নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ১৬জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। শনিবার দুপুর দুইটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এ আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বিএফইউজের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ বলেন, কয়টি সংবাদমাধ্যম কালো দিবস পালন করেছে? ইত্তেফাকসহ যারা এই দিবসে ভিক্টিম ছিলো তারা কেনো এ দিবসটি পালন করেন না? তারা এই দিবসটি পালন তো দূরের কথা এই দিবস যারা পালন করে তাদের নিউজও ছাপে না। তিনি বলেন, ১৫আগষ্ট ইত্তেফাকে ছাপা হয়েছিলো দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি উচ্ছেদ। খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহন। সেদিন ওই নিউজে লেখা হয়েছিলো জাতীর বৃহত্তর স্বার্থে শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতাচ্যুত করে খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সরকার গঠন। সেদিন শেখ মুজিবুর রহমানের স্ব-পরিবারে হত্যার কথা কথা লেখা হয়নি। কিন্তু আজ তারা ১৫আগষ্ট কান্নার রোল ফেল কিন্তু ১৬জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস পালন করে না। আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ১৬জুন শুধু সংবাদপত্রের জন্য না, এদেশের মানুষের জন্য কালো দিবস। ৭২-৭৫এর সময় গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হয়েছিলো। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর মুক্ত গণমাধ্যমের পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি মাত্র ১টাকার বিনিময়ে আজকের এই জাতীয় প্রেসক্লাবের জমিটি দিয়ে গিয়েছিলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, অতীতে ঐক্যবদ্ধভাবে সংবাদ পত্রের কালো দিবস পালন করা হতো। কিন্তু সাংবাদিকদের সুবিধাভোগী একটি অংশ এখন আর এই দিবস পালন করে না। কারণ এই দিবস পালন করলে তৎকালিন সরকারের সমালোচনা করতে হবে। তাই এখন যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চায় তারাই শুধু এই দিবসটি পালন করে।
বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ বলেন, প্রেসক্লাবের জমি দিয়েছেন জিয়াউর রহমান, এই যে বিল্ডিং এটাও দিয়ে গেছেন বেগম খালেদা জিয়া। অর্থাৎ সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য যা যা করা দরকার তা করেছে বিএনপি। তিনি বলেন, বিএনপি দূর্নীতিবাজ দল না। দূর্নীতির ট্রেন্ট চালু করেছে আওয়ামীলীগ। আজ ১৫বছর বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। তাদের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারে না। কেউ কেউ নির্যাতনের শিকার হয়ে অঙ্গহারা।
বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, বাকশালের সময় শুধু সংবাদপত্র না, গোটা জাতির উপর অন্ধকার নেমে এসেছিলো। সেই সময় মানুষের কথা বলার স্বাধীনতাটুকো ছিলো না। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুঁড়ির সাথে তুলনা করা হয়েছিলো। সেই অন্ধকার থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মুক্ত করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আজকে আবার অঘোষিত বাকশাল গঠন করে রাষ্ট্র শাসন পরিচালনা করা হচ্ছে। বিচারবিভাগকে সম্পূর্ণরূপে দলীয়করণ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার একটিই উপায়, সেটা হলো রাজপথে আন্দোলন। আমাদের মনে রাখতে হবে কোনো ফ্যাসিস্ট আন্দোলন ছাড়া বিতাড়িত হয় না।
ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, বাকশালের সময় সকল পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে গণতন্ত্রকে কবরে পাঠানো হয়েছিলো। ঠিক এখন আবার সেই আওয়ামীলীগ গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরেছে। তারা এবার সংবাদমাধ্যম সেই হারে বন্ধ না করলেও তা নিয়ন্ত্রণ করছে। মানে পত্রিকা আছে কিন্তু স্বাধীনভাবে লেখার অধিকার নাই।
বিএফইউজের সভাপতি এম আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাধারন সম্পাদক খুরশিদ আলমের সঞ্চালনায় এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএফইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহ সভাপতি রফিক মোহাম্মদ, রাশেদুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক কায়কোবাদ মিলন, সাবেক সহ সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, ডিআরইউ এর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম, কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান, প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম, জনকল্যাণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন রাজ্জাক, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক রফিক লিটন, দফতর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, সদস্য এম মোশাররফ হোসেন, তালুকদার রুমি, ফখরুল ইসলাম, বিএফইউজের সাবেক সহকারী মহাসচিব আহমেদ মতিউর রহমান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো: শহিদুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর, কার্যনির্বাহী সদস্য এইচ এম আল আমিন প্রমুখ।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply