মামুন মোল্যা, নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলের কালিয়ায় ব্রীজ নির্মাণ শ্রমিক রানা নিখোঁজের ঘটনায় অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার মাধব, সাব ঠিকাদার ও জামাত নেতা পরিচয়দানকারী সেলিম ও ঘর মালিক পারভেজ এর বিরুদ্ধে। এটাকে চুরি করে পালিয়ে যাওয়া আখ্যা দিয়ে শ্রমিক সরদার লাল মিয়ার বাসায় লুটপাট চালিয়ে ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ১০/১২ ম্যাশিনসহ যাবতীয় মালামাল লুট করে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এ ছাড়া লুট করা মালামাল ফেরত পেতে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা দাবি করেছে তারা।
গত মাসে শ্রমিক সরদার লাল মিয়া বকেয়া ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা না দেওয়ার অভিযোগ আনেন ঢাকার কংক্রিট এন্ড স্টীল টেকনোলজি কোম্পানি ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ২৫ অক্টোবর ” কালিয়ায় শ্রমিকের টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ ব্রীজ নির্মাণ কোম্পানির বিরুদ্ধে” শিরোনামে বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্র- পত্রিকায় নিউজ হয়।
সম্প্রতি অপর শ্রমিক মারফত জানা যায়, সাব ঠিকাদার জামাত নেতা সেলিমের লোক কোম্পানির রড ও তেল চুরি করলে কোম্পানি সেলিমের নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। ঠিকাদার সেলিম মোবাইলে এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
শ্রমিক সরদার লাল মিয়ার স্ত্রী জানান, বকেয়া টাকা ও চুরির ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ঘর মালিক পারভেজকে সাথে নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মাধব ও সাব ঠিকাদার সেলিম আমাদের কাজের ছেলে (শ্রমিক) রানাকে গুম করেছে। ২৯ অক্টোবর সকাল ১০ টায় সিসি টিভি ফুটেজে ঘর মালিকের বরফকল সংলগ্ন ঘরে রানাকে ঢুকতে দেখা যায়। কিন্তু বের হওয়ার ফুটেজ পাওয়া যায় নি। এর পর থেকে রানার ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। রানাকে তারা কি করেছে এ নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা হচ্ছে।
প্রায় এক বছর হলো আমরা এ সাইডে এসেছি। অথচ তিন বছর আগে ঘর মালিকের হারিয়ে যাওয়া টিউবওয়েল ও পাইপ রানা চুরি করে পালিয়েছে এমন মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাদের ঘর লুট করেছে ইঞ্জিনিয়ার মাধব, সাব ঠিকাদার সেলিম ও ঘর মালিক পারভেজসহ তার অনুসারীরা।
তিনি আরো বলেন, এখানে তারা কাজে এসেছে প্রায় এক বছর হলো। অথচ ঘর মালিকের ৩বছর আগে চুরি হওয়া টিউবওয়েল ও পাইপ হারানোর দ্বায় আমাদের ওপর চাপিয়ে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা দাবি করছে।
তাদের অপকর্ম সাংবাদিকরা জেনে যাওয়ায় আমাদের সন্দেহ করে ইঞ্জিনিয়ার মাধব ও সাব ঠিকাদার সেলিম আমাদের বকেয়া টাকা না দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় ঘর মালিকের সাথে আতাত করে আমাদের হয়রানি করছে।
অপরদিকে শ্রমিক সরদার লাল মিয়া রানা নিখোঁজের বিষয়ে স্থায়ী চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি বিষয়টি দেখবেন বললেও কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার মাধব ও সাব ঠিকাদার জামাত নেতা সেলিম কোম্পানির বিষয় নিজেরাই সমাধান করবেন বলে চেয়ারম্যানের কাছে যেতে রাজি হয়নি। রড ও তেল চুরির অপবাদ ঢাকতে এবং আমার বকেয়া টাকা না দিয়ে তারা আমাকে তাড়ানোর জন্য নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে। জানিনা আমার কাজের ছেলেটা বেঁচে আছে কিনা? আমি এদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে সাব ঠিকাদার ও জামায়াত নেতা সেলিমের বক্তব্য আনতে গেলে সাংবাদিকদের সাথে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন এবং কোন বক্তব্য না দিয়ে যা পারেন তাই করেন বলে সটকে পড়েন।
ঘর মালিক পারভেজকে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোনটি রিসিভ না করে বন্ধ করে দেন।
তবে কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার মাধব ঠিকাদার জামায়েত নেতার রড চুরি জরিমানার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই ঠিকাদার নিজে বাঁচতে তার পায়ে পড়েছিলেন। পরবর্তীতে শ্রমিক রানা নিখোঁজের বিষয়ে ফোন দিলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
Design & Developed By: ECONOMIC NEWS
Leave a Reply