সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন

১৭ বছরেও পিতা-ভাই হত্যাকান্ডের বিচার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : বুধবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকন উদ্দিন জামান (লক্ষণ) ও ভাই বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ঠিকাদার খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারের হত্যাকান্ডের বিচার দীর্ঘ ১৭ বছরেও না পেয়ে ১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদী অবস্থান ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাংবাদিক খন্দকার মাসুদ উজ জামান।

ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার মালিপাড়া গ্রামের একই পরিবারের পিতা-পুত্র নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এ হত্যাকান্ডের সন্দেহের তীর এখন নিহত খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারের স্ত্রী সুলতানা পারভীনের দিকে। ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর অপ্রত্যাশিত হত্যার শিকার হন খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার। এর আগে ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার খোকসার নিজ বাড়িতে জবাই করে খন্দকার রবিউজ্জামানের পিতা রোকন উদ্দিন জামান লক্ষনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পিতা-পুত্রের হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। খন্দকার রবিউজ্জামানের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তার স্ত্রীর সন্দেহজনক আচরণ, এ হত্যাকাণ্ডকে আরো রহস্যময় করে তুলেছে। এলাকাবাসীর সন্দেহ এ উভয় হত্যাকান্ডের সাথে মরহুম রবিউজ্জামানের স্ত্রী সুলতানা পারভীন সরাসরি জড়িত।

এ হত্যাকান্ডের বিবরণ দিতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরিবারের সদস্যরা ও এর এলাকার লোকেরা জানান, শৈলকুপা থানার মালিপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম রোকন উদ্দিন আমান লক্ষণের মেঝো পুত্র খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন ঠিকাদার রাজনীতিবিদ ছিলেন। ঘটনাক্রমে বিগত ২০০২ সালে একই উপজেলার বড়দা গ্রামের আক্কাস আলীর কন্যা মোছাঃ সুলতানা পারভীনের সঙ্গে পারিবারিক সিদ্ধান্তে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ হয়। বিবাহের এক বছর যেতে না যেতে তাদের পরিবারে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে এই কন্যার বয়স ১৩ বছরে এবং ঔরসজাত পিতার রাখা নাম খন্দকার তেরানা জামান।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এলাকার চরমপন্থী অলিয়ারের সাথে নিহত রবিউজ্জামানের স্ত্রীর দৈহিক সম্পর্ক ছাড়াও নানাবিধ সম্পর্ক ছিল। স্ত্রীর এহেন চরিত্রের কারণে রবিউজ্জামান প্রায় হতাশ ছিলেন। তিনি স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে তার স্ত্রী লোকজন নিয়ে স্বামীর পরিবারে ক্ষমা চেয়ে সংসারে টিকে যান। কিন্তু ছলনাময়ী স্ত্রী এই সুযোগে স্বামী হত্যার সকল নীল নক্সা করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তিনি তার স্বামীকে হত্যা করেই নীল নক্সার সফল বাস্তবায়ন করেন। পথের কাঁটা সরিয়ে দিয়ে নীল নক্সা অনুযায়ী তার পূর্বের প্রেমিক বাদশা কে বিবাহ করেন। মরহুমের পরিবার সন্দেহ করছেন, রবিউজ্জামানের ঔরসজাত কন্যাকে যে কোন সময় হত্যা করা হতে পারে। তাই আইনত রবিউজ্জামানের কন্যাকে তার চাচাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যরা সরকার ও আদালতের প্রতি আহ্বান জানান। মরহুমের পরিবার আশঙ্কা প্রকাশ করছে, গ্রেপ্তার এড়াতে খুনি সুলতানা তার বর্তমান স্বামীর সঙ্গে যে কোন সময় দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। এলাকাবাসীর ধারণা মরহুমের স্ত্রী সুলতানা পারভীনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। বিবাহের পর খন্দকার রবিউজ্জামানের সাথে স্ত্রী সুলতানা পারভীনের দাম্পত্য জীবন নানা কারণে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। এ কারণে পরিবারের অভিভাবক মাতা খন্দকার আঞ্জুমান আরা বেগম ছেলে এবং ছেলের বৌকে পৃথক করে দেন। এরপর একাই বাড়ীতে স্বামী-স্ত্রী পৃথকভাবে সংসার শুরু করেন। এই পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, বিগত ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে সুলতানা পারভীন হঠাৎ চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘তার স্বামী খন্দকার রবিউজ্জামান মারা গেছে। পরে বাড়ির লোকজন সহ প্রতিবেশীরা সুলতানার চিৎকারে জড়ো হয়ে খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারকে মৃত দেখতে পায়।রবিউজ্জামানের লাশ দেখে পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে যায়। তার আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা নির্বাক হয়ে যায়। তার মৃত্যু পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। তখন থেকেই এ মৃত্যু নিয়ে পরিবারসহ এলাকাবাসীর মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। যাইহোক, পরেরদিন ২৮ ডিসেম্বর শৈলকুপা শাহী মসজিদের সামনে জানাযার পর রবিউজ্জামানকে শাহী মসজিদ কবর স্থানে কবরস্থ করা হয়। এরপর বাড়ির লোকজন ফাইলপত্র খুঁজতে গিয়ে নিহত রবিউজ্জামানের করা ২টি জিডির ফটোকপি দেখতে পান এবং এর সূত্র ধরে তার স্ত্রীকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। পরে খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারের লাশ কবর থেকে তুলে ৭০ দিন পর পোস্টমর্টেম করার পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। খন্দকার রবিউজ্জামানের দায়ের করা ঐ সব জিডিতে উল্লেখ ছিল, আমার স্ত্রী যে কোন সময় আমার টাকা পয়সা ও অর্থ সম্পদ আত্মসাতের জন্য যে কোনো সময় আমাকে হত্যা করতে পারে। এসব জিডি নং-৬৮৯, তারিখ: ০৯/০৫/২০০৩ এবং জিডি নং-১০৩৩, তাং- ২৭/০৯/২০০৫। এ ঘটনায় মরহুমের স্বামী সুলতানা পারভীন তার ছোট ভাই মিল্টনের সহযোগীতায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এলাকাবাসী আরো জানান, সুলতানার সাথে একই গ্রামের জনৈক যুবকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল এবং এই কারণে তাদের দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল ধরে।

পারিবারিক সূত্র থেকে আরো জানা যায়, সুলতানা পারভীন একদিন তার শাশুড়ি কে হুমকি দিয়ে বলেছিল, তুমি বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমার ছেলেকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেব। এ সময় সুলতানা পারভীনের এমন হুমকি আমলে নেয়নি রবিউজ্জামানের মাতা এবং পরিবারের অন্যান্যরা। পরিবারের সদস্যরা জানান, মরহুমের স্ত্রী চলে যাবার সময় ৩০ লাখের বেশী টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। উল্লেখ্য, যেদিন রবিউজ্জামানের মৃত্যু হয় সেদিন ওই পরিবারের কেউ বাড়ীতে ছিলেন না। মাতা খন্দকার আঞ্জুমান আরা বেগম অসুস্থতার কারণে ওই সময় ঢাকায় ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

নিহত রবিউজ্জামানের ছোট ভাই খন্দকার মাসুদ উজ জামান জানান, আমার ভাইয়ের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। এটি অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায়, সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রথমে এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিলেও পরে ভাইয়ের রক্ষিত জিডির ফটোকপি দেখে এ মৃত্যুকে অতি সু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই আমরা মনে করছি।’ পরিবারের অভিযোগ শৈলকুপা থানার তৎকালীন এস আই তৌহিদুল ইসলাম বিপুল পরিমাণ উৎকোচের বিনিময়ে এই হত্যা মামলার মিথ্যা রিপোর্ট পেশ করেন। এছাড়াও রবিউজ্জামানের মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই তার স্ত্রী সন্ত্রাসীদের সহযোগীতায় জমির ফসল ও ফলজ বৃক্ষ সহ ৩.৫ একর জমির একটি নার্সারির সমুদয় চারা লুটপাট করে নিয়ে যায়। এসব গাছ এবং চারার মূল্য ২ কোটি টাকারও বেশি হবে বলে মরহুমের পরিবার জানায়। এছাড়াও শৈলকুপা বাজার ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। নিহতের ভাই আরো জানায়, অর্থ ও সম্পক্তির জন্যই ভাবী সুলতানা পারভীন আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তাদের পরিবার এলাকায় একটি সন্ত্রাসী পরিবার হিসেবে পরিচিত এবং লোভীও বটে। সুলতানা পারভীন আমার ভাইয়ের সাথে কারণে-অকারণে প্রায়ই ঝগড়া করতেন। ভাবী ভাইকে পূর্বে বহুবার হুমকি-ধামকি দিয়েছেন, কিন্তু আমরা তা আমলে নেইনি। বুঝতে পারিনি, তিনি হত্যার মধ্য দিয়ে তার প্রতিশোধ নেবেন।

খন্দকার মাসুদ-উজ-জামান আরো বলেন, “রবিউজ্জামানের মৃত্যুর পর লাশের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং আমরা মনে করি, আমার ভাইকে নগদ অর্থ, সম্পত্তির লোভ ও পরকীয়ার কারণেই নির্মম হত্যার শিকার হতে হয়েছে এবং ভাবীই আমার ভাইয়ের প্রকৃত হত্যাকারী। রবিউজ্জামানের স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বরং হত্যাকান্ড বলে মনে করছেন মাসুদ উজ-জামানের পরিবারসহ এলাকাবাসী। তারা এ হত্যাকান্ডের উচ্চতর পুনঃতদন্ত করে খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। মরহুমের পারিবারিক সূত্রে আরো জানা যায়, খুন হওয়া খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার হত্যাকাণ্ডে তারই মায়ের হাট ফাদিলপুর মাতুলালয়ের ২৮ বিঘা সম্পত্তি কারণ হতে পারে। কারণ ইতিপূর্বে আপন নানা মরহুম খন্দকার রওশন আলী আত্মহত্যা করেছিলেন বলে যে ঘটনার প্রকাশ পেয়েছিল, সেই হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্দেহ হয় যে, সেটা আত্মহত্যা ছিল না বরং তাকেও পরিকল্পিতভাবে ফাঁস দিয়ে বুলিয়ে মারা হয়েছিল। যেহেতু আমার নানা আমার মাকে কিছু সম্পত্তি দিয়েছিল। মামলাটি হাইকোর্টে আমলে নিয়ে উচ্চতর বিচার বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

মৃত্যুর আগে খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার ফেনীতে একটা ঠিকাদারী কাজ নিয়েছিল। কিন্তু সেই কাজের টাকার কোন হদিস পাওয়া যায়নি। সেটাও মৃত্যুর একটা কারণ হতে পারে। উল্লেখ্য যে, ফেনীতে জয়নাল হাজারীর পালিত সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তার কাছ থেকে জোরপূর্বক কয়েকটি ব্ল্যাংক চেকের পাতায় সই করিয়ে নেয় । এছাড়াও, ঝিনাইদহের পাগলা কানাই এলাকার কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারকে আটকিয়ে রেখে তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেয়। এলাকার সচেতন মানুষেরা মনে করেন এ সকল বিষয়গুলো পুলিশ বা র্যা ব কর্তৃক সুষ্ঠু তদন্ত হলেই হত্যার প্রকৃত রহস্য বেড়িয়ে আসবে। জানা যায়, রবিউজ্জামান সিপার এলাকায় খুবই মৃদুভাষী এবং সৎ চরিত্রের রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি পরিশ্রমী, ঠিকাদার, ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, মানবাধিকার কর্মী, অন্যায়ের প্রতিবাদী ছিলেন। খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার মেজর জেনারেল মজিদ-উল হকের হাত ধরে জাগো দল থেকে জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে বিএনপিতে যোগদান করেন। এরপরে তিনি এক সময় শৈলকুপা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার মেজর জেনারেল মজিদ উল হক ও মোহাম্মদ উদ্দিন আহম্মেদ ছুনু মাজমাদার গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন। অন্যদিকে শৈলকুপার সাবেক এমপি আব্দুল ওহাব তাদের পাল্টা গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন। তখন থেকেই খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার ও আব্দুল ওহাব এর মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। খন্দকার রবি উজ জামান সিপার ছিলেন জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র একনিষ্ঠ নেতা। তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। এ ছাড়াও তিনি ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম মোহাম্মদ উদ্দিন আহমেদ ছুনু মাজমাদারের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন।

তিনি সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। বিএনপি থেকে ঝিনাইদহ-১ শৈলকূপা আসনের এমপি নমিনেশন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে না দিয়ে একজন অরাজনৈতিক লোক আব্দুল ওহাব কে নমিনেশন দেয়া হয়। সে কোন দিনও বিএনপির লোক ছিলনা। অথচ খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার ও ছুনু মাজমাদার সাহেবের হাতে গড়া সংগঠন। উল্লেখ্য যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একবার ঝিনাইদহে এক জনসভায় গিয়ে বিএনপির সাবেক এমপি আব্দুল ওহাব, মশিউর রহমান ও বেলটু কে তার নিজের সন্তান বলে তিনজনকে জনসভায় পরিচয় করিয়ে দেন এবং তার পর থেকেই ঝিনাইদহ জেলায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে জাগদল থেকে বিএনপি করতেন তাদের উপর স্টীম রোলার ও মিথ্যা মামলা ও ডিটেনশন পুলিশ দিয়ে হয়রানি শুরু করে। এমনকি আমাদেরকে ঘরে থাকতেই দেয়নি ওহাবের আমলে পুলিশ দিয়ে তাড়িয়ে বেড়াত। ওহাব আমল টিকে জনগণ কর্তৃক বিএনপি-জাসদ ও সন্ত্রাসী আমল বলা হত।

এছাড়াও, খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার ও তার ছোট ভাই খন্দকার মাসুদ উজ-জামান এলজিইডির একটি ঠিকাদারি কাজে টেন্ডার ড্রপ করতে গেলে সন্ত্রাসী নামধারী ওহাবের ভাতিজা সাহেব আলী ও সাজ্জাদ ও ফিরোজের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাদের টেন্ডার ড্রপ করতে বাধা দেয়। এ সময় তারা ইউএনও’র কক্ষে তাদের ওপর আক্রমণ করে। পরে তাদের অপহরণ করে শৈলকুপা পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে খবর পেয়ে শৈলকুপা থানার পুলিশ গিয়ে তাদের দু’ভাইকে উদ্ধার করেন। পরে শৈলকুপা পৌরসভার সকল মসজিদে তাদের দুই ভাইকে জীবিত ফিরে পাওয়ায় পথিতযশা বিশিষ্ট রাজনীতি চিন্তাবিদ সাবেক মন্ত্রী মেজর জেনারেল মজিদ উল হক ও মোহাম্মদ উদ্দিন আহম্মেদ ছুনু মাজমাদার গ্রুপের পক্ষ থেকে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওহাব গংয়ের ক্রমাগত হুমকির কারণে মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ও সাংবাদিক পরিবারটি এখন ঘর-বাড়ি ছাড়া।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির কৃষি, সেচ ও পানি সম্পদ মন্ত্রী মেজর জেনারেল মজিদ উল-হককে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য শৈলকুপায় আমন্ত্রণ জানান মরহুম মোহাম্মদ উদ্দিন আহমেদ ছুনু মজুমদার ও রবিউজ্জামান সিপারের নেতৃত্বাধীন অংশ। এ জন্য এলাকায় বেশ কয়েকটি তোরণ নির্মাণ করা হয়। পরে রাতের আধারে সন্ত্রাসী দিয়ে ওই তোরণ গুলো ভেঙ্গে দেন তৎকালীন এমপি আব্দুল ওহাবের সন্ত্রাসী বাহিনী। বিষয়টি নিয়ে ওই সময় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তখন থেকেই দলে গ্রুপিংয়ের বিষয়টি সামনে চলে আসে। সাবেক এমপি আব্দুল ওহাব ও সাবেক মেয়র খলিলুর রহমান ওহাব বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারসহ তার অনুসারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে যা অবর্ননিয়। বর্তমানে মেজর জেনারেল মজিদ উল হক, মোহাম্মদ উদ্দিন আহমেদ ছুনু মাজমাদার ও খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার বিএনপির এই তিন নেতা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এলাকায় তাদের গ্রুপের রেশ রয়ে গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সুলতানা পারভীনের সাথে শৈলকুপার জামশেদপুরের মোহাম্মদ বাসীর ছেলে সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী নেতা ওলিয়ারের সাথে তার গোপন সম্পর্ক ছিল। মরহুমের পরিবার জানায়, একই এলাকার সন্ত্রাসী এলিট ও তার দলবল নিয়ে আমাদের জমাজমি জোর করে দখলে রেখেছে এবং পরিবারের অন্যান্যদেরকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তারা যে কোন সময় পরিবারের যে কাউকে হত্যা করতে পারে। সন্ত্রাসী খন্দকার এলিটের এক ভাই পুলিশের সিআইডিতে কর্মরত থাকায় সন্ত্রাসী খন্দকার এলিট বলে বেড়াচ্ছেন, ‘এমপি-মন্ত্রী, চেয়ারম্যান-মেম্বার, এসপি-ডিসি সবাই আমার হাতের মুঠোয়, তোরা আমাদের কিছুই করতে পারবি না।” সন্ত্রাসী খন্দকার এলিট স্থানীয় পাইলট কসাই, কোহিত কসাই, নাবলা কসাই, শাহিন কসাই, কায়েম কসাই, সাবুদ্দিন কসাই, সেকেন কসাই, খাইরুল কসাই, দরবেশ কসাই, মহিদ মাষ্টার, বাকি বিল্লাহ, আজাদ, বিপ্লব, হান্নান কসাই, নুরু মিস্ত্রী, মজনু, রাহেন, মনি মিয়া, শহিদুল ড্রাইভার, ফরিদ দর্জি, বাদশা দর্জি, ইয়ার উদ্দিন খেরু, মুন্টু, ইছাহাক কশাই, হাকিম, সালামত, বুলবুল, লিটন কসাই, উজ্জ্বল, মজিদ মহুরী, পটল, ইলিয়াস, সারোয়ার, দিদার, আবু সায়েদ, নেকবর গং, কোরবান, সাবেক পৌর মেয়র খলিলুর রহমান, তৎকালীন শৈলকুপা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক্সইএন হোসেন জাকির, ভোলা কসাই, মতিন জেলে, চুন্টি কসাই, দুর্লাভ কসাই, এটিএম বাবু, বিলু, মোঃ শহিদুল, সাবেক ছাত্রনেতা সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, আনিস, বাবলু মাষ্টার, ফজলু মাষ্টার, মিল্টন কসাই, মোঃ বিল্লাল (মেস), মোঃ রফিক (গার্ড), লাকু সাহেব আলী, ছাত্রনেতা নামধারী সন্ত্রাসী আকুল, ফিরোজ, বাকি বিল্লাহ, পান্না মীর, গোলাম মোস্তফা, সাবেক চেয়ারম্যান টুলু, উকিল মোল্যা, সিদ্দিক মোল্যা, তোবারেক মোল্যা, এমদাদ ডাক্তার, আনসার শেখ, শফি, ছমির, মাসুদ ওরফে মাহি, জাবের ওরফে কোবাদ পুলিশ সিআইডি, এক্সেল ডেভেলপারের মো. ওসমান আলী (উল্লেখ্য ওসমান আলী গং ঢাকায় তাদের অফিসে ডেকে নিয়ে খন্দকার মাসুদের কাছ থেকে ৩টি সাদা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেন, খন্দকার মাসুদ সেই স্ট্যাম্প ফেরত চান), চাউল ব্যবসায়ী টিক্কা (উল্লেখ্য টিক্কা খন্দকার মাসুদের কাছ থেকে একটি দেড় ভরি ওজনের সোনার চেইন ছিনিয়ে নেন, খন্দকার মাসুদ সেই চেইন ফেরত চান), নির্বাচন কমিশনে চাকরিরত বিপ্লব, বেল্লাল কেশিয়ার, তৈয়বুর রহমান খান ও আজাদ, ৮ জন মহিলাসহ আরো অনেকের খুনের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। এদের দ্বারা এমন কোন জঘন্য কাজ নেই যা তাদের দ্বারা অসম্ভব। মরহুমের খুনী এবং তার সহযোগীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন খন্দকার মাসুদ উজ জামান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর »

Advertisement

Ads

Address

© 2025 - Economic News24. All Rights Reserved.

Design & Developed By: ECONOMIC NEWS