালে শুধু বন্দরই নয়, দেশের সার্বিক ব্যবসা বাণিজ্য লাভবান হবে।’ আগামী ২৪ এপ্রিল সার্ভে রিপোর্ট উপস্থাপনের পর বন্দর কর্তৃপক্ষ ড্রাফট ও লেংথ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে বলে তিনি জানান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে বর্তমানে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট এবং ১৯০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়তে পারে। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে এই ড্রাফট এবং লেংথ বাড়ানো হয়েছিল। এর আগে তুলনামূলকভাবে আরো ছোট জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারত। চট্টগ্রামের শিপিং ব্যবসা এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতরা দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের লেংথ এবং ড্রাফট বাড়ানোর ব্যাপারে দাবি জানিয়ে আসছিল।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ইংল্যান্ডের এইচ আর ওয়েলিং পোর্ট নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে কর্ণফুলী নদী এবং বন্দর চ্যানেলে গবেষণার দায়িত্ব দেয়। আগামী ২৪ এপ্রিল বিদেশি এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাদের সার্ভে রিপোর্ট উপস্থাপন করবে। ইতোমধ্যে তারা মৌখিকভাবে বন্দরের কর্মকর্তাদের জানিয়েছে যে, বন্দর চ্যানেলে সাড়ে ১০ মিটার ড্রাফট এবং ২০০ মিটার লেংথের জাহাজ অনায়াসে ভিড়ানো যাবে।

সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সাড়ে ১০ মিটার না করে ড্রাফট ১০ মিটার করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। তবে বন্দরের ১৮টি জেটিতে একই ড্রাফট থাকবে না। নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল (এনসিটি) এবং চিটাগাং কনটেনার টার্মিনালে (সিসিটি) ১০ মিটার ড্রাফট দেয়া হবে। এছাড়া জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) কয়েকটিতে ড্রাফট বাড়ানো যাবে।

বন্দরের জিসিবির দুই থেকে আট নম্বর জেটিতে বর্তমানে সাড়ে আট মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়ানো যায়। সেখানে ড্রাফট কিছুটা বাড়ানো গেলেও ১০ মিটার পর্যন্ত করা যাবে না। তবে ৯ থেকে ১৩ নম্বর জেটিতে ড্রাফট ১০ মিটার পর্যন্ত করা সম্ভব হবে। জিসিবির ছয়টি জেটিতে কনটেইনার জাহাজ ভিড়ে। সেখানে ১০ মিটার ড্রাফট করা সম্ভব হবে।

এদিকে ২০০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ বন্দরে ভিড়ানো সম্ভব হলে কনটেইনার পরিবহণের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ২০০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজে ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টিইইউএস কনটেইনার নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে। যা বন্দরের কনটেইনার পরিবহণ এবং হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বড় জাহাজে পণ্য পরিবহণ করা সম্ভব হলে পরিবহণ ব্যয় বহুলাংশে কমে আসবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে শিপিং ব্যবসায়ীরা বলেছেন, কনটেনার হ্যান্ডলিংয়ের চাহিদা যে হারে বাড়ছে, তাতে বড় জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে আসা সম্ভব হলে তা দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2024 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS